আওয়ামীলীগের এম পি,মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী সহ হাজার নেতা কর্মীরা জনতার প্রতিরোধের অপেক্ষায়!!!! জনতার অপেক্ষা শুধু কয়েকটি মাস
লিখেছেন লিখেছেন বিপ্লবী ২৯ মে, ২০১৩, ০২:১৬:৫১ দুপুর
বরিশালের উজিরপুরে জনতার হাতে অবরুদ্ধ বরিশাল – ২ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি মনিরুল ইসলাম মনি ও তার পুত্র রিয়াজ উদ্দিন সুমন। অত:পর জনতার তোপের মুখ থেকে রক্ষা পেতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকাশ্যে ৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। জনতার ধাওয়া খেয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা ইউএনও অফিসে অবরুদ্ধ থেকে র্যাব ও দাঙ্গা পুলিশের প্রহরায় মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে উজিরপুর ত্যাগ করেন। অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় হাজারও মানুষ এমপি মনিকে থুথু, জুতা ও ঝাড়ু– নিক্ষেপ করে ধিক্কার জানায়। এক পর্যায়ে এমপি মনিকে রক্ষার জন্য পুলিশ জনতার ওপর লাঠি চার্জ করে। পুলিশের সাথে জনতার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সাংবাদিক পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছে।
জানা গেছে মন্ত্রনালয় থেকে উজিরপুরে অসহায় মানুষদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ হওয়া প্রায় ৫শত মে.টন টি,আর ও কাবিখার প্রোজেক্ট এমপি মনি নিজে ত্রান মন্ত্রীর সাথে দেখা করে বাতিল করা ও কৃষি সম্প্রাসারণ মেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সম্পাদককে দাওয়াত না করার ঘটনার জের ধরে এহেন অপ্রতিকর ঘটনার জন্ম নেয়। মঙ্গলবার দুপুরে উজিরপুর উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল ও এমপি মনিরুল ইসলাম মনির মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে হলরুম থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান বের হলে মনির পুত্র রিয়াজুল ইসলাম সুমন উপজেলা চেয়ারম্যান মহাজোটের অন্য শারীক জাসদ নেতা বাদলকে আক্রমনের জন্য উত্তেজিত হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন চেয়ারম্যান বাদলকে নিরাপদে নিয়ে যায় । এ ঘটনা উপজেলা সদরে ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তের মধ্যে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে এমপি মনি ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে। এবং বরিশাল – ২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) এলাকার এমপি মনিরুল ইসলাম মনিকে প্রায় অবরুদ্ধ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জুতা ও ঝাড়– মিছিল করেছে ক্ষুব্ধ বাদল সমর্থকরা। উজিরপুর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে হিমশিমে পড়ে। বরিশাল পুলিশ সুপার এসানুল হক উজিরপুরে এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে এম.পি মনি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে ঘটনাটি নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তার উপস্থিতিতে এমপি মনি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাদলের সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পুলিশ সুপার এহসানুল হক উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করে উজিরপুর ত্যাগ করেন। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার উজিরপুর ত্যাগ করার পর পরই এমপি মনির কিছু ক্যাডার বাহিনী উপস্থিত হয়ে উস্কানিমূলক শ্লোগান শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এতে উভয় সমর্থকদের মধে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কয়েক দফা সংঘর্ষে উজিরপুর থানার এ,এস আই স্বপন চন্দ্র দে, কনেষ্টবল দেলোয়ার,সাংবাদিক আঃ রহিম সরদার,শাকিল মাহামুদ বাচ্চু, নুরুল ইসলাম, চেয়ারম্যান সমর্থক আঃ সালাম,মোঃ শাহিন,পুলিন,কালাম ফরাজী, মাহাবুব হোসেন, এমপি সমর্থক বাদল হোসেন, এনায়েত কবির,মোঃ মিজানুর রহমান সহ উভয় গ্রুপের ৩০ জন আহত হয়। গুরুতর আহত ৮ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেÍক্সে ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান বাদলের সাথে অপ্রতিকর ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এমপির মনির বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে উপজেলা চত্বরে এসে ঘেরাও করে রাখে। ওই সময় তারা এমপি মনির পদত্যাগসহ তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। তখন মনি ও তার পুত্র সুমন প্রায় ২০ গজ ভিতরে ইউএনও অফিসে অবস্থান করছিল। বাদলের ওপর ন্যাক্কার জনক হামলার ঘটনার বিচারের দাবীতে ক্ষুব্ধ জনতা এক পথসভা করে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, শংকর মজুমদার, রিয়াজ মিয়া, কাউন্সিলর সোহেল হাওলাদার, মনিরুজ্জামান লিখন প্রমূখ। বক্তরা উজিরপুরের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে বাধা দেয়া এমপি মনি ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল জানিয়েছেন, উজিরপুরের অসহায় মানুষদের জন্য কিছুদিন আগে মন্ত্রনালয় থেকে টি.আর ও কাবিখার মালামাল বিশেষভাবে বরাদ্দ আনা হয়। এ ঘটনা এমপি মনি’র পছন্দ না হওয়ায় তিনি মন্ত্রীর সাথে দেখা করে তা বাতিল করে দেয়। বিষয়টি জানার পর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, সম্পাদক ও ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রীরসাথে দেখা করে বাতিল হওয়া প্রোজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে সেখান থেকে জানানো হয় এমপি সাহেব ওই বরাদ্দ বাতিল করে। এছাড়া এমপি মনি ও তার পুত্র বিভিন্ন সময় জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের কমিশন নেয়ার চেষ্টা চালায় এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় পিতা পুত্র ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা আ’লীগ ও জন প্রতিনিধিদের ওপর নানাভাবে হয়রানি করার হুমকী দেয়।
প্রসঙ্গত : এর আগে এমপি মনি ও তার পুত্রের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে উপজেলা আ’লীগের শীর্ষ নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন করেছিল।
বিষয়: বিবিধ
১৭২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন