ফজলুল হক মনি'র মুজিব বাহিনীর হাতে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়েছে তাদের বিচার কবে হবে? আওয়ামীলীগ বিরুদ্ধমত কখনই সহ্য করে না সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে।
লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ ২১ মার্চ, ২০১৩, ১০:৪৬:১৫ সকাল
মুজিব বাহিনীর সিরাজুল আলম খান, হাসানুল হক ইনু, আব্দুর রাজ্জাকরা তখনো বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে নামেনি কিন্তু শেখ ফজলুল হক মনি যুদ্ধ শুরু করে দেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে আর যুদ্ধরত বাম পন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে।
ট্রেনিং প্রাপ্ত মুজিব বাহিনীর সদস্যরা ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশ প্রবেশ শুরু করে। কিন্তু তাদের দুই মাস আগেই মনিপন্থী মুজিব বাহিনী দেশে ঢুকে যুদ্ধ শুরু করে যুদ্ধরত বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে।
বৃহত্তর বরিশাল জেলায় পেয়ারা বাগানে সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টির সাথে মিশে এক মরনপন যুদ্ধে লিপ্ত হয় পাকিস্তানী আর্মির বিরুদ্ধে।
ওই যুদ্ধ সন্মন্ধ্যে ১৯৭১ সালের ৭ ই জুন সর্বহারা পার্টির এক প্রচারপত্রে বলা হয়, “পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলনে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনী সকল দেশ প্রেমিক পার্টি ও জনসাধারনের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক পথে সংগ্রাম পরিচালনা করতে আহ্বান জানায়। তাদের অংশ গ্রহনে অন্যান্য দেশ প্রেমিকদের নিয়ে স্থানীয় ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন হয়”।
ঐক্যবদ্ধ মুক্তিবাহিনী তফশীলি হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত পূর্ব বাংলার বৃহত্তম পেয়ারা বাগান, কুরিয়ানা, ডুমুরিয়া, ভীমরুল এলাকায় গেরিলা যু দ্ধ পরিচালনা করে ( বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, চতুর্থ খন্ড পৃঃ ৫২০-৫২২)।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই রত সকল বামপন্থী সহযোদ্ধা হিসাবে সিরাজুল, রাজ্জাক, ইনুর কাছে গন্য হলেও মনির কাছে এরা ছিলেন কেবল মাত্র বামপন্থী আর শত্রু চর। অতএব আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে ঢুকে মনি গ্রুপের মূখ্য লড়াই হয়ে দাড়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী নয় বামপন্থী নিধন অভিযান। অথচ এই বামপন্থীরা আর মুক্তিযোদ্ধারা কিন্তু এদেশে মুজিব বাহিনী ঢোকার অনেক আগেই পাকিস্তানী আর্মিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
মনিপন্থী মুজিব বাহিনী সন্মূখ সমরে না নেমে তারা বেছে নেয় গুপ্তহত্যা প্রক্রিয়া। কোথাও কোথাও সরাসরি লড়াই।
লেখক অধ্যাপক আসহাব উদ্দীন আহমেদ তার ‘ইন্দিরা গান্ধীর বিচার চাই’ গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন ষোলজন মুক্তিযোদ্ধার নামে যার চৌদ্দজন মারা যায় মুজিব বাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে। চট্টগ্রামের বাশখালী থানার নাপোড়া পাহাড়ে রাতের আধারে ঘুমন্ত অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত এই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে মুজিব বাহিনীর মনি গ্রুপ যাদের কে বিশ্বাস করে ওই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের দলে স্থান দিয়েছিল।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সৈয়দ কামেল বখত গুপ্ত হত্যার শিকার হয় মনিপন্থী মুজিব বাহিনীর হাতে। ভাগ্য ক্রমে বেচে যান সৈয়দ দীদার বখত ( পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের প্রতিমন্ত্রী)। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সৈয়দ কামেল। নিজের একক প্রচেষ্টায় জুন মাসের মাঝামাঝি নিজ বাহিনী নিয়ে দখল করেন তালা থানা আর সর্ব প্রথম তালা থানায় তোলেন বাংলার স্বাধীন পতাকা। এর আরো বীরত্ব গাথা আছে যাতে পুরো পোষ্ট হয়ে যায়। সেদিকে না যাই।
মুজিব বাহিনীর তিনজন প্রবেশ করে ডুমুরিয়া থানায় পালিয়ে যাবার সময় হত্যা করে সর্বজন প্রিয় মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ কে।
খুলনা জেলার ছয় জন বামপন্থী মুক্তি যোদ্ধাদের হত্যা করে রাজাকারদের সহায়তায়।
পাকিস্তান সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধরত আলাউদ্দিন-মতিনের পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নেমে পড়েন পাবনার শাহপুরে। এই যুদ্ধে আলাউদ্দিন- মতিন গ্রুপের এমন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাদের মুজিব বাহিনী হত্যা করে যারা এপ্রিল থাকে পাক বাহিনীর সাথে লড়ে আসছিল।
নরসিংদী প্রচন্ড রকম যুদ্ধ শুরু হত মুক্তিযোদ্ধা আর মনিপন্থী মুজিব বাহিনীর মধ্য যদি না রাজ্জাক ইনুরা সময় মত বাধা দিত।
১৯৭০ সালের ১২ ই আগষ্ট অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় বৈঠকে স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রস্তাবের উপস্থাপককে নির্মম ভাবে গুম করা হয় স্বাধীনতার পর দিন ১৭ ই ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে। এর কিছুদিন পর গায়েব হয়ে যায় স্বপনকে পরিচর্যা করা নার্স। অন্যায়? কারা স্বপন কে গুম করেছে তাদের দেখে ফেল ছিল। এ প রিপ্রেক্ষিতে ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে র এবং সি আই এর ভূমিকা’র লেখাক মাসুদুল হককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিস্কার ভাবে হাসানুল হক ইনু মনিকে দায়ী করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্যায়ভাবে হত্যাকারী প্রতিটি রাজাকারের বিচার আমরা চাই। সেই সাথে চাই এই সব মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত।
আওয়ামীলীগ এমনই একটি দল যে দল বিরুদ্ধমত কখনই সহ্য করতে পারে না সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে।
এ আর অবাক করা কি শেখ হাসিনা একটুতেই উত্তেজিত হয়ে ১৭০ জন অবুজ মানুষ কে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হত্যা করবে। আবার সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মানবাধিকার পুরুস্কার দেবে। কি চমৎকার এই দেশ। এই ১৭০ জন যদি রাজাকার হয় আমি এই হত্যাকান্ড সমর্থন করি। আবার লজ্জার মাথা খেয়ে বলে এই নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিচার করবে।
কই ত্বকি হত্যার কি হোল? যেখানে ত্বকির বাবা পরিস্কার বলে দিছে কে তার সন্তান হত্যাকারী। আর কত দিন?
বিষয়: বিবিধ
১২৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন