পল্টনজুড়ে আতঙ্ক: বাড়ি ফিরছে মানুষ
লিখেছেন লিখেছেন মেজর জলিল ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০২:৪১:১৪ দুপুর
জামায়াত-শিবিরের মুহূর্মুহু ককটেল আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফাঁকা গুলি ভীষণ ভীতি ছড়িয়েছে পুরানা পল্টন, বিজয়নগর, নয়াপল্টন, ফকিরেরপুল, আরামবাগ, দৈনিকবাংলা আর বায়তুল মোকারম এলাকায়।
এসব এলাকায় বুধবার সকালে এমন সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দক্ষিণ পাশের লেন বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ব্লক করে দিয়েছে বিজয়নগর থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তা। আর ফকিরেরপুল থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রাস্তায় স্বল্পসংখ্যক রিকশা ও প্রাইভেটকারের মতো হালকা গাড়ি দেখা গেলেও ভারি কোন যানবাহন চলতে দিচ্ছে না পুলিশ। বন্ধ করে দিয়েছে নয়াপল্টন থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত রাস্তাও।
এ পরিস্থিতিতে তাই আতঙ্কিত জনতা এসব এলাকা ছাড়তে শুরু করেছে। দুপুরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ দোকানপাট। কর্মদিবসের দায়িত্ব ফেলে বাসায় ফিরছেন চাকুরেরা। ক্রমেই এসব এলাকা হয়ে পড়ছে জন ও যান শূন্য।
সকাল থেকেই এসব এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে জামায়াত-শিবিরের মুহূর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ, জবাবে পুলিশ, র্যাব ও আর্মড পুলিশের ফাঁকা গুলি এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাতিল, মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন জামায়াত নেতাদের মুক্তি ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় বাতিলের দাবিতে গত ক’দিন ধরেই এমন সহিংস হামলা চালাচ্ছে জামায়াত-শিবির।
এরই ধারবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে তারা এসব এলাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। বিভিন্ন গলি থেকে বেরিয়ে ঝটিকা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায় গাড়িতে, ধরিয়ে দেয় আগুন।
পুরানা পল্টন, বিজয়নগর, নয়াপল্টন, ফকিরেরপুল, আরামবাগ, দৈনিকবাংলা আর বায়তুল মোকারম এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
বিজয়নগরের সামনের ফুটপাতের পোশাক ব্যবসায়ী রহমত বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিনের মতোই কাপড়ের পুটলি নিয়ে বিক্রমপুরে থেকে এসেছিলেন বুধবার। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় বসতে পারেন নি তিনি।
“চারিদিকে গুলির শব্দ। দোকান বসাতে পারিনি। চলে যাচ্ছি।”
বিজয়নগরের এক প্রাইভেট ফার্মের কর্মকর্তা মিনা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, “চারিদিকে যেভাবে গোলাগুলি হচ্ছে তাতে ভয় পাচ্ছি। অফিসের ভেতরে থেকে আতঙ্ক আরো বাড়ছে। তাই বাসায় ফিরছি।”
বাসসেরর সামনে ফুটপাতে প্রতিদিনই শার্ট-প্যান্টের পসরা জমান আনিস। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, “ভাই দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে দোকান বসানোর সাহস পেলাম না। এখানে জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে।”
আজাদ প্রডাক্টস এর গলিতে ক’টা ফলের দোকান খুলেছিলো সকালে। প্রায় সবগুলোই বন্ধ হয়ে গেলো দুপুর নাগাদ।
দোকান গোটাতে ব্যস্ত এক ফল দোকানের কর্মচারী মিজান বাংলানিউজের প্রশ্নের জবাবে বললেন, “ভাই, মালিক বলেছেন দোকান বন্ধ করে বাসায় যেতে। এখানে আর থাকা যাবে না।”
বিষয়: বিবিধ
১০৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন