যুগে যুগে ঈমানের দাবী ছিল পরীক্ষা দিয়ে মান উন্নয়ন করা
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০১ জুন, ২০১৩, ১১:৩৬:২৮ সকাল
আমার ভাইয়ের কলেজ জীবনের সহপাঠি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্যার, একবার আমার যোথ সংসারের বাসায় বেড়াতে আসলে, কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার উপযোগী রেজাল্ট করেছি। কিন্তু সাথে বললেন, পরীক্ষা হয় অনেক কঠিন, সেখানে টিকতে গেলে অনেক খাটতে হয়।পরীক্ষার ভয়ে নিরাশ হলাম না, কোন ভয়ও লাগলো না আমার। বরং ভালো ফলাফলের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম ।
ইতিহাস বিভাগের কেরানি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন কোচিং কয় জায়গায় করেছি? আমি এমন নাম বা কথা ওনার কাছে ছাড়া এর আগে আর শুনি নাই ।কারন কলেজ লাইফে একটা দিন ক্লাসও চোখে দেখিনি। আমার কথায় নিরাশ হয়ে কেরানি বললেন খামাখা এত টাকার ফরম কিনে ফেললেন? এখন গিয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এর সামনে থেকে কয়টা গাইড বই কিনে বাকি একমাস ভালোভাবে পড়া শুনা করেন। রেজিস্ট্রার বিল্ডিং! ওহ আল্লাহ এটা আবার কোথায় কোন দেশের নাম । রেজিস্ট্রার বিল্ডিং খুজে বের করে গাইড বই গুলা দেখে কেনার সাহস পেলাম কারন এক লাইনের প্রশ্ন আবার এক কথায় উত্তর। আলহামদুলিল্লাহ সেখানে আমি ভর্তি পরিক্ষার মেধাতালিকায় সেকেন্ড হয়ে কেরানিকে বলেছি, হোসেন ভাই কাউকে কখনও পরীক্ষার ভয় লাগাবেন না চেষ্টার ফল বিফল হয় না।
পরীক্ষা কি ?
আল্লাহর বানীঃ“লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না?অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি ।আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক।(সুরা আনকাবুত ২-৩)
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্রকেই শিক্ষকরা মেধাবী বলে মনে করেন। কারণ ক্লাসে সব ছাত্রই কিছু না কিছু পারে। তবে সবাই তো আর সমান মেধার হয়না। কেও মেধা তালিকায় উপরে থাকেন, কেও থাকেন নিচে। আর ছোট বড় বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে স্যারেরা মেধার তালিকা তৈরী করেন।ভাল ছাত্র ও মেধাবীদের আলাদা করেন ।আর যিনি গোটা বিশ্ব-জাহানের ওপর রাজকীয় ক্ষমতার অধিকারী তিনি তার প্রেমে পাগল ও তারই সন্তোষ্টি অর্জনে ব্যাকুল বান্দাদের কে পরখ করে দেখবেন না, কে আসলেই কে মুমিন বা মুত্তাকিন আর মুহসিনিন ? তিনি যুগে যুগে এই ভাবে পরীক্ষা করেছেন নবী রাসুল (আ) তথা ভালো লোকদের। আর আমাদের সবাইকেও ঈমানদার হিসাবে এই পরীক্ষা দিতে হবে। কারন আমাদের হায়াত মউত দিয়ে আল্লাহ পরীক্ষা নেবেন বলে কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন।
পরীক্ষার কত প্রকার ?
“অতি মহানও শ্রেষ্ঠ তিনি যাঁর হাতে রয়েছে সমগ্র বিশ্ব-জাহানকর্তৃত্ব তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতা রাখেন৷কাজের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য”৷ ( মূলক-২)
হযরত আবু হুরাইয়া রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন ,রাসুল সাঃ বলেছেন,দুনিয়াটা হল ঈমান্দারগনের জন্য কারাগার এবং কাফেরদের জন্য বেহেস্ত।(মুসলিম শরিফ)
আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষের জীবন ও মৃত্যুর এ ধারাবাহিকতা চালু করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কোন মানুষটির কাজ বেশী ভাল তা পরখ করে দেখার জন্য। যেমন প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ার পর এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি ।দশ বছর ছাত্র জীবন কি ভাবে কাটিয়েছি তা সনদ পত্র দেখে যে কেউ বলে দিতে পারেন।
সেই অনুসারে বিচার করলে পরীক্ষা দুই প্রকারঃ
(ক)ক্যারিয়ার অর্জনের পরীক্ষাঃ দুনিয়ার ক্যারিয়ার অর্জনের জন্য শিশু শ্রেনী থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার মাধ্যমের মেধা তালিকায় উত্তির্ণ হতে হয়।
(খ)ইলেম অর্জন ও তা বাস্তবায়নের পরীক্ষাঃ আখেরাত সফলতা অর্জনের জন্য এলেমী ঈমানী আমলী কতটুকু যোগ্যতা অর্জন করা হয়েছে তাও আল্লাহ পরীক্ষার মাধ্যমে দেখে তাকে চুড়ান্ত ফলাফল হিসাবে পরকালীন অনন্ত জীবনে পুরস্কার হিসাবে জান্নাত আর অকৃতকার্য বান্দা হিসাবে জাহান্নাম দেওয়া হয়।
পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন কি?
“আমি তাদেরকে পৃথিবীতে খন্ড বিখন্ড করে বহু সংখ্যক জাতিতে বিভক্ত করে দিয়েছি৷ তাদের মধ্যে কিছু লোক ছিল সৎ এবং কিছু লোক অন্য রকম৷ আর আমি ভাল ও খারাপ অবস্থায় নিক্ষেপ করার মাধ্যমে তাদেরকে পরীক্ষা করতে থাকি, হয়তো তারা ফিরে আসবে”৷ সুরা আরাফঃ ১৬৮
“আসলে পৃথিবীতে এ যাকিছু সাজ সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভালো কাজ করে ৷ সবশেষে এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো” ৷ সুরা কাহাফঃ ৭-৮
এই দুই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারছি:
১। মৃত্যু এবং জীবন তাঁরই দেয়া। আর কেউ জীবনও দান করতে পারে না, মৃত্যুও না।এর দ্বারা যাচাই করে দেখবেন কুরআন জানারও মানার ক্ষেত্রে কে কত বেশি অগ্রসর ছিল।
২। মানুষ একটি সৃষ্টি, তাকে ভাল এবং মন্দ উভয় প্রকার কাজ করার শক্তি দেয়া হয়েছে। তার জীবন বা মৃত্যু কোনটিই উদ্দেশ্যহীন নয়, সৃষ্টা তাকে এখানে সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার জন্য। জীবন তার জন্য পরীক্ষার সময় বা অবকাশ মাত্র । মৃত্যুর অর্থ হলো, তার পরীক্ষার সময় ফুরিয়ে গেছে।
৩। এ পরীক্ষার জন্য স্রষ্টা সবাইকে কাজের সুযোগ দিয়েছেন। আমরা এই সামান্য সময় টুকু কাজে লাগাতে পারলেই ভাল ফলাফলের আশা করতে পারব ইনশাআল্লাহ।
৪। ভাল এবং খারাপ কাজের মান প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টিকর্তাই ফায়সালা করবেন।কাজের ভাল -মন্দ বিচার করার মানদণ্ড নির্ধারণ করা পরীক্ষার্থীর কাজ নয়, বরং পরীক্ষকের কাজ। তাই যারাই পরীক্ষায় সফল হতে চাইবে, তাদেরকে জানতে হবে পরীক্ষা গ্রহণকারীর দৃষ্টিতে ভাল কাজ কি৷
৫। পরীক্ষা মাধ্যমে যার কাজ যেমন হবে তাকে সে অনুপাতেই প্রতিফল দেয়া হবে। কারণ ফলাফলই যদি না থাকে তাহলে পরীক্ষা নেয়ার আদৌ কোন অর্থ হয় না।
পরীক্ষার ধরন কেমন হবে?
এ মানুষকেই যখন সামান্য মসিবতে পেয়ে বসে তখন সে আমাকে ডাকে৷ কিন্তু আমি যখন নিজের পক্ষ থেকে নিয়ামত দিয়ে তাকে সমৃদ্ধ করি তখন সে বলে ওঠেঃ এসব তো আমি আমার জ্ঞান-বুদ্ধির জোরে লাভ করেছি৷ না, এটা বরং পরীক্ষা৷ কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না”৷ (সুরা জুমারঃ ৪৯)
“আমি এক, বিরামহীন অশুভ দিনে তাদের ওপর প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস পাঠালাম ।যা তাদেরকে উপরে উঠিয়ে এমনভাবে ছুঁড়ে ফেলেছিলো যেন তারা সমূলে উৎপাটিত খেজুর বৃক্ষের কাণ্ড ৷ দেখো, কেমন ছিল আমার আযাব এবং কেমন ছিল আমার সাবধানবাণী”৷ সুরা ক্বামারঃ১৭- ২১
“কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জালেম ছিল তারা তাদেরকে যে কথা বলা হয়েছিল তা পরিবর্তিত করে ফেললো৷ এর ফলে তাদের জুলুমের বদলায় আমি আকাশ থেকে তাদের প্রতি আযাব পাঠিয়ে দিলাম” । সুরা আরাফঃ ১৬২
এই আয়াতের মধ্যমে বুঝা যায়, আল্লাহ বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করে থাকেন। আর সীমা লংঘন করা থেকে দূরে রাখেন । বালা- মসিবত, ভুমিকম্পন সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ,র্দূঘটনা ,রোগ বালাই , বিপদ আপদ ,ধন সম্পদ ,জান মালের , সন্তান সন্ততির ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করে থাকেন । যেমন দুনিয়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন একই বিষয়ের উপর পরীক্ষা হয় না তেমনি আল্লাহ আমাদের বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করবেন।
নবী রাসূল (আ) দের পরীক্ষার নমূনা:
“তখন আমরা আদমকে বললাম , “তুমি ও তোমার স্ত্রী উভয়েই জান্নাতে থাকো এবং এখানে স্বাচ্ছন্দের সাথে ইচ্ছে মতো খেতে থাকো, তবে এই গাছটির কাছে যেয়ো না ৷ অন্যথায় তোমরা দু’জন যালেমদের অন্তরভুক্ত হয়ে যাবে” ৷ সুরা বাকারাঃ ৩৫
“আর (আল্লাহ বলেন) সেই সময়ের কথা স্মরণ করো যখন আমি ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছিলাম, যারা তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি দিতো, তোমাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো৷ আর এর মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য ছিল মহা পরীক্ষা”৷ সুরা আরাফ -১৪১
এইভাবে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত থেকে জানা যায় ,আদম আঃ জান্নাতের নিষিদ্ধ গাছ দিয়ে , নূহ আঃ প্লাবন দিয়ে , আইয়ুব আঃ কঠিন রোগ দিয়ে, এয়াকুব আঃ সন্তান দিয়ে, ইউসূফ আঃ চরিত্রিক ভাবে , ইউনুস আঃ মাছের পেটে নিয়ে ,সোলাইমান আঃ কে সম্পদ ও রাজ্বত্ত দিয়ে ,এই ভাবে দেখা যায় আল্লাহ সব নবী কেই কোন না কোন ভাবে পরীক্ষা করে ছিলেন ।কিবলা পরিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের নবী সাঃ এর পরীক্ষা করেছিলেন।
আমার জীবনে কয়েকটি পরীক্ষাঃ
ছোট বড় অনেক গুলো বাদ দিয়ে আমার জীবনের স্মরনীয় কয়েকটি পরীক্ষার কথা মনে আছে । নানাদের প্রচুর মিষ্টিআলু হত। ৪ বছর বয়সে সেটা তুলার সময় মামার কোদালের কোপ এসে গলায় পড়ে । ৫ বছর বয়সে ঈদের আগের দিন বান্ধবীদের সাথে গোসল করতে গিয়ে পুকুরে সাঁতার জানা ছিল না তাই ডুবে পুকুরের তলায় ১ ঘন্টা ছিলাম। ১৯৮৫ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী ১৪ বছর বয়সে প্রথম মা হওয়ার সময় সবাই আমার ও সন্তানের আশা ছেড়েই দিয়েছিল। ১৯৮৭ সালের ২৩ই জুন মাসে যোথ সংসারের আমার চেয়ে বড় ভাতের পাতিলের মাড় উপোড়র করতে গিয়ে পাতিলের ভিতর ঢুকে যাই। ঢাকা মেডিক্যালের বার্ণ বিভাগে তাই ১মাস ১০ দিন থাকি ছোট বাচ্চা নিয়ে।
২০১০ সালে ৮ই আগস্ট প্রথম বার ব্রেইন স্টোক করলাম ।গত বছর ২য় বারের মত আবার ব্রেইন স্টোক করলাম ।তাতেও আল্লাহ রক্ষা করেছে । আপনাদের কাছে দুআ চাই সব পরীক্ষা শেষে আল্লাহ তাআলা যেন আমার হাতে জা্ন্নাতের একটা সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেন।
ঈমানের দাবী কি?
আল্লাহ এই পৃথিবীতে হাজারো সৃষ্টির মধ্যে সর্বোত্তম সৃষ্টি মানুষের আল্লাহর উপর যখন ঈমান আনে তখন সেই ঈমান অনুসারে তার দায়িত্ত্ব ও কর্তব্য হচ্ছেঃ
১।এই পৃথিবীর সকল খারাপ বা পাপ হতে নীজেকে মুক্ত রাখা। যেমন কাদার ভিতরে থেকেও বাইন মাছ নিজেকে পরিস্কার রাখে।
২।আল্লাহ পদত্ত জীবন ব্যবস্থা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা ।যেমন জীবন যাপন করেছিলেন দুনিয়াতেই জান্নাতের ঘোষনা প্রাপ্ত মুত্তাকিনরা।
৩। আদর্শ নেতা হিসেবে প্রিয় নবী সাঃকে অনুসরন করা। “হে ঈমানদারগণ!আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করোএবং হুকুম শোনার পর তা অমান্য করো না৷ তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বললো, আমরা শুনেছি অথচ তারা শোনে না”৷ সুরা আরাফ ১৯-২০
৪। মুনাফিকি আচরন থেকে নীজেকে দূরে রাখতে হবে ।কথা ও কাজে মেনে নেয়া ও গ্রহণ করা একই সাথে প্রকাশ পাবে । যেসব মুনাফীক ঈমানের কথা মুখে বলে কিন্তু আল্লাহর হুকুম মেনে চলে না এবং তার আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে।
৫। জীবনের সকল কর্মতৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু হবে সব কিছুর মালিক আল্লাহ তালার কাছে সঁপে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার মাধ্যমে। “বলো, আমার নামায, আমার ইবাদাতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ রব্বুল আলামীনের জন্য”। সুরা আনআমঃ ১৬২
৬। দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার পূর্ব শর্ত আল্লাহর পথে চলা ও সত্যের সাক্ষ্য বহনকারী হিসাবে তা অন্যের কাছে পৌঁছান। “আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি ‘মধ্যপন্থী’ উম্মাতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা দুনিয়াবাসীদের ওপর সাক্ষী হতে পারো এবং রসূল হতে পারেন তোমাদের ওপর সাক্ষী”। সুরা বাকারাঃ ১৪৩
৭।মু’মিনের সব চেয়ে বড় পরিচয় আল্লাহ ও তার রাসুল সাঃ কে সব চেয়ে বেশি ভালবাসা।
“অথচ ঈমানদাররা সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভালোবাসে” সুরা বাকারা ১৬৫
হযরত আনাস রাঃ বলেন, রাসুল সাঃ বলেছেন, “তোমাদের কেহ মু’মিন হতে পারবেনা,যে পর্যন্ত আমি তার নিকট তার পিতা মাতা ,তার সন্তান সন্তুতি এবং অন্য মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় না হই”।(মিশকাত শরিফ)
৮।ঈমানের দাবী মুসলমানদের সর্বত্তোম কাজ দাওয়াতি কাজ করা আর তা না করলে জালিম হতে হবে ।
আল্লাহর বাণী:“সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো এবং ঘোষণা করলো আমি মুসলমান” সুরা হামিম সেজদাহঃ ৩৩
“তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে , যার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সাক্ষ রয়েছে এবং সে তা গোপন করে চলে? তোমাদের কর্মকান্ডের ব্যাপারে আল্লাহ গাফেল নন”৷ সুরা বাকারা ১৪০
কিভাবে ঈমানের দাবী পরীক্ষা দিয়ে মান উন্নয়ন করাঃ
“তোমাদের অবশ্যি ধন ও প্রাণের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবং তোমরা আহলি কিতাব ও মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে৷ যদি এমন অবস্থায় তোমরা সবর ও তাকওয়ার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো তাহলে তা হবে বিরাট সাহসিকতার পরিচায়ক” ৷ আল আলে ইমরানঃ ১৮৬
১।প্রাচুর্য ও দারিদ্রতা উভয়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা ।
“কিন্তু মানুষের অবস্থা হচ্ছে এই যে , তার রব যখন তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তাকে সম্মান ও নিয়ামত দান করেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেনআবার যখন তিনি তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তার রিযিক তার জন্য সংকীর্ণ করে দেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে হেয় করেছেন৷”৷ সুরা ফজর ১৫-১৬
২। পরীক্ষাই মুমিন ও মুনাফিক বাছাই করার উপায়। এর মাধ্যমে আল্লাহর খাটি বান্দারা তাওবা করে।
“এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে দুএকটি পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়? কিন্তু এরপরও এরা তাওবাও করে না কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না”৷ সুরা তাওবা ১২৬
৩ ।অন্তরের কুটিলতা যাছাই করার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন ।
“তোমাদের বুকের মধ্যে যা কিছু গোপন রয়েছে আল্লাহ তা পরীক্ষা করে নেবেন এবং তোমাদের মনের মধ্যে যে গলদ রয়েছে তা দূর করে দেবেন ৷আল্লাহ মনের অবস্থা খুব ভালো করেই জানেন” ৷ সুরা আল আলে ইমরান ১৫৪
৪।পার্থিব শান্তি আসার আগে আল্লাহর পক্ষ থেকে স্বচ্ছলতার পরীক্ষা আসে ।
“তোমার পূর্বে অনেক মানব গোষ্ঠীর কাছে আমি রসূল পাঠিয়েছি এবং তাদেরকে বিপদ ও কষ্টের মুখে নিক্ষেপ করেছি, যাতে তারা বিনীতভাবে আমার সামনে মাথা নত করে”৷ সুরা আনয়াম ৪২
৫।পরিক্ষার অবস্থা শেষ হওয়ার পর ঈমান আনা নিরর্থক । পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে গেলে যেমন পরিক্ষার হলে ডুকা পড়িক্কা দেওয়া যেমন নিরর্থক।
৬।আল্লাহ ঈমানদারদের তাদের সহ্য ক্ষমতার বাহিরে অতিরক্ত কোন পরীক্ষাইয় ফেলেন না ।তাই প্রত্যেক পরীক্ষায় অটল ঈমান বৃদ্ধির কারন হয়ে থাকে ।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে , আমরা নবী রাসুল ও সাহাবে কেরামের মত কোরান সুন্নাহর জ্ঞানের সমরাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর পথে চলতে হবে ।আর যত কঠিন পরীক্ষাই আসুক না কেন মু’মিন হিসাবে এই পথে অটূট ও অবিচল থাকতে হবে।কোরান হাদিসের জ্ঞান অর্জন করে পরীক্ষায় সফলতা পাওয়ার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যান লাভ করতে পারব ইনশাআল্লাহ ।
বিষয়: বিবিধ
৩৪৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন