জুতা বাবা আবু রেজার কোটি টাকার কাতার মিশন
লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ২৩ মার্চ, ২০১৬, ০৭:৪২:৫১ সন্ধ্যা
কাতারের সাংবাদিক আনোয়ার হোসাঈন মামুন তার ফেইসবুক ওয়ালে একটি খবর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ছবি সহ উপস্থাপন করেছেন। আর তা হলোঃ কাতারের মহামন্য আমীর শাইখ তামীম বিন হামাদ আল থানী বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণে অর্থ প্রদান করবেন। আর মসজিদটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ মসজিদ। আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য জনাব আবু রেজা নদভী কাতারের ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক সমাবেশে এই তথ্য পেশ করেছেন।
বাংলাদেশে একটি বড় মসজিদ হবে, তাও আবার দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ। এতে যে কোন মসলমান খুশী হবার কথা। তাই আমিও খুশী। কিন্তু চূনা খেয়ে যাদের মুখ পুড়ে, তারা যখন দুধের স্বর দেখে তখনও নাকি ভয় পায়। আমার অবস্থাও তেমন। কারণ এই খবরটার সূত্র যখন দেখলাম আমাদের জুতা বাবা আবু রেজা দিয়েছেন, তখন রীতিমতো ভয়ই পেয়ে গেলাম।
খবরটাকে ১০০% সত্য হিসাবে গ্রহণ করে আমি কাতারের মহামান্য আমীর শায়খ তামীম বিন হামাদ আল থানীকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দ্বীনি কাজে সহযোগিতা তার পারিবারিক ঐতিহ্য। সারা বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানরা যেমন তার ও তার পরিবারের মাধ্যমে সহযোগিতা পেয়েছে এবং পাচ্ছে, তা অনাদিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকুন এই কামনা করি। তারা বাবা শাইখ হামাদ বিন খলিফা আল থানী ইতিপূর্বে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিশাল গ্রন্থাগার করে দিয়েছেন।
চলে আসি আমার ভয় পাওয়া প্রসংগে। খবরের সুত্র আমাদের জুতা বাবা। আবু রেজা ভারতে নাদওয়াতুল উলামা থেকে ডিগ্রী নেয়া অত্যন্ত মেধাবী, আরবী ভাষায় ভাগ্মি একজন ব্যক্তিত্ব। কিন্তু আমি তাকে ইচ্ছা করেই জুতা বাবা লকবটা দিলাম। কারণ তার চেয়েও জগন্য ব্যক্তি আলিম নামের কলংক গনজাগরণ মঞ্চের বক্তা ফরিদ উদ্দিন মাসুদের কপারেও এই তিলকটা জুটেনি। কিন্তু আমাদের আবু রেজা মহোদয়ের কপালে সাতকানিয়ার ইসলাম প্রেমিক জনতা জুতা বৃষিট উপহার প্রদান করেছিল। ইসলামের জনপদ বলে পরিচিত সাতকানিয়াতে যখন বারবার ইসলামী সংগঠনের নেতারা বিজয়ী হয়েছেন সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে, সেখানে আমাদের জুতা বাবার আবু রেজা সাহেব ইসলামীদের দূর্দিনে ভোটার বিহিন ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের তরফ থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ভাল আরবী জানেন বলে আওয়ামীলীগে তার রয়েছে ব্যাপক কদর।
আমাদের জুতা বাবার পরিচয় হলো, তিনি একসময় চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আরবী ভাষা ও সাহিত্যে তার পান্ডিত্বের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে তাদের বিদেশ বিভাগে একজন সদস্য হিসাবে গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন সময়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেলিগেশন বিদেশ সফর করে, তখন সেই গ্রুপে তিনিও একজন সদস্য হওয়ার সুযোগ পান। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ পরিচালক জামায়াতী ঘরণার হওয়াতে তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নেতাদের মোসাহেবীতে মত্ত ছিলেন। এই ভাবে চলে বছরের পর বছর। এক সময় তিনি রাস্তা-ঘাট সব চিনে ফেলেন। রাস্তা-ঘাট চিনে ফেলার পর আমাদের জুতা বাবা এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বাদ দিয়ে নিজের আখের গোচানোর চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতো দিনের জমানো ব্যক্তিত্বকে আশ্রয় হিসাবে গ্রহণ করে নেমে পড়েন নিজের পরিকল্পনা নিয়ে। নিজের বাবার নামে গড়ে তুলেন ফয়জুল্লাহ ফাউন্ডেশন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে বিদেশ থেকে কোটি কোটি ডলারের অর্থ সাহায্য গ্রহণ করে তা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন। এমতাবস্তায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি জামায়াত বিরুধীতায়। যোগদান করেন জামায়াতের চিরশত্রু আওয়ামীলীগে। জামায়াতের বিরুধীতা করতে করতে তিনি হয়ে যান এমপি। এখন তিনি আছেন রাজার হালে, সরকারী সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি একজন সরকারী মুল্লা। এমতাবস্থায় তিনি সাতকানিয়াতে যান এক ওয়াজ মাহফিলে এলাকার এমপি হিসাবে। জনগন তাকে জুতা বৃস্টি দিয়ে সাদর অভ্যর্থনা জানায়-যার ভিডিও ক্লিপ ইউটুবিতে বর্তমান রয়েছে।
সেই জুতা বাবা যখন ১৫৫ কোটি টাকার মসজিদ প্রকল্পের ঘোষনা দিলেন, তখন একজন পানখাওয়া মানুষ হিসাবে ভয় এসে গেলো। কেন জানি গন্ধ আসছে।
- আসলে ১৫৫ না তার চেয়ে বেশী?
- টাকাটা কিভাবে যাবে, জুতাবাবার ভাগ এতে কতো?
- জুতা বাবা এবারের কাতার সফরে কত ভাগিয়ে নিল?
বিষয়: রাজনীতি
১৮৫১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন