একজন মহান নেতার কথা বলছি..।.।.।.।.।
লিখেছেন লিখেছেন মেজর জলিল ১২ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:০৯:২০ সন্ধ্যা
ড শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম কথা হয় ২০০২ সালে মোবাইল ফোনে, তখন তিনি সম্ভবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি/ সেক্রেটারী আর আমি সদ্য এইচ, এস, সি পাশ করা ছাত্র।রাজশাহী ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাব তাই আমার কলেজের প্রিয় একজন স্যার মাসুদ ভাইয়ের ফোন নম্বরর্টি দিয়েছিলেন। স্যার বলেছিলেন রাজশাহী পৌছিয়ে ফোন দিতে তাহলে থাকার ব্যাপারে সাহায্য করবে।আমি ভেবেছিলাম এত বড় নেতার কি সময় আছে আমার সাথে কথা বলার, তাই রাজশাহী যাবার আগেই কৌতুহলবশত ফোন দিলাম।১ বার ফোন দেয়াতেই আমার ফোন রিসিভ করলেন আর আমাকে বললেন ভাই আমিতো এখন ট্রেনে রাজশাহীর বাহিরে সফরে যাচ্ছি চাপাই নবাবগঞ্জ, আপনি ১টি নম্বর লেখেন ওই ভাইকে আমি বলে দিচ্ছি উনি আপনাকে সহযোগীতা করবে, আর যতক্ষন যতবার কথা বলেছে আমাকে আপনি বলেই সম্বধন করেছে, আর এত নমনীয়ভাবে কথা বলেছে যা আমার কল্পনাতেই ছিলনা। এত বড় মাপের নেতা অথচ আমার মত অপরিচিত, অনেক ছোট ছেলের সাথে এত সময় নিয়ে,এত আন্তরিক ভাবে কথা বলেছে, সাহায্য করেছে তা দেখে আমার কয়েকজন বন্ধু ও অবাক।কিন্তু রাজশাহীতে ওনার দেখা আমি না পেলেও এই মহান নেতার সাক্ষাত আমি পেয়েছি খুলনাতে। ঊনি তখন কেন্দ্রের সেক্রেটারী, খুলনা এসেছিলেন সাংগাঠনিক সফরে। খুলনা বি এল কলেজের বানিজ্য ভবনে সাথী সমাবেশে গিয়েই এই মহান নেতার দেখা পেয়ে গেলাম। মাথার ভিতর ১টাই চিন্তা, চাওয়া যদি একটু কথা বলতে পারতাম!!! খুলনা মহানগরের নেতা স,ম, এনামুল ভাইয়ের সাথে বানিজ্য ভবনের নিচে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখার সাথে সাথে কাছে চলে গেলাম সালাম দিতেই উনি হাত বাড়িয়ে দিলেন, আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম, ভেবে ছিলাম ওনাকে জড়িয়ে ধরি। উনি ওনার স্বভাব সুলভ সেই আন্তরিকতা দিয়ে আপনি স্মবধন করেই কথা বললেন, আমার পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করলেন, আমি বললাম আমার হোম ডিস্ট্রিক ও পটুয়াখালী। মাসুদ ভাইয়ের গ্রামের ঠিকানা বললেন, আমাদের পাশের থানার মদনপুরা গ্রামে ওনার বাড়ি। খুব অল্প সময় এই মহান নেতার সাথে কথা বলেছিলাম কিন্তু আমার মনে হয়েছিল আমি অনন্তকালের জন্য কি জানি পেয়েছি। আমি এই গল্প অনেক জায়গায় বলেছিলাম, আমি মাসুদ ভাইয়ের প্রতি এতটাই আবেগী ছিলাম যে বাচ্চাদের মত সবাইকে ওনার সাথে কথা বলার গল্প করেছিলাম। এর পর আরো কয়েকবার এই মহান নেতার বক্তব্য শনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল, আমার মনে হয় শফিকুল ইসলাম মাসুদ ১ জনই, ওনার তুলনা উনি নিজেই।
১বার সুনাম গঞ্জে আমাদের ১ ভাইকে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ছাত্রদেলের সন্রাসীরা গুলি করে হত্যা করল তখন ৪ দলীয় জোট সরকারে। মাসুদ ভাই খুলনা মহানগর সফরে আসলেন, নেছারিয়া মাদ্রাসার মসজিদে সাথী সমাবেশ, আমরা অনেকেই বলাবলি করতেছিলাম আমরা জোটে থেকেও আমাদের ভাই মারা যাচ্ছে অথচ কেন্দ্র থেকে কোন আন্দোলনের কথা বলতেছেনা এমনকি প্রতিবাদ মিছিল ও করতে দেয়নি কেন??? মহানগরকে কয়েকবার এই প্রশ্ন ও করা হয়েছে, ওনারা বললেন কেন্দ্রের মেহমান এর উত্তর দিবেন। আমরা ও সে আশাতে বসে আছি। মাসুদ ভাই মাইক নিয়ে ওনার কথা শুরু করলেন, শুরু করলেন কে এই মাসে কোরানের কত আয়াত মুখস্ত করেছেন, দারস প্রস্তুত করেছেন হাত তুলেন, কে কতটা হাদীসের দারস প্রস্তু করেছেন হাত তুলেন। অল্প ২/১টা হাত ঊঠল। এর পর বললেন কে কতজন কর্মি, সাথী, সদস্য বৃদ্ধি করেছেন হাত তুলেন। এবার পুরা সমাবেশ নিরব, আবার জিজ্ঞেশ করলেন নিজেদের মান উন্নয়নের জন্য কে কি করেছেন?? কে কতজন সুধী বৃদ্ধি করেছেন???? পুরা সাথী সমাবেশ নিরব।আমরা ভাবলাম এ কি বিপদে পড়লাম আমারা কি জানতে চাইলাম আর মেহমান উল্টা আমাদের একেবারে চেপে ধরেছে।এরপর মাসুদ ভাই বললেন- যদি নিজের মান উন্নয়ন করতে না পারেন, যদি জনশক্তি বৃদ্ধি না করতে পারেন তাহলে কিভাবে সমাজ পরিবর্তন করবেন, কিভাবে ইসলামী বিপ্লব করবেন??? রাজপথ জুড়ে মিছিল করলেই ইসলামী বিপ্লব হয়না, নিজের মান উন্নয়ন ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও বৃদ্ধির বাধ্যমেই ইসলামী আন্দোলনের প্লাটফর্ম তৈরি হবে।
এর পর সুনাম গঞ্জের হত্যাকান্ডের ব্যপারে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভূমিকা ব্যাখ্যা করলেন। দরেন নাইজেরিয়া আর ব্রাজিল খেলতেছে, ব্রাজিল ১ গোল করেছে আর নাইজেরিয়া আক্রমন করতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে।এই সময় নাইজেরিয়ার খেলোয়াড় ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার রোনালদোকে বার বার ফাউল করতেছে এই সময় রোনালদোর ভুমিকা কি হবে?? সে কি নাইজেরিয়ার খেলোয়াড়ের সাথে ঝগরা করবে নাকি বল নিয়ে গোলের লক্ষে এগিয়ে যাবে??? আমরা সবাই উত্তর দিলাম রোনালদোর উচিত বল নিয়ে গোলের লক্ষে এগিয়ে যাওয়া। এর পর মাসুদ ভাই বললেন তাহলে শিবিরের পায় এখন বল, শিবিরের উচিত তার লক্ষে এগিয়ে যাওয়া। এই হল আমাদের মহান নেতা মাসুদ ভাই। এরকম আরো কয়েকটি বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। প্রতেকটা কথা ই ছিল মূল্যবান ও প্রেরনার। মাসুদ ভাই বক্তৃতা শুরু করলে পক্ষ, বিপক্ষ, পথচারী, কর্মী, হকার, দোকানদার, ছাত্র, শিক্ষক সবাই এক নাগাড়ে তার বক্তৃতা শুনত।এমন ই আকর্ষন ছিল তার বক্তৃতায়। মাসুদ ভাই ছিল কথার যাদুকর।
আজ আমার এই মহান নেতা জালিমের কারাগারে আটক, কিছুক্ষন আগে শুনলাম তাকে নির্যাতন করে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।আল্লাহ ই উত্তম অভিভাবক, আল্লাহ ই তাকে হেফাজত করবে।আল্লাহর দরবারে এটুকু ফরিয়াদ আল্লাহ তুমি তাকে হেফাজত কর, তাকে সহ্য ক্ষমতা দাও।আল্লাহ জালিমের বুকে ভয়ের কাপন ধরিয়ে দাও।
বিষয়: বিবিধ
১৯১৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেন এই বাকশালি ফ্যাসিবাদী এমন ভাল ইসলামী লোককে কেন শাস্তি দিচ্ছে ?
বাকশালি সরকার এমন নির্দয় কেন?
কোন নবী বা রসূল বাদ যাইনি। আর আমরা তো মানুষ। তাই ধৈর্য্য ধারন করা। এমন কি প্রফেসর গোলাম আযম জেলে ঢুকার আগে বলেছিল। জুলুম
সহ্য করতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন