২০ রাকাআত তারাবীহ-এ পক্ষে যুক্তি দলীলঃ ০৪
লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ৩১ আগস্ট, ২০১৪, ০২:৪০:২৯ দুপুর
শুরুতেই বলে রাখা ভাল যে, নিজের ইলম প্রকাশের উদ্দেশ্যে এই লিখনি নয়। কোন অহেতুক বিতর্কের মুখোমুখী হওয়াও এই লিখনির টার্গেট নয়। এই বিষয়ে ইদানিং আমি কিছু পড়ালেখা করেছি। ধারাবাহিক ভাবে সেগুলো শেয়ার করতে চাই মাত্র। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সাহাবীর যামানার পাশাপাশি মক্কামদীনার তারাবীহ সম্পর্কে শেয়ার করেছিলাম। আজ লিখবো আরো কিছু মতামত নিয়ে। অতএব যারা ভিন্নমত পোষন করে মন্তব্য করবেন, তারা পোষ্টের বিষয়ের ভিতরেই থাকবেন। প্রদত্ত দলীল বা যুক্তির অসারতা উপস্থাপন করবেন। যদি অন্য সময়ের বা দলীলে সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু স্টকে থাকে, তাহলে একটু অপেক্ষা করুন পরবর্তী পোষ্টের জন্য।
ইমাম মালিক রাহ. এর মতে তারাবীহ ২০ রাকাআত-
ইমাম মালিক রাহ. বলেনঃ হাররা যুদ্ধের আগে থেকে আজ অবধি ৩৬ রাকাআত তারাবিহ নামাযের আমল চালু রয়েছে।
ইমাম শা’রানীর মতে তারাবীহ ২০ রাকাআত-
قول أبي حنيفة والشافعي وأحمد أن صلاة التراويح في شهر رمضان عشرون ركعة وإنها في الجماعة أفضل مع قول مالك في إحدى الرواية عنه إنها ست وثلاثون ركعة.
তারাবিহের রাকাত সম্পর্কে ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ রাহ. এর উক্তি হলোঃ রামাদ্বান মাসে তারাবিহের নামায ২০ রাকাত। আর তা জামায়াতের সাথে আদায় করা উত্তম। ইমাম মালিক এর উক্তি হচ্ছে, তারাবিহের নামায ৩৬ রাকাআত। (আল মিযানঃ217)
ইমাম তিরমিযির বিবেচনায় তারাবীহ ২০ রাকাআত-
ক. ইমাম তিরমিযি বলেন, ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম শাফেয়ী রাহ. তারাবিহের নামায বিশ রাকাত বলে মত ব্যক্ত করেন। ইমাম মালেক রা. বলেনঃ তারাবিহের নামায বিতির সহ ৩৯ রাকাআত।
খ. ইমাম তিরিমিযি তার আলোচনায় ৮ রাকাআত সম্পর্কিত কোন উক্তি করেননি।কারণ সে যুগে ৮ রাকাত তারাবিহ ছিলনা এবং ৮ রাকাআতের বিষয়টা ছিল কল্পনাতীত বস্তু।
ইমাম শাফিয়ী রাহ.
মক্কা-মদীনার অধিবাসীরা বেশীর ভাগ ইমাম শাফেয়ীর অনুসারী। তাই তার মতানুসারে মক্কা মদীনাতে ২০ রাকাত তারাবিহ প্রচলিত ছিল।
ইমাম শাফেয়ীর অনুসারী যেখানেই ছিল বা আছে, সেখানে ২০ রাকাত তারাবিহ এর প্রচলন আছে।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহ.
فإنه قد ثبت أن أبَي بن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة في قيام رمضان ويوتر بثلاث، فرأى كثير من العلماء أن ذلك هو السنة، لأنه أقامة بين المهاجرون والأنصار ولم ينكره منكر.
“সহীহ হাদীস দ্বারা প্রামাণিত যে, হযরত উবাই ইবনে কাআব রা. মানুষদেরকে নিয়ে ২০ রাকাআত তারাবীহ ও তিন রাকাআত বিতির পড়তেন। অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম এটি সুন্নত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কারণ হযরত উবাই ইবনে কাআব রা. সকল মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের উপস্থিতিতেই ২০ রাকাআত তারাবীহ পড়েছেন। কোন সাহাবী তার প্রতিবাদ করেননি। অতএএটা সুন্নাত হওয়ার প্রমাণ”। (আল বায়হাকীঃ হাদীস নং 4288)
একথা চিরসত্য যে, হযরত উবাই ইবনে কাআব রা. হযরত উমর রা. এর যুগে ২০ রাকাআত তারাবীহ ও ৩ রাকাআত বিতির পড়তেন। আর এটা খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের দ্বারা প্রমাণিত। এ কাজে সকল মুহাজির আনসার শরীক ছিলেন। কেউ অস্বীকার করেননি। বরং সাদরে বরণ করে নিয়েছেন। (মাজমুউল ফাতাওয়া-ইমাম ইবনে তাইমিয়া)
মুহাদ্দিস ইবনে কুদামা রাহ.
হযরত উমর রা. এর বিশ রাকাআত তারাবীহ আদায় করার উপর সকল সাহাবার ইজমা সংঘটিত হয়েছে। এটা আমাদের সকলকে মানতে হবে। (আল মুগনী-ইবনে কুদামা)
মুল্লা আলী আল কারী রাহ.
أجمع الصحابة على أن التراويح عشرون ركعة.
“সকল সাহাবায়ে কিরাম ২০ রাকাআত তারাবীহের উপর একমত পোষন করেছেন।” (মিরকাতুল মাফাতিহ)
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন