যুবলীগ সন্ত্রাসীরা দক্ষিণ গেটের ফুটপাতে বন্ধ থাকা ইসলামী বই ও কোরআন শরীফের দোকানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
লিখেছেন লিখেছেন বিপ্লবী ০৭ মে, ২০১৩, ০৮:০৬:১১ রাত
স্বার্থবাদী মিডিয়া যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মরিয়া
মার্কিন পাদ্রী টেরী জোনস ২০১০ সালে পবিত্র কুরআনে আগুন দেয়ার ফলে বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে। নানা দেশের মতো প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও। আর বাংলাদেশে সেইসব প্রতিবাদ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের সাথে যুক্ত হাক্কানী আলেম ও তাদের সমর্থকরা।
অথচ মাত্র তিন বছর পর এ বাংলাদেশেই টেরী জোনসের সেই একই নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। কিন্তু এবার পটভূমি ভিন্ন। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আজ্ঞাবহ এদেশি স্বার্থবাদী কিছু মিডিয়া এ ঘটনার নায়ক যুবলীগ সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মরিয়া। শুধু তাই নয়, তারা এর দায় চাপাতে চাচ্ছে খোদ আলেম ওলামাদের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের উপর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার বাদ আসর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট দিয়ে বেরিয়ে আসছিল মুসল্লিরা। এসময় পূর্ব থেকেই সেখানে অবস্থান নেয়া যুবলীগ সন্ত্রাসীরা মুসল্লিদের মধ্যে যাদেরকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী কিংবা আলেম মনে হয়েছে, তাদেরকেই লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধরক পেটাতে থাকে। পুলিশ এসময় সন্ত্রাসীদের পাশে নীরব দাঁড়িয়ে থাকে। জীবন বাঁচাতে মরিয়া মুসল্লিরা এ অবস্থায় আর দক্ষিণ গেট মারাননি।
ঠিক তখনই ঘটে চরম অঘটন। যুবলীগ সন্ত্রাসীরা দক্ষিণ গেটের ফুটপাতে বন্ধ থাকা ইসলামী বই ও কোরআন শরীফের দোকানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া তারা ১৫-২০টি জুতার দোকানেও তারা একইভাবে আগুন দেয়। সংঘর্ষ পরিস্থিতির কারণে রোববার বন্ধ ছিলো ফুটপাতের এসব দোকান। মোড়ানো ছিলো পলিথিন দিয়ে। আগুনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। প্যান্ট-গেঞ্জির দোকান ছাড়াও এসময় পুড়ে যায় কোরআন শরীফসহ বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তকের দোকান।
এসময় সেখানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং সেই দোকানগুলোর দু’একজন মালিকও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অস্ত্র হাতে দাড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসী এবং পুলিশের ভয়ে কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি।
এদিকে গতকাল বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বলা হয় যে, বায়তুল মোকাররম মসজিদে অবস্থিত বই এর দোকানে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে লুটপাট এবং পবিত্র কোরান শরীফসহ ধর্মীয় গ্রন্থসমূহে অগ্নিসংযোগ করা হয়। যা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরে দেবাশীষের ছবিসহ প্রচার করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাস্তব প্রমাণ সত্ত্বেও উক্ত ঘটনা হেফাজতে ইসলাম করেছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আর এরপরই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আজ্ঞাবহ এদেশি স্বার্থবাদী কিছু মিডিয়া এ ঘটনার নায়ক যুবলীগ সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মাঠে নেমে পড়ে। ইসলামের সাথে যুক্ত কোন বিষয়ে যারা সর্বদাই নিরাসক্ত এখন ঢালাওভাবে হেফাজতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নাস্তিকদের রক্ষা করার চেষ্টায় লিপ্ত সেই মিডিয়াগুলো। কিন্তু তারা এসব সংবাদে একটি প্রমাণও উপস্থাপন করছে না। পত্রিকা এবং টেলিভিশনে এ ঘটনার ফুটেজ দেখে অপরাধীদের বের করারও কোন চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের। অথচ বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে পল্টন এলাকায় জিন্সের প্যান্ট ও গেঞ্জী পরিহিত এবং হেলমেট মাথায় দেয়া লম্বা শারিরীক গঠনের কয়েক যুবককে হাতে পেট্রোলের বোতল নিয়ে বইয়ের দোকানগুলোতে আগুন দেয়ার ফুটেজ প্রচার করা হয়েছে।
অপরদিকে সরকারও হেফাজতের ঘাড়ে এ ঘটনার দায় চাপানোর জন্য পুরো মতিঝিল, পল্টন এবং বিজয়নগরের পোড়া সামগ্রী এবং আবর্জনা পরিষ্কার করে ফেললেও গতকাল বিকেল পর্যন্ত আগুনে পোড়া কুরআনের অবশিষ্টাংশ রেখে দেয়। আবার বিভিন্ন টিভি মিডিয়াকে আমন্ত্রণ করে এনে সংবাদ তৈরি করতে থাকে। সেখানে এমনসব লোকের মতামত নিতে থাকে যারা ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল না। এর মাধ্যমে ঐসব মিডিয়া আলেমদের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
২৬৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন