বিলাসী কাউন্সিল ও বিএনপির অশ্বডিম্ব

লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ২১ মার্চ, ২০১৬, ১১:৪৮:৫০ সকাল



সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষ বিএনপির কাউন্সিল শেষ হয়েই গেল। কাউন্সিলের জন্য হরেক রকম কমিটি গঠন, বারবার মিডিয়াতে প্রস্তুতি সংক্রান্ত আপডেট প্রদান, প্রোগ্রাম স্থলের অনুমতি না মিলা এবং মিলা এবং সবশেষে কাউন্সিল হলে বাংলাদেশে মহাবিপ্লব হয়ে যাবে-এমন ধরণের আস্ফালনের প্রেক্ষাপটে কাউন্সিল কোন ধরণের বিপত্তি ছাড়াই হয়ে গেলো অত্যন্ত জাকজমক ভাবে। কিন্তু এতে করে বাংলাদেশের কি লাভ হয়েছে, বিএনপির কি লাভ হয়েছে?

কাউন্সিল বলতে আমরা বুঝি একটি নতুন কমিটি-যাতে পুরাতনদের কয়েকজন বাদ পড়বেন অথবা দয়িত্ব পরিবর্তন হবে আর নুতন কিছু মুখের সন্ধান মিলবে। কাউন্সিল মানে সারা দেশের সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনা হবে। কাউন্সিল মানে সারা দেশ থেকে আসা নেতারা তাদের ক্ষোভ, ভালবাসা, পর্যালোচনা, পরিকল্পনা, পরামর্শ ইত্যাদি উপস্থাপন করবেন। সবশেষে দলীয় প্রধান ইত্যাদি পর্যালোচনার ভিত্তিতে একটি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। যার আলোকে দল চলবে নতুন অনুপ্রেরণায়, দূর্নিবার গতিতে।

কিন্তু বিএনপির কাউন্সিল হতে জাতি কি পেয়েছে, বিএনপি কি পেয়েছে।

কাউন্সিল হতে যা পাওয়া গেছেঃ

১. খালেদা জিয়া চেয়ারপার্সন ছিলেন, আবার নবায়িত হলেন।

২. তারেক রাহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন এবং আবার নবায়িত হলেন।

৩. সকল পর্যায়ের কমিটি গঠনের জন্য খালেদা জিয়াকে একক ক্ষমতা প্রদান করা হলো, যা প্রদান না করার মতো সাহস দেখানো কেউ বিএনপিতে আছে বলে আমার জানা নেই।

কাউন্সিল হতে যা প্রত্যাশা ছিলঃ

১. মীর্যা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারমুক্ত হবেন। কিন্তু দূঃখ জনক হলেও তিনি তা হননি।

২. একনেতা একপদ ভিত্তিতে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষনা করা হবে।

৩. নতুন পুরাতনদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় স্থায়ী কমিটি ঘোষনা করা হবে।

উপরোক্ত প্রত্যাশা গুলো পুরণ করা হলে, দলীয় জনশক্তির মাঝে প্রাণ ফিরে আসবে। নব উদ্দীপনায় নেতা কর্মীরা ঝাপিয়ে পড়বে ময়দানে। আন্দোলন বেগবান হবে। স্বৈরাচারের পতন হবে।

কিন্তু!

কিন্তু বাস্তবে এই প্রত্যাশা গুলোর একটিও পুরণ হয়নি। উপরের কাজগুলো করার জন্য খালেদা জিয়াকে ব্লেঙ্ক চেক দিয়ে দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া এই কমিটি গুলোকে কখন আলোর মুখ দেখাবেন, তা কেবল আলিমুল গাইব জানেন।

আমার প্রশ্ন হলো,

এই দায়িত্বটা খালেদা জিয়া কেন আগে পালন করলেন না। কেন খালেদা জিয়া দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পুরো তালিকা নিয়ে কাউন্সিলে গেলেন না।

খালেদা জিয়ার মুরিদানেরা বলতে পারেন যে, সময় স্বল্পতার কারণে নেত্রী তা পারেননি।

আমার জিজ্ঞাসা, বিএনপির জন্য এমন কি বাধ্যবাধকতা ছিল যে, এখনই কাউন্সিল করতে হবে?

বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি কাউন্সিল করে একটি অশ্বডিম্ব উপহার দিল জাতিকে এবং দলের জনশক্তিকে। বিএনপি নেত্রীর এই সাংগঠনিক যোগ্যতা নেই যে, তিনি দলের জন্য একটা কমিটি নিজে থেকে দাড় করাবেন। তিনি ভিভিআইপি হিসাবে কেন্টনমেন্টে থাকা লোক, যার তৃণমূলের সাথে কোন যোগাযোগ নাই। যার কারণে তার পক্ষে দলের কমিটি গঠন সম্ভব নয়।

প্রতিবারের অশ্বডিম্ব হতে জাতিকে মুক্তি প্রদানের লক্ষ্যে বিএনপি প্রেমিকদেরকে এগিয়ে আসতে হবে সঠিক পদক্ষেপের প্রত্যাশায়।

বিষয়: রাজনীতি

১৩০৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

363131
২১ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০২:১০
কুয়েত থেকে লিখেছেন : যোগ্যতা যতটুকু গনতান্ত্রীক প্রজ্ঞা অনুযায়ী কাজ যা হওয়ার তাই হয়েছে। সারা বাংলাদেশে তাদের নেতা কর্মীরা ধাঁন চাল সব খেতে না পারলেও খুত্ কুঁরা কিছু একটু খেয়ে কোন রকমে টিকে আছে আম্লীগের সাথে সমজোতার মাধ্যমে। লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
২১ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০২:২১
301006
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বিএনপি এই ভাবে চলতে থাকলে এক সময় হয়তো বিএনপি নামক জিনিসটা খোঁজে পেতে আমাদেরকে ইতিহাসের বই বা জাদুঘরে যেতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলোঃ বিএনপির এই শূন্যস্থান কাদের মাধ্যমে পুরণ করা হবে।?
363226
২২ মার্চ ২০১৬ রাত ০১:১৫
শেখের পোলা লিখেছেন : হাতী পাদবে তাই শহরের জনগন ভয়ে সারা না জানি কত জোরে শব্দ হবে তাতে ২/৫ জন মরতেও পারে৷ কিন্তু হাতী একদিন সত্যই পাদলো, ফুস করে৷ সব জল্পনা কল্পনা নিমেষেই শেষ৷ধন্যবাদ৷
২২ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৯:৫৯
301123
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : শেখ সাবের ফুয়া। আফনে ওলা খুবসুরত খতা খইছইন। আফনারে মুবারকবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File