দেশের প্রতিটি জায়গায় জনতার প্রতিরোধের মুখে আওয়ামীলীগ!!!!
লিখেছেন লিখেছেন বিপ্লবী ৩০ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৩:৩১ রাত
'ছাত্রলীগ নেতা বাবু জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে একটি আপস বৈঠক থেকে ডেকে নিয়ে আমাকে বেদম প্রহার করে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। পরে পুলিশ চুরি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। দুইদিন পরে জামিনে মুক্তি পাই। অপরদিকে ক্ষমতার দাপটে বাবু এতটাই বেড়েছিল তা সহ্য করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। আর এসব কারণে বাবুর প্রতিপক্ষের সহায়তা নিয়েই তাকে খুন করি।' ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছেন গোলাম মাহদিন টিটু। গত ২১ এপ্রিল রাজধানীর পূর্ব কাজীপাড়া ইটখোলা বাজারের কাছে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ৯৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি একে ফজলুল হক পাটোয়ারী ওরফে বাবু। এ ঘটনায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ( ডিবি) হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে টিটুসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত অপর ৫ জন হচ্ছেন- শাহরিয়ার কবির ওরফে সায়মন, কামরুজ্জামান ওরফে আজাদ, গোলাম কাদের রুম্মান, মিজানুর রহমান ওরফে স্বাধীন ও সোহরাব হোসেন আকন্দ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত তিনটি বিদেশি পিস্তল, ২৩ রাউন্ড গুলি ও দুইটি মোটর সাইকেল। গ্রেফতারকৃত ৬ জনকে গতকাল মঙ্গলবার ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। ডিবি এডিসি (পশ্চিম) মশিউর রহমান ও এসি মোহাম্মদ তৌহিদুর ইসলাম রবিবার ও সোমবার ঢাকা ও কুষ্টিয়া থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপারে গতকাল ডিএমপি মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ব্রিফিংয়ে এডিসি মশিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জানায়, মূলত তিনটি কারণে বাবুকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত গোলাম মাহাদিন টিটু জানায়, তাদের সাথে জায়গা-জমি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বাবু ও তার মামা লুত্ফর রহমানের দ্বন্দ্ব ছিল। ১৬৯, পূর্ব কাজী পাড়ায় ৫ শতাংশ জমির উপর টিটুদের একটি এক তলা টিনসেড বাড়ি ছিল। ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে উক্ত এলাকার পলাশ (৩২), আলমগীর (৩২), রাজুসহ (৩০) আরও অজ্ঞাত ২ জন অস্ত্রধারী তাদের বাসায় ঢুকে দিন-দুপুরে তার বাবা মো. আব্দুল মজিদের দুই হাঁটুতে গুলি করে। এই ঘটনায় টিটুর পরিবার বাবু ও তার মামা কামাল হোসেনকে সন্দেহ করে। পরবর্তী সময়ে বাবুর মামা মো. কামাল হোসেন টিটুদের বাড়ির জমি ক্রয়ের প্রস্তাব দেয়। এ সময় তারা বুঝতে পারেন নাম মাত্র মূল্যে তাদের ওই বাড়ির জমি ক্রয় করার জন্য ভয় ভীতি প্রদর্শন করতে বাবুর পিতার দুই পায়ে গুলি করা হয়েছে। পরে ভয় পেয়ে তার পিতা কাউকে না জানিয়ে মাত্র সাড়ে বার লাখ টাকায় ওই জমি বাবুর মামা কামালের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হন। এ সময় ওই জমির প্রকৃত বাজার মূল্য ছিলো কমপক্ষে দুই কোটি টাকা। জমি বিক্রি করার আগের দিন পর্যন্ত অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাদের বাসায় ইট, ককটেল ও বোমা হর-হামেশা নিক্ষেপ করত। এতে বাবু তার মামা কামালের প্রতি ভীষণভাবে ক্ষিপ্ত ছিল। উক্ত সম্পত্তি ফিরিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয়ভাবে অনেক দেন-দরবার করেছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই বাবুর কারণেই এ বিষয়ে কোন আপস-রফা হয়নি। মাঝে সে জীবিকার জন্য দুবাই গিয়ে অনুমান দুই বছর সেখানে থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি বাবুর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন এবং বাড়ি সংক্রান্ত চলমান বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা চালান। কিন্তু এ ব্যাপারে বাবু তাকে সহায়তা না করায় বাবুর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন বলে জানান।
ছাত্রলীগ নেতা ফজলুল হক বাবু ও তার সহযোগীরা মিলে গোলাম মাহাদিন টিটুকে মারধর করে থানায় সোপর্দ করে এবং তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করে। এতে টিটু বাবুর উপর প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে টিটু তার সহযোগীদের নিয়ে বাবুকে হত্যা করে।
মিরপুর-১০, ১৩, ১৪, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া এলাকায় বিভিন্ন গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্বাসের গ্রুপ ও শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশের গ্রুপের দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ নেতা বাবু খুন হয়।
বিস্তারিত
বিষয়: বিবিধ
১৩১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন