এই নিউজটি বাংলানিউজ৪২০.কম এর। জামায়াত হলে গ্রামবাসীদের দুস্কৃতিকারী হিসেবে চালায় দিতো এই নিউজ সাইটি.....পুলিশ মামুরা চালায় দিতে চাইছিল কিন্তু পারে নাই !!!
লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ ২১ মার্চ, ২০১৩, ০৪:২০:২০ বিকাল
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পূর্ব দারিয়াপুর গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় নিহত ইন্তাদুল মণ্ডলের লাশ আনতে অনীহা দেখিয়ে লাশ উদ্ধার করেনি পুলিশ।
তবে জনরোষের আতঙ্গে পুলিশ লাশ আনতে যায়নি বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে ওই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ইন্তাদুল। পরে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে লাশের কাছে পৌঁছাতে না পেরে থানায় ফিরে আসে মহেশপুর থানা পুলিশ। তারপর থেকেই বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর রোষানলে পড়ার ভয়ে লাশ আনতে যাচ্ছে না পুলিশ।
তবে পরে স্থানীয় বিএনপির সহায়তায় লাশ সংগ্রহ করে পুলিশ।
মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন বাংলানিউজকে জানান, ওসি আকরাম হোসেন তাদের কাছে লাশটি পৌছে দিতে বলেছেন। লাশের ময়নাতদন্ত করে আবার স্বজনদের কাছে ফেরত দিবেন আশ্বাস দেওয়ায় দুপুর ১টার দিকে লাশ মহেশপুর থানায় পৌছেঁ দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে ঘটনাস্থলে হাজারো জনতার উপস্থিতি ও এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করায় নিরাপত্তাজনিত কারণে পুলিশ লাশ আনতে যায়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, নিহত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলতাফ হোসেন নিহত ইন্তাজুল ইসলামকে জামায়াতের কর্মী বলে মিডিয়াকে জানালেও বিএনপির দাবি তিনি নাটিমা ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড যুবদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন।
মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ মহিউদ্দীন অভিযোগ করেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও নিরীহ মানুষের উপর গুলি চালানোর বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্যই পুলিশ নিহত ব্যক্তিকে জামায়াত কর্মী বলে চালানোর চেষ্টা করছে।
অপরদিকে, স্থানীয় গ্রামবাসী ইয়ার আলী অভিযোগ করেন, আসামি গ্রেফতারের নামে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সহায়তায় পুলিশ শিশু ও নারীদের মারধরসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করায় গ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। পুলিশের হামলায় শিশু, স্কুল ছাত্রী ও ৮০ বছরের বৃদ্ধাও বাদ পড়েনি।
হুদা গ্রামের বিশারত আলীর মেয়ে স্কুল ছাত্রী ফাতেমা খাতুন, আশরাফ আলীর মেয়ে রিশনা খাতুন, ৮০ বছরের বৃদ্ধা মৃত হোসন মালিথার স্ত্রী কদভানু বেগম, শিশু রাফেজা, জিসান, রিক্তা খাতুন, আকলিমা খাতুন, আসমা খাতুন, আনোয়ারা বেগম, হাফিজা খাতুন, শরিফুলের স্ত্রীসহ অন্তত ২০/২৫ জন নারী-পুরুষকে পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী।
শিশু ও নারীদের উপর নির্যাতন চালানোর কারণেই গ্রামবাসী ফুঁসে ওঠে বলে জানায় তারা। তবে পুলিশ তাদের সঙ্গে অন্য কারোর উপস্থিতি বা নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছে।
সুত্র জানায়, ভোরে পুলিশ পূর্ব দারিয়াপুর গ্রামের আজিবর বক্স, হায়দার আলী, নজির উদ্দীন, আতিয়ার রহমান, শরিফুল ইসলা, মাহমুদ, আব্দুস সাত্তার, লিয়াকত হোসেন ও শুকুর আলীসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় আসামি ধরার নামে পুলিশ হয়রানি ও নাজেহাল করলে গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। এতে পুলিশ তাদের উপর প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ৫৫ রাউন্ড সটগানের গুলি ও ৩৩ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, সাঈদীর মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা ও হরতালের সময় নাশকতা, অবরোধ ও পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলার আসামি ধরতে বৃহষ্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পূর্ব দারিয়াপুর গ্রামে আসে পুলিশের একটি দল।
এ সময় পুলিশ প্রতিটি বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে আসামি গ্রেফতারের নামে সাধারণ গ্রামবাসীকে হয়রানি করলে গ্রামবাসী জোটবদ্ধ হয়ে বাধা দেয় এবং ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর চালায়।
অবস্থা বেগতিক দেখে গুলি চালায় পুলিশ। এতে পূর্ব দারিয়াপুর গ্রামের ইন্তাদুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ সময় আতিয়ার রহমান, সহিদুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান ও শহিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়।
বিষয়: রাজনীতি
১১৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন