বিপুল ভোটে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট মুরসির সংক্ষিপ্ত জীবনী ঃ
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৭ জুলাই, ২০১৩, ১০:২৫:৩৭ রাত
মুহাম্মাদ মুরসি উত্তর মিশরের শারক্বিয়া প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ও সন্মান ডিগ্রী লাভ করেন। উচ্চ শিক্ষার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, নর্থরিজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে মুরসি জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে মিশরে চলে আসেন।[৪]
মুরসি ২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এ সময়ে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিত্বে পরিণত হন।২০১২সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
-মুরসি ছিলেন একজন কুরআনের হাফেজ।
- মুরসি কোন কথা রাখতে না পারলেও একটা কথা ঠিকই রেখেছেন,,,তিনি শপথ নেয়ার পর বলেছিলেন,,,, আমি ভাড়া বাসা থেকে সরকারি ভবনে এসেছি, আমার পকেটে কোন পয়সা নাই,,,, আমি যখন চলে যাব তোমরা তখন আমাকে পরীক্ষা করে দেখবে এর চেয়ে বেশি কিছু আমার কাছে পাও কি না...??? যদি পাও তবে ভেব আমি খেয়ানত করেছি....
- শপথ নেবার পরেও নিজের ভাড়া বাসা থেকে অফিস করতে চেয়েছিলেন,,, কিন্তু সরকারি প্রটোকল নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে সেখানে থাকতে দেয় নি।
- দেশের অর্থনিতি দুর্বল থাকায় দেশের টাকা বাঁচাতে তিনি ৫টি দেশ সফর করেন মাত্র ৩৬ ঘন্টায়। তারমধ্যে আবার চীন ও ছিল।
- তিনি যেখানেই যেতেন নিজে নামাজের ইমামতি করতেন। গত রমজান মাসে তিনি নিজে তারাবিহ পড়িয়েছিলেন।
- তিনি অর্থনৈতিক সংকটের কারনে নিজের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি গাড়ির কয়েকটা বিক্রি করে দেয়ার প্রস্তাব করেছিলেন।
- মুবারকের কিংবা তার আগের সরকারদের আমলেও সরকারি সকল অফিস আদালতে সরকার প্রধানের ছবি ঝুলানো বাধ্যতামুলক ছিল, কিন্তু সে কোথাও নিজের ছবি ঝুলান নাই,, বরং সকলকে নিষেধ করে দিয়েছিলেন।
- শপথ নেয়ার পর বিভিন্ন সংগঠন তাকে শুভেচ্ছা জানাতে ফুল নিয়ে আসত তাই তিনি শুভেচ্ছা গ্রহণ বাতিল করে দিয়েছিলেন।
সমলোচিত পদক্ষেপঃ
মুরসির সময় ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলা প্রায় বন্ধ ছিল।ইসরাইল যতবার গাজায় হামলা করতে চেয়েছে মুরসি সরকার প্রত্যেকবার আলোচনার মাধ্যমে তা বন্ধ করে দিয়েছে।
এই সময় গাজার উপর ইসরাইলি অবরোধ কার্যত অচল ছিল।কারণ মিশর তার রাফা ক্রসিং খুলে দিয়েছিল,যার ফলে গাজায় কাউকে না খেয়ে মারা যেতে হয়নি।
মুরসির ব্রাদারহুডকে সংগঠিত করতে চেয়েছিল।যা আরব দেশগুলোর জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ায়।কারণ আরবের রাজারা তাদের ক্ষমতার জন্য ব্রাদারহুডকেই সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে।
মুরসি ইরানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চেয়েছে যা আমেরিকার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ায়।
মোবারক আমলের সেনা অফিসারদেরকে রাষ্ট্রের গুরত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া & বিচারের মুখোমুখি করতে চেষ্টা করায় সেনাবাহিনী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
সর্বোপরী ইসলামী মিশর প্রতিষ্ঠার চেষ্টা & ইসলামপন্থী সংবিধান প্রনয়ণ উদারপন্থীদের ক্ষেপিয়ে তোলে।
তার অপরাধ তিনি চেয়েছিলেন মিশর কে একটি স্বয়ংসম্পূর্ন ইসলামী রাষ্ট্রে পরিনত করতে,তিনি চেয়েছিলে ইসলামী বিপ্লবের অমৃত সুবাস মাকসুদে মান্জিল পর্যন্ত পৌছে দিতে,তিনি চেয়েছিলে মিশরীয়দের একটি সুন্দর সমাজ উপহার দিতে,যেখানে থাকবেনা কোন যুলুম নির্যাতন,থাকবেনা কারো প্রভাব ও ধাপটের সয়্লাব,থাকবেনা কোন হিংসা,বিদ্ধেষ, কুন,রাহাজানি, ছিনতাই,তথা ইসলাম বিদ্ধেষী কোন অপকর্ম।সর্বোপরি,ইসলাম,দেশ,জাতি,ও ইসলামী বিপ্লবের স্বার্থে সার্বিক দিক দিয়ে মিশর কে একটি স্বয়ংসম্পূর্ন রাষ্ট্রে পরিনত করাই ছিল মুরসির প্রধান লক্ষ।
এইসব অপরাধের জন্য মুরসিকে এখন বন্দী জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।
তবে,
আশার কথা হচ্ছে, তার মাধ্যমেই তো আরব বসন্তের মুক্তির সেই সোনালী সূর্য উদয় হয়েছিল।তিনি তো সাইয়েদ কুতুব,হাসানুল বান্নার মত শত নির্যাতিত সিপাহ সালারগনের উত্তর সূরী।ইনশাআল্লাহ, তার মাদ্ধমেই আবার মিশরের মাটিতে স্বয়ং সম্পূর্ন ইসলামী বিপ্লব আসবেই আসবে…
বিষয়: বিবিধ
১৫৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন