বি.বি.সি' র বলদ সাংবাদি ফরিদ আহমেদ নাকি মতিঝিলে লাখ লাখ লোকে সমাবেশ দেখে অজ্ঞান হয়ে গেছেন !!!

লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ ২৪ মার্চ, ২০১৩, ১০:৩১:১১ সকাল



বিবিসি'র নিউজঃ

বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ‘বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদে’র ডাকে ঢাকার মতিঝিলে বিশাল সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ যোগ দিয়েছেন।

শনিবার জোহরের নামাজের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এই সমাবেশ শুরু হয় – আর সেখান থেকে ওলেমারা বলেন জামায়াতে ইসলামী প্রকৃত ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না, তাই তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

সম্পর্কিত বিষয়

দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত শোলকিয়ার ইমাম, মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদের নেতৃত্বেই দিনকয়েক আগে গড়ে উঠেছে এই সংহতি পরিষদ – তিনিই ছিলেন এদিনের সমাবেশে প্রধান বক্তা।



অন্যান্য পত্রিকার রিপোর্টঃ

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ সরকারের নানা সহায়তার পরও গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদের মহাসসমাবেশে কোনো সাড়া মেলেনি। সকাল ১১টায় শ’দেড়েক লোক নিয়ে শুরু হওয়া সমাবেশে বিকালে সর্বশেষ উপস্থিতি ছিল হাজার খানেক লোক। আওয়ামীপন্থী ও শাহবাগি আলেম হিসেবে পরিচিত মাওলানা মাসউদের এই সমাবেশে উল্লেখযোগ্য কোনো আলেম-ওলামা যোগ দেননি। বেশ কয়েকদিন ধরে ব্যাপক প্রচারণা আর নানা আয়োজন সত্ত্বেও সমাবেশ ফ্লপ হলেও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মতিঝিল ও আশপাশ এলাকা দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখায় জনদুর্ভোগ ছিল চরমে। রাষ্ট্রীয় শোকদিবস উপেক্ষা করে সমাবেশের নামে ব্যাপকসংখ্যক মাইকের বিকট আওয়াজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। সমাবেশের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধসহ নানা বিদ্বেষ। এমনকি সমাবেশে লাখ লাখ ওলামা ও তৌহিদি জনতা জমায়েত হয়েছে বলে কয়েকবার মিথ্যাচার করেন মাওলানা মাসউদ। তিনিসহ অনেকে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে কটাক্ষ এবং নাস্তিক মুরতাদদের উসকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া সমাবেশের কারণে পাশেই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আয়োজিত মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কুলখানি অনুষ্ঠান বিঘ্নিত হওয়ারও অভিযোগ ওঠে।

ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষুব্ধ, লোকসমাগমে ব্যর্থ : বিশাল মঞ্চ আর সামনে ব্যাপক জায়গায় ত্রিপল বিছিয়ে সমাবেশের জায়গা প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে ১০-১২ জন লোক মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে জামায়াতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ১১টা থেকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও লোকজন উপস্থিত না হওয়ায় মাইকে ঘোষণা করা হয় যে সারাদেশ থেকে তাদের লোকজন বাসে করে ঢাকায় আসছেন। তারা এসে পৌঁছলে জোহরের নামাজের পর মূল সমাবেশ শুরু হবে। ততক্ষণে মাইকে ইসলামি গান আর স্লোগান চলতে থাকে। তবে জোহরের নামাজের পর দুপুর আড়াইটায় যখন মূল বক্তব্য পর্ব শুরু হয় তখনও মঞ্চের সামনে শ’দেড়েক লোক উপস্থিত ছিল। এমনকি ৩টা ৫০ মিনিটে সভাপতির বক্তব্য শুরুর সময়ও এ সংখ্যা দাঁড়ায় শ’পাঁচেক। আর শেষ পর্যায়ে এসে উপস্থিতি ছিল হাজার খানেক। এদের মধ্যে অনেকে ছিল ফরিদউদ্দিনের নিজের ও তার অনুসারী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক। তাছাড়া উত্সুক কিছু লোক সেখানে এসে জড়ো হয়। সূত্রমতে, সারাদেশ থেকে এই সমাবেশে লোক সমাগমের ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। শাহবাগে নাস্তিক ব্লগারদের সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে দোয়া করার কারণে আলেম সমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ফরিদউদ্দিনের বিরুদ্ধে চরম নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়। তারই বাস্তব প্রতিফলন অনুষ্ঠিত সমাবেশে ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

জানা গেছে, গতকাল ফরিদউদ্দিনের এলাকা কিশোরগঞ্জের তারাইলের সাতাইল মাদরাসার সামনে ১০-১২টি গাড়ি নিয়ে টাকার বিনিময়ে লোক নেয়ার চেষ্টা করলেও তাতে সাড়া পায়নি। এ নিয়ে এলাকায় উপহাস করে লোকজন। লোক সমাগমের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয় কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। সূত্রমতে, বিকালে বায়তুল মোকাররমে মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কুলখানিতে যোগ দেয়ার জন্য ঢাকার আশপাশের ১৫টি জেলা থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সংশ্লিষ্ট ইমাম ও গণশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়ে আসা হয়। প্রতি জেলা থেকে ৩০-৩৫ জন করে এ উদ্দেশ্যে বায়তুল মোকাররমে এসে পৌঁছলে তাদের মতিঝিলের সমাবেশে যোগ দেয়ার কথা বলা হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইমাম ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান অনেক ইমাম। শেষ পর্যন্ত তারা তাতে যোগ দেননি বলে জানা গেছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের লোকজনের এ সমাবেশে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এ সংখ্যা ছিল কম। মঞ্চে ওলামা লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম সিরাজীসহ কিছু নেতাকর্মী এতে যোগ দেন। তবে আয়োজক সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সমাবেশে বক্তব্য দেন গত বছর ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেয়া নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইফী। সমাবেশে উপস্থিতির দুরবস্থা দেখে হতাশ হয়ে পড়েন সংশ্লিষ্টরা। এ সময় তারা বারবার মাইকে ঘোষণা করেন, সমাবেশে যোগ দিতে হাজার হাজার মানুষের মিছিল বিভিন্ন রাস্তায় রয়েছে। জোহরের নামাজের পর মহাসমাবেশ শুরু হবে। এদিকে দুপুর ২টার দিকে মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যানজটে আটকে পড়ায় বিরাট বিরাট মিছিল এসে পৌঁছায়নি। এজন্য কাউকে হতাশ না হওয়ার আহবান জানিয়ে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। বেলা ২টা ৪০ মিনিটে মূল আয়োজক মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ মঞ্চে এসে উপস্থিত হন। ৩টা ৫৫ মিনিটে তিনি আধাঘণ্টার মতো বক্তব্য দেন। সাড়ে ৪টার দিকে মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের জন্য বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে সমাবেশের সমাপ্তি হয়।

বিষয়: রাজনীতি

১৬১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File