প্রথমআলো, এটিএন নিউজ, বাংলাভিশন সহ হলুদ মিডয়ার নির্লজ্জ, মিথ্যা, বানোয়াট রিপোর্টঃ ফটিকছড়ির ঘটনা প্রসঙ্গ !!!

লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫১:৫৭ সকাল

আমার সালের কথাটা পুরো মনে পড়ছে না কিন্তু রাবি'র শিক্ষক ডঃ তাহের হত্যাকান্ডের বিষয়ে প্রথমআলো সহ কিছু হলুদ মিডিয়ার ভূমিকার কথা স্পষ্ট মনে আছে। প্রথমআলো সহ কিছু হলুদ মিডিয়া ডঃ তাহের হত্যাকান্ডে তৎকালীন রাবি'র শিবির সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহীকে নিয়ে যে সিরিজ রিপোর্ট করেছিল তা পুরোটাই সুপার ফ্লপ হয়েছিল।

কারন প্রথমআলো সহ কিছু হলুদ মিডিয়ার অতিরঞ্জিত, অতিউৎসাহী আর যৌনউত্তেজক রিপোর্টের কারনে ফখরুদ্দিন ও মইনউদ্দিন সরকার একরকম বাধ্য হয়েই সালেহীকে গ্রেফতার করেছে। অনেক দিন কারাভোগের পর তিনি সেই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এতে আঁতে ঘা লাগে প্রথমআলো সহ কিছু হলুদ মিডিয়ার। অনেক চেষ্টা করেও সেই সময় তারা শিবিরকে আসামী করতে পারলো না।

এর পর "ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলের বলি" রাবি'র ছাত্র ফারুক হত্যা কান্ড নিয়ে তাদের নোংরামি ছিল লক্ষ্য করার মত সেখানেও প্রথমআলো সহ কিছু হলুদ মিডিয়ার টার্গেট হলো শিবির। তাতেও হতাশ হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখছে না সেই হলুদ মিডিয়াগুলো। কারন সেই মামলায় শিবিরের সবাই জামিন বা খালাস পেয়ে গেছে ইতিমধ্যে। তাই এবার সর্বশেষ টার্গেট ফটিকছড়ি ট্রাজেডি।

সারা দেশের মত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সেদিনও প্রতিরোধের শিকার হয়েছিল ফটিকছড়িতে। হরতালের দিনে তারা নাকি শান্তিপূর্ন(!) মোটর শোভাযাত্রা করতেছিল । এমন বল্গাহীন, লজ্জাহীন, রাবিশ রিপোর্ট আওয়ামী পন্থী অনেক মিডিয়াও করেনি।

প্রকৃত ঘটনাঃ

গতকাল দেশব্যাপী জামায়াত-শিবির এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিএনপির হরতাল চলছিল। ফটিকছড়িতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল সকাল ৮টায় দক্ষিণ ফটিকছড়ির মোহাম্মদ তকিরহাট থেকে একটি হরতালবিরোধী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি দুপুরে উপজেলা সদর প্রদক্ষিণ শেষে উত্তর ফটিকছড়ির দিকে রওনা দেয়। দুপুর দেড়টা নাগাদ মোটর শোভাযাত্রাটি উপজেলার ভুজপুর থানার কাজিরহাট বাজার মসজিদ মোড়ে পৌঁছে জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম এবং বিএনপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে হরতালকারী জনতা ইটপাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধ শুরু করে।

এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা একজন দাড়িওয়ালা লোককে ‘তুই রাজাকার’ বলে গালে থাপ্পড় মারলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ছাত্রলীগ কর্মীরা কাজিরহাট বড় মাদরাসা মনে করে কেন্দ্রীয় মসজিদে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে মসজিদ থেকে মাইকে গ্রামবাসীকে সন্ত্রাসী প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মুহূর্তেই গ্রামবাসী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চতুর্দিকে ঘেরাও করে আক্রমণ শুরু করে। মোটর শোভাযাত্রাটি আর কাজিরহাট বাজারে প্রবেশ করতে না পেরে ফেরত আসার চেষ্টায় কাজিরহাটের দক্ষিণে কালাইয়ারটেকে পৌঁছা মাত্র গ্রামবাসী অবরুদ্ধ করে মোটর শোভাযাত্রার সব গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় ফকিরহাটেও ১৫-২০টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ভাগ্যক্রমে ২০-২৫টি মোটরসাইকেল পালিয়ে আসতে পারলেও দু’শতাধিক মোটরসাইকেল, আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলামের মাইক্রোবাস, শোভাযাত্রার ৯টি চাঁদের গাড়ি ও মিনি ট্রাক বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর দেয়া আগুনে ছাই হয়ে গেছে। বেলা ২টা পর্যন্ত উপজেলা সদর থেকে এক প্লাটুন বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়বসহ সবাইকে উদ্ধারের অসংখ্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ফটিকছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। এ সময় বিজিবির একটি টিম পেয়ারুলকে নিয়ে কৌশলে পালানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর ফাঁকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য গ্রামবাসী স্থানীয় ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সম্মুখে গাছ কেটে আবারও ব্যারিকেড দেয়।

উপায়হীন বিজিবি আওয়ামী লীগ নেতাদের জীবন রক্ষার্থে তাদের জিপে নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং বিক্ষুব্ধ জনতার মাঝ দিয়ে দ্রুতবেগে গাড়ি চালিয়ে কোনোমতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় বিজিবির গাড়ি থেকে পড়ে গেলে জনতার গণপিটুনিতে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়। এছাড়া স্থানীয় কেজি স্কুলের দক্ষিণ পাশে বাড়ির ভেতর জনতার গণপিটুনিতে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়। এ সময় বিজিবির মুহুর্মুহু গুলিতে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। পরে জনতা ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িটি জ্বালিয়ে দেয়। অপরদিকে সংঘর্ষের সময় বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেয়া ছাত্রলীগ কর্মীদের গণপিটুনি দিলে অর্ধশতাধিক আহত হয়।

প্রথমআলোর নিউজঃ

ফটিকছড়ির ভুজপুরে আওয়ামী লীগের মিছিলে নারকীয় হামলায় শিবিরের স্থানীয় তিনটি সন্ত্রাসী বাহিনী অংশ নিয়েছিল। এই তিনটি বাহিনীই উত্তর ফটিকছড়ি এলাকায় সক্রিয় বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে আসছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে পুলিশ বলছে, ওই হামলা ছিল পরিকল্পিত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুজপুরের কাজিরহাটে আ.লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে ওই সশস্ত্র হামলায় তিন কর্মী নিহত ও শতাধিক আহত হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ওই মিছিলের পরিকল্পনার তথ্য জামায়াত-শিবির আগেভাগে জানতে পারে। গত নির্বাচনে ফটিকছড়ি আসনের পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ঘটনার দিন সকালে সহযোগিতা চেয়ে স্থানীয় এমদাদুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিমকে (অধ্যক্ষ) ফোন করেন। স্থানীয় প্রশাসনকেও মিছিলের বিষয়টি জানানো হয়।

বিষয়: বিবিধ

১৭১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File