সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় তোপের মুখে ১৪ দল

লিখেছেন লিখেছেন মেজর জলিল ২৮ মার্চ, ২০১৩, ১১:৩৩:৫৮ রাত

২৮ মার্চ,২০১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

আরটিএনএন

ঢাকা: সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে না পারায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তোপের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পরিষদের সঙ্গে ১৪ দলের এক বৈঠকে এই ঘটনা ঘটে।

সভার শুরুর দিকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সম্প্রতি সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন চলছে তাতে অধিকাংশ জায়গায় প্রশাসনের শিথিলতা ছিল।

‘প্রশাসন ঠিকমত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অনেক জায়গায় মন্দির ভাঙার কিংবা পুড়িয়ে দেয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পরেও প্রশাসন সেখানে যায়নি’ অভিযোগ করেন তিনি।

বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘হামলা আমাদের ওপর হবে এটা আমরা জানি। অবশ্যই এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। কিন্তু আমাদেও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ নই। এসব হামলা মোকাবেলায় ১৪ দলের বাইরে যেসব মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল আছে তাদের সঙ্গে ছোটখাট যেসব বিরোধ আছে সেগুলো মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারী দল হিসেবে কেন এসব ঘটনা মোকাবেলায় ১৪ দল ব্যর্থ হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখতে হবে।’

কানুতোষ মজুমদার বলেন, এসব ঘটনা বন্ধ করতে সরকারকে তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় কমিটি করে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমাদের ওপর এখনো কেন নির্যাতন হচ্ছে কিংবা মন্দির ভাঙা হচ্ছে? এত শক্তিধর সরকার মনে হয় স্বাধীনতার পর আর ক্ষমতায় আসেনি। তারপরও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি ১৪ দল নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের নিরাপত্তা না দিতে পারেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমরা আজ থেকে আর কোনো মন্দির ভাঙা কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের খবর শুনতে চাই না।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুই দিনব্যপী মন্দির ভাঙা এবং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চললেও আমার কোনো মন্ত্রী বন্ধুরা কিছুই করলেন না। একের পর এক সারাদেশে ঘটনা ঘটেই চলল, কিন্তু কোনো মন্ত্রীর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি।’

বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তারও যাওয়ার সুযোগ হলো না।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘এসব ঘটনাকে বলা হলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। শুরু থেকেই বলা হচ্ছে জামায়াত-বিএনপি এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিন্তু গতকাল কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রোগ্রামে না যাওয়ার কারণে এক হিন্দুর বাড়ি-ঘর আওয়ামী লীগ নেতারা পুড়িয়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন বর্তমানে যে ঘটনগুলো ঘটছে এর দ্বায়ভার কে নেবে?’

কাজল দেবনাথ বলেন, ‘সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যেসব ঘটনা ঘটছে এটা সরকার কিংবা পুলিশ বাহিনী একা সামাল দিতে পারবে না। আমাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। ১৪ দলের নেতারা এলাকায় না গেলে পুলিশ, র্যা ব কিংবা বিজিবির গুলি এই ঘটনা সামাল দিতে পারবে না।

উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি এই ঘটনা মোকাবেলায় কয়েকটি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘এতগুলো ঘটনা ঘটল অথচ এসব ঘটনার জন্য অভিযোগ করতে সরকারি কোনো সেল গঠন করা হয়নি। বিক্ষিপ্তভাবে আমরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী কিংবা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বলছি।’

তিনি বলেন, অতিসত্বর একটি সেল গঠন করতে হবে। স্থানীয়ভাবে কমিটিগুলোতে ১৪ দল নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো সরকারিভাবে যে সংস্কার করা হচ্ছে, সেগুলো মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার করতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১১৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File