রক্তাক্ত ২৮শে অক্টোবর ২০০৬ আওয়ামী হায়নারা যাদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।।
লিখেছেন লিখেছেন বিপ্লবী ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:০৮:১৯ বিকাল
]
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা বাহিনীর তা-ব ছিল পাশবিক। অন্ধকার যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে পাষ- আর বর্বর মানুষের কর্মকা-। প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর নর উল্লাস! কী বীভৎস!! মানুষ কী এমন কাজ করতে পারে? শুধু ঢাকা নয় সারা দেশে চলেছে এই পাশবিকতা। লগি বৈঠা বাহিনীর নারকীয় তা-বে চিরতরে হারিয়ে গেছে অনেক তাজা প্রাণ। এ রকম ৭ জনের হারিয়ে যাওয়ার সেই কথাই মনে করিয়ে দেয়ার জন্য এই প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন সামছুল আরেফীন।
সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম:
সদা হাস্যোজ্জ্বল শহীদ সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম ২ ভাই ৩ বোনের মধ্যে ছিল ৩য়। তার পিতা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ সাবেক সরকারি কর্মকর্তা। মাতা শামসুন্নাহার রুবি। ভয়াল আটাশের সকালে শহীদ মাসুম ও শহীদ শিপন একসাথে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু তারা আর জীবিত ফিরে আসেনি, এসেছে লাশ হয়ে। তারা বাসা থেকে বের হয়ে সরাসরি চলে আসে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে। সেখানেই লগি বৈঠা বাহিনীর ইটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম।
ভয়াল আটাশের সকালে শহীদ মাসুম ও শহীদ শিপন একসাথে বাড়ি থেকে বের হয়। কেউ কি জানতো তাদের এই বের হওয়াই শেষ বের হওয়া। তারা বাসা থেকে বের হয়ে সরাসরি চলে আসে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে। ইতিমধ্যে ১৪ দলের লগি বৈঠা বাহিনী তাদের তা-ব শুরু করে দেয় জামায়াতে ইসলামীর সভা মঞ্চ দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। কিন্তু মানব ঢাল অতিক্রম করে কিছুতেই এগুতে পারছিল না তারা। বৃষ্টির মতো ইট আর বোমার মুখে সবার সামনে ছিলেন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম। অসীম সাহসিকতা আর ঈমানী দৃঢ়তায় অটল থাকেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই একের পর এক ইট এসে পড়তে থাকে তার উপর। বড় একটি ইট এসে পড়ে তার মাথায়। সাথে সাথে সংজ্ঞা হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। তার পাশেই ছিলেন তার বড় ভাই শামসুল আলম মাহবুব। কী এ মর্মার্ন্তিক দৃশ্য!
৫ দিন সংজ্ঞাহীন থাকার পর ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর ভোর ৪টায় মহান আল্লাহর শাশ্বত আহ্বানে সাড়া দিয়ে শাহাদাতবরণ করেন সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম। শহীদ মাসুমের লাশ যারা দেখেছেন তারা আর ঠিক থাকতে পারেননি। জীবন্ত মাসুমের চেহারা আর মৃত মাসুমের চেহারার মাঝে তফাত ছিল অনেক। তার সুন্দর, নিষ্পাপ চেহারাটি যেন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছিল। শহীদ মাসুমকে কেউ কোনদিন রাগ কিংবা ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখেনি।
গোলাম কিবরিয়া শিপন
শহীদ গোলাম কিবরিয়া শিপন সদালাপি বিনয়ী ছাত্র হিসেবে এলাকায় সমধিক পরিচিত ছিলেন। শিপন ছিলেন কুরআনে হাফেজ, দাখিল পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন, পাশাপাশি ওঊখঞঝ পরীক্ষা দিয়ে ৫.৫ স্কোর করেছিলেন উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে। কিন্তু লগি বৈঠাধারী হায়েনারা তার সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। সে স্বপ্ন আর কোনদিনই পূরণ হবে না।
শহীদ হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপন ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বড় ভাই ডাক্তার। ছোট ভাই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তার একমাত্র বোন তাকিয়া। শিপন ঢাকা কলেজে বিএসসি ফিজিওতে অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে যাওয়ার জন্য সে ওঊখঞঝ-ও সম্পন্ন করেছিলেন। তার স্কোর হয়েছিল ৫ দশমিক ৫। তার পিতা তাজুল ইসলাম চাকরিজীবী। মা মাহফুজা খাতুন গৃহিণী। তার মা জানান, শিপন ২৭ অক্টোবর রাতে বাইরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেয়া হয়নি। তাই পরদিন সকালে শহীদ সাইফুল্লাহ মোহাম্মদ মাসুম (যিনি একই ঘটনায় শাহাদাতবরণ করেন) এসে ডাক দিলে সে আর বিলম্ব না করে বলে, আম্মা আমাকে রাতে যেতে দেন নাই কিন্তু আজ আর আমাকে নিষেধ করতে পারবেন না। এরপর সে হালকা একটু সেমাই খেয়ে ঘর হতে বের হয়ে যান। চলে আসেন পল্টন এলাকায়।
শহীদ গোলাম কিবরিয়া শিপন ১৯৮০ সালের ১৪ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার পূর্ব বাসাবোতে তাদের বাসা। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলার মাথাভাঙ্গা গ্রামে। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী এবং সবুজবাগ থানার ২৭ নং ওয়ার্ডের বায়তুলমাল সম্পাদক ছিলেন।
জসিম উদ্দিন-১:
২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা বাহিনীর নির্মম শিকার লালবাগের শহীদ জসিম উদ্দিন। সেদিন লগি-বৈঠাধারী সন্ত্রাসীরা তাকে শুধু সাপের মতো পিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, লাশের ওপর উঠে পৈশাচিক নৃত্য উল্লাস করেছে, করেছে আনন্দ উল্লাস। কী অপরাধ ছিল জসিমের? কেন তাকে মরতে হলো? এ প্রশ্নের জবাব আজো খুঁজে পায়নি তার বাবা-মা।
২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা বাহিনীর তা-বে যারা প্রাণ হারান তাদের মধ্যে জসিম উদ্দিন শাহাদাতবরণ করেন নির্মমভাবে। বিভিন্ন ভিডিওফুটেজ থেকে দেখা যায়, লগি-বৈঠা বাহিনী জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দিনকে দীর্ঘক্ষণ ধরে পিটায়। মাঝে-মাঝে সে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করে। আবার টেনে ধরা হয়। পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তার শরীরের জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়। লগি-বৈঠা দিয়ে তাকে পিটানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশের ওপর উঠে নৃত্য করতে থাকে নরপিশাচরা। এ দৃশ্য স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বদৌলতে প্রচারিত হওয়ার পর হতবাক হয়ে যায় বিশ্বের মানুষ। সভ্যতার এ যুগে মানুষ মানুষকে এভাবে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করতে পারে? তারপর লাশের ওপর উঠে নৃত্য উল্লাস? এরা কী মানুষ? শহীদ জসিম উদ্দীনের বোন আয়েশার প্রশ্ন, এভাবে মানুষ কী মানুষকে পিটিয়ে মারতে পারে? যেভাবে আমার ভাইকে মেরেছে। আল্লাহ যেন তাদের বিচার করেন।
শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ও ৬৬ নং ওয়ার্ডের মিটফোর্ড ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। লালবাগের মিটফোর্ড রোডে তাদের বাসা।
জসিম উদ্দিন-২:
লগি বৈঠার তা-বের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন জসিম উদ্দিন। শহীদ জসিম উদ্দিন ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। বড় ভাই ১৯৯৯ সাল থেকে আমেরিকা অবস্থান করছেন। অপর দুই ভাইও আয়ারল্যান্ডে অবস্থানরত। শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৯৬ সালে সিঙ্গাপুর যান। সেখানে তিনি ২ বছর অবস্থান করেন। ২০০১ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০২ সালে সৌদি আরব ও ২০০৫ সালে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। পিতার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ২০০৬ সালের মার্চে তিনি দেশে আসেন। ১২ নবেম্বর পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। লগিবৈঠা বাহিনীর বুলেটের আঘাতে লাশ হতে হলো শহীদ জসিম উদ্দিনকে।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠেন। ১২টার দিকে স্ত্রী নারগিস ও শিশুকন্যা নাওফিসহ একত্রে বসে নাস্তা করেন। তারপর শিশুকন্যা নাওফির সাথে মোবাইল নিয়ে লুকোচুরিও খেলেছেন। এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ফোন আসে। পরিচিত এক রোগীকে দেখতে বের হন তিনি। বিকেল ৪টায় স্ত্রী নারগিসের সাথে মোবাইলে কথাবার্তা হয়। এর কিছুক্ষণ পর প্রচার মাধ্যমে জসিম নামে একজনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শিউরে ওঠেন নারগিস। পরে তিনি নিশ্চিত হন এ জসিম অন্য মানুষ। তারপরও মন মানে না। নারগিস মিস কল দিলেন তার প্রাণের মানুষটিকে। সাথে সাথেই জসিম উদ্দিন কলব্যাক করলেন। জানালেন, “রাস্তায় কোন যানবাহন নেই তাই হেঁটে হেঁটেই আসছি। চারদিকে ভীষণ গোলযোগ। চিন্তা করো না। আমি ৫টার মধ্যে বাসায় পৌঁছতে পারবো।” কে জানে এটাই জসিমের শেষ কথা স্ত্রী নারগিসের সাথে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত নারগিস অপেক্ষা করেন তার প্রিয় মানুষটির জন্য।
শহীদ জসিম উদ্দিন ১৯৭২ সালে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সুদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ¯œাতক সম্পন্ন করেন। ২০০৪ সালে ২৩ জুলাই চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার মনিপুর গ্রামের নারগিস আক্তারের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০০৫ সালের ১৫ মে তিনি কন্যা সস্তানের জনক হন।
মুজাহিদুল ইসলাম:
শহীদ মুজাহিদের পুরো নাম মুজাহিদুল ইসলাম ফাহিম। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন এলাকায় লগি বৈঠা বাহিনী একের পর এক পিটিয়ে হত্যা করে তাকে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা মুজাহিদকে লগি বৈঠা দিয়ে আঘাত করতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ রাজপথে তার লাশ পড়ে ছিল। ২ ভাই ১ বোনের মধ্যে মুজাহিদ ছিল সবার বড়। মুজাহিদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ (অনার্স) ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিল। তার ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম রাফি একমাত্র বোন মেহজাবিন।
১৯৮৫ সালের ২৬ নবেম্বর মুজাহিদের জন্ম। সে দিন ছিল ১২ই রবিউল আউয়াল। ঠিক সুবহে সাদিকের সময় মুজাহিদের জন্ম হয়। এ কারণেই ওর নাম রাখা হয় মুজাহিদ, জানালেন মুজাহিদের নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ।
হাবিবুর রহমান:
আটাশ অক্টোবরে লগি বৈঠা বাহিনীর পাশবিকতার শিকার শহীদ হাবিবুর রহমান। তারা তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। লাশ নিয়ে সেই পুরনো খেলাও খেলেছে তাকে নিয়ে। প্রথমে তার লাশ গুম করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে নকল বাবাও সাজিয়ে এনেছিল। ৪ বছর হতে চললো, কিন্তু এ হত্যাকা-ের বিচার হওয়া তো দূরের থাক, পুরো মামলাটিই প্রত্যাহার করে নেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন হাবিবুর রহমানের বিধবা স্ত্রী আছিয়া বেগম। তার একটাই বক্তব্য প্রকাশ্য দিবালোকে যারা আমার স্বামীকে হত্যা করলো, আল্লাহ তাদের ছাড়বে না। ১ ছেলে আর ১ মেয়ে নিয়ে কেঁদে কেটে বুক ভাসান তিনি।
২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা বাহিনী পৈশাচিক কায়দায় তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশ গুম করে ফেলতে চেয়েছিল। হাসপাতালে নকল বাবা-মা সাজিয়ে লাশ ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাতে সফল না হয়ে পরবর্তীতে নিজেদের কর্মী দাবি করে পোস্টারও ছেপেছিল। লাশ নিয়ে জঘন্য রাজনীতি এর চেয়ে জ্বলন্ত উদাহরণ আর কী হতে পারে!
মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার নিবিড় পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ হাবিবুর রহমান মৃধা। পরবর্তীতে জীবিকার সন্ধানে চলে আসেন ঢাকায়। এসবের মাঝেও বেশি সময় ব্যস্ত থাকতেন মানুষকে কুরআন ও হাদীসের কথা বলার জন্য। মাত্র ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া হাবিবুর রহমান আয়ত্ত করেছিলেন কুরআন হাদীসের অনেক বিষয়। যার প্রমাণ পাওয়া যায় তার নিকটাত্মীয় ও এলাকার লোকদের সাথে কথা বলে। তারা জানান, হাবিবুর রহমান আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদের নিকট যখনই যেতেন তাদের সালামের দাওয়াত দিতেন। কুরআন হাদীস নিয়ে আলোচনা করতেন।
২৮ অক্টোবর তাকে লগি বৈঠা বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। প্রথমে তারা হাবিবুর রহমানকে গুলী করে। তারপর লগিবৈঠা দিয়ে উল্লাসের সাথে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর তার লাশ দীর্ঘক্ষণ রাস্তার উপরে পড়ে থাকে। পরে তারা লাশটি গুম করার উদ্দেশ্যে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ উদ্ধার করে লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও চলে লাশ ছিনিয়ে নেয়ার নানা চেষ্টা। তার নাম মনির হোসেন এবং দলীয় কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগ।
স্বামীকে হারিয়ে ১ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছে আছিয়া বেগম। কান্নাই তার এখন একমাত্র সঙ্গি। হাবিবুর রহমানের বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। তার পিতা মৃত আবদুল মুকিম মৃধা। মাতা সাহেরা বেগম। তার গ্রামের বাড়ী মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলায় মৃধা কান্দি গ্রামে।
আবদুল্লাহ আল ফয়সাল:
২৮ অক্টোবরে লগি বৈঠার তা-বে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া নারায়ণগঞ্জের শহীদ আবদুল্লাহ আল ফয়সাল। ফয়সালের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পিচঢালা পথ। ৫ বছর পার হলেও তার হত্যাকারীদের বিচার তো হয়ই নি, উল্টো বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক মামলা বলে মামলাটিই প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে ছাত্রশিবিরের মিছিলে হামলা চালায় লগি বৈঠা বাহিনী। উল্লাসের সাথে লগি বৈঠা সন্ত্রাসীরা আগাত করতে থাকে নেতাকর্মীদের উপর। এ সময় শহীদ আবদুল্লাহ আল ফয়সালের বড় ভাই ফাহাদ বিন আহসানকে ঘিরে ফেলে লগি বৈঠা সন্ত্রাসীরা। কাছেই ছিল ফয়সাল। ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে যান তিনি। লগি বৈঠার আঘাত এসে পড়তে থাকে তার উপর। এক পর্যায় মাথায় আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটয়ে পড়েন তিনি। দুই ভাই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। পরদিন রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরপাড়ে পাড়ি জমান ফয়সাল। এ হত্যাকা-ের পর শিবির নেতা আবু বকর বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৬০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান দারোগা মোহাম্মদ আলী। পুলিশ মামলাটি তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করতে থাকে। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তো পুরো মামলাটিই প্রত্যাহার করে নেয়।
শহীদ ফয়সালের বাসা নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার সানারপাড়ের পাইনাদী মোস্তফানগর। তার পিতা মরহুম মাওলানা আহসানুল হাই। মা হাসনা বানু গৃহিণী। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের অধ্যয়ন করছিলেন। পাশাপাশি স্থানীয় হাজী শামসুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে খ-কালীন শিক্ষক ছিলেন
এখানে
বিষয়: বিবিধ
৩৪০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন