ধর্ম যার যার উৎসব সবার ঃ
লিখেছেন লিখেছেন মেজর জলিল ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৪:১৭:৫৯ বিকাল
আমাদের তথাকথিত আধুনিক সমাজে ১ টা কথা প্রচলিত আছে “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” এই কথাটা পালন করার প্রচলন বেশি দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। যাদি আরো পরিস্কারভাবে বলি- তথাকথিত প্রগতিশীলতার দাবিদার বাম, নাস্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই অপসংস্কৃতির প্রচলন বেশি।
বামদের মূল টার্গেট ইসলাম ধর্মকে ভুলভাবে সমাজে উপস্থাপনের মাধ্যমে মুসলিম শিক্ষার্থিদের মাধ্যমেই অপসংস্কৃতির বৈধতা দান করা। যার পদক্ষেপ হিসেবে দেখাযায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Islamic History and Culture Department কতৃক হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিদ্যার দেবী স্বরস্বতী পূজা পালন।বাম ও ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের ষড়যন্ত্রের অন্যতম বহিঃপ্রকাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা।
হিন্দু ধর্মালম্বিরা তাদের পূজা পালন করবে তাতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু ইসলামের নামে সেই পূজায় অংশগ্রহন করা এবং পালনের ঘটনা অবশ্যই ইসলাম ধর্ম অবমাননা।
ইসলাম ধর্মের সাথে অন্যান্য ধর্মের মূল পার্থক্য একত্ববাদ নিয়ে। ইসলাম এক আল্লাহর প্রভুত্ব মেনে নেয়। আর আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক বা অংশীদার করা বা সমকক্ষকরাকে শিরক বলে।শিরকের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরানে বলেন-“ নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তার সাথে শিরক করার গুনাহ ক্ষমা করবেননা, এছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন”- সুরা নিসা ৪৮।
অপর আয়াতে বলেন-“নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শিরক করেছে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম, জালিমের কোন সাহায্যকারী নাই”- সুরা মায়িদাহ ৭২
ইসলাম শিরকের ব্যাপারে Uncompromised। পৌত্তলিকতা ইসলাম ধর্মের গোড়া বিরোধি।
মুর্তি, দেব দেবিকে পূজা অর্ঘ্য দেয়া, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফুল দেয়া। ভাস্কর্যে শ্রদ্ধানিবেদন ও ফুল দেয়া, মোমবাতি প্রজ্জলন করে শ্রদ্ধানিবেদন ও স্মরণ করা, শিখা অনর্বাণে ফুল দেয়া, কবর এ ফুল দেয়া এই সকল কাজ ইসলাম ধর্ম মতে শিরক।কোন মুসলিম এই সকল অনুষ্ঠান পালন করলে, একাত্মতা প্রদর্শন করলে, উৎসাহ প্রদান করলে সে শিরক করল( তবে রাষ্ট্রিয় দ্বায়িত্ব পালন ও জনপ্রতিনিধির দ্বায়িত্বর স্বার্থে গেলে ভিন্ন কথা)। অথচ এই সংস্কৃতিগুলো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শেখানো হয়।
মুসলিম হতে হলে তাকে অবশ্যই একত্ববাদের উপর ঈমান(বিশ্বাস) আনতে হবে। একত্ববাদ স্বীকার করাই ঈমানের প্রথম শর্ত। অনেকে হয়ত বলবে আমিতো আল্লাহকে স্বীকার করি, কোরান পড়ি, নামায পড়ি।কিন্তু তাকে আরো যে জিনিষটা জানতে হবে তা হল ঈমানের হাক্বীকত ৩ (তিন) টি- ১) মুখে স্বীকার করা ২) মনে/অন্তরে বিশ্বাস করা ৩) কাজে/আমলে পরিনত করা। সুতরাং মুসলিম হতে হলে বিশ্বাসকে কাজে পরিনত করতে হবে।
বাম ও ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা ইসলাম সম্পর্কে মুসলিমদের অজ্ঞতার কারনে মুসলিমদের দ্বারাই এসব অপকর্ম করাচ্ছে এবং এই শিরকি সংস্কৃতির প্রসার ঘটাচ্ছে। আর এজন্যই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থিদের বেছে নিয়েছে। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিরাই এক সময় রাষ্ট্রের প্রশাসনে বসবে এবং সাধারণ জনগন ও গ্রামের অল্পশিক্ষিত লোকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিদের গ্রহন যোগ্যতা বেশি।
এই বাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে এবং এর মোকাবেলা করতে হবে। অন্য ধর্মের লোকেরা সম্মানের সহিত স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করবে। তাদের ধর্ম পালন করা যেমনি তাদের অধিকার ঠিক তেমনিভাবে আমার ধর্ম পালনের স্বার্থে অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে না যাওয়া আমার অধিকার।
বিষয়: বিবিধ
২১৭৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন