বিএনপির নতুন কমিটিতে নাকি পরিবারতন্ত্রকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে!!!
লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ০৭ আগস্ট, ২০১৬, ১১:০৫:১২ সকাল
বিএনপির নতুন কমিটি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে পত্রিকা গুলোতে যে খবরা খবর এসেছে তার একটি নিম্নরূপঃ
বিএনপির কমিটিতে পরিবারতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলেও তৃণমূল পর্যায় থেকে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অভিযোগ কমিটি গঠনের সময় পদের ক্ষেত্রে যেভাবে পারিবারিক নেতৃত্বকে রাজনীতিতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে তার ফল খুব একটা শুভ হবে না। এমনকি কমিটিতে বাবা ও মেয়ে দুই জনকেই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা হিসেবে রাখা হয়েছে।
এই প্রসংগে আমি সামান্য বাতচিত করতে চাই।
১. একই পরিবারে বাবা বা মায়ের বর্তমানে যদি ছেলে অথবা মেয়ে পরিণত বয়সে পৌছে যায়, তাহেল কেবল মাত্র তারা অমুকের ছেলে বা মেয়ে হওয়ার কারণে কি রাষ্ট্র বা দলের সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে? বিশ্বের কোন দলের বা রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্রে কোথাও কি এ ধারণা প্রদান করা হয়েছে যে, রাষ্ট্র প্রধান-সরকার প্রধান-দলীয় প্রধান হলে তার সন্তানেরা রাষ্ট্রের বা সরকারের অথবা দলের যে কোন পদের জন্য অযোগ্য হবেন। যদি তা না হয়, তাহলে কেন কেবলমাত্র বাবা বিএনপির বড় পদে থাকার কারণে তার ছেলে বা মেয়ে বিএনপির কোন বড় পদ পাবেনা।
২. বিএনপি বা আওয়ালীগ অথবা জাতীয় পাটি-এগুলো সব রাজতান্ত্রিক দল। এই দল গুলোতে গনতন্ত্রের ছিটে ফুটোও নাই। তার কারণঃ
ক. কোন যোগ্যতা বলে তারেক রাহমান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য? মরহুম প্রেসিডিন্ট জিয়াউর রাহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে হওয়া ছাড়া আর কি যোগ্যতা আছে তারেক রহমানের বিএনপির মতো বড় একটা দলের এতো বড় পদে আসীন হওয়ার জন্য? তার চেয়ে কত বড় মাপের মানুষ বিএনপিতে আছেন-যা শিক্ষায়, বয়সে, যোগ্যতায় তারেক রহমান থেকে অতুলনীয় যোগ্যতার অধিকারী। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি যে, তারা দলে কোন সময়ই তারেক রহমানের মতো মূল্যায়িত হবেন না। বরং তারেক রহমানদের পদলেহন বা গোলামী করেই তাদের দলে থাকতে হবে। এটাকেই বাংলা ভাষায় রাজতন্ত্র বলে।
খ. বিএনপিতে যদি গনতন্ত্র থাকতো, তাহলে কাউন্সিলের ৪মাস পরে কমিটি হবে কেন? কমিটিতো কাউন্সিলেই হতে পারতো। কাউন্সিল মানে কি? সকলে বসে বিরানী খাওয়া? যদি নেত্রীকে সব বিষয়ে ক্ষমতা দেয়া হয়ে যায়, তাহলে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে কাউন্সিল করার কি দরকার? এই ধরণের ক্ষমতা কোক্ষিগত রাখার নামই রাজতন্ত্র নয় কি???
গ. উপরোক্ত ৩টি দলের ইতিহাসে তাদের মূল দল বা অংগ সংগঠনের নির্বাচন কি যথা সময়ে হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার সময় ৫ বছরের মেয়াদ, অন্তর্বতীকালীন সরকারের ৩মাস মেয়াদ ইত্যাদি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে, আর দলের ব্যাপারে আনলিমিটেড সময়। এটার নাম রাজতন্ত্র নয় কি?
৩. বিএনপিতে কি জামায়াতে আছর পড়েছে যে, বিএনপি নেতাদের সন্তানেরা বিএনপি নেতা হতে পারবেনা? এটাতো জামায়াতের রাজনীতি যে, ওখানে তাদের নেতাদের ছেলেরা দলে কোন পদে আসীন নেই।
যেমনঃ
গোলাম আযমের ছেলে আমান। ব্যক্তিগত জীবনে খুবই দক্ষ যোগ্য প্রাক্তণ সেনা কর্মকর্তা। অনায়াসে সে জামায়াতে একটা অবস্থান নিতে পারে। কিন্তু সে জামায়াতের কি?
মতিউর রাহমান নিজামীর ছেলে নজিব। সে একজন ব্যারিস্টার সাথে বড় মাওলানা। সে যেখাবে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাত, সেতো জামায়াতের একজন বড় নেতা হতে পারে। কিন্তু সে জামায়াতে কি?
দেলাওয়ার হোসাঈন সাঈদীর ছেলে শামীম। সে বাবার পরিচয়ে ইদানিং বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে যায় বটে। কিন্তু সে জামায়াতের কি?
উত্তর হবে কিছুই না।
জামায়াতের এই নিয়ম কি কেবলমাত্র জোটের রাজনীতি করার জন্য বিএনপিকে মানতে হবে?
যদি তা-ই না হয়, তাহলে বিএনপির নতুন কমিটিতে বাপ ছেলে বা বাপ মেয়ে বা স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকাতে আপত্তি কোথায়???????????????
বিষয়: বিবিধ
১৬২০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন