একজন উমরাহ যাত্রীর জন্য প্রয়োজনঃ ০৭
লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ০৫ মার্চ, ২০১৪, ০২:৩৮:৩৯ দুপুর
একজন উমরাহ যাত্রীর জন্য প্রয়োজনঃ ০৬
((আধা শিক্ষিত মানুষের উমরাহ পালনের জন্য পড়াশুনা))
ইতিমধ্যে আপনার ৭টি তাওয়াফ শেষ হওয়ার পর আপনি নিশ্চয়ই বগলের নিচে থেকে ইরহামের চাদর খান বের করে স্বাভাবিক ভাবে পরে নিয়েছেন এবং কুরআনের সে আয়াত পড়েছেনঃ
وَاتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
“এবং তোমরা মাক্বামে ইব্রাহীমকে নামাযের স্থান বানাও”।
হ্যাঁ! আপনাকে এখন মাকামে ইব্রাহীমে যেতে হবে। মাক্বামে ইব্রাহীম হলো কাবা ঘরের দরজার সামনে পিতলের শিকল আর কাঁচ আবৃত একটি বাক্স। যার ভিতরে একটি পথর রয়েছে এবং যে পfথরে দুই পায়ের চিহ্ন বিদ্যমান।
আধা শিক্ষিত মানুষের নিকট শিক্ষাগত যোগ্যতার কমতি হওয়াতে তথ্য সুত্র নাই। কথিত আছে যে,
১. এই পfথর হচ্ছে সেই পাথর, যার উপরে দাড়িয়ে ইব্রাহীম আ. কাবাঘর নির্মাণ করেছিলেন। পাথরটি সে সময় লিফটের কাজ করেছিল বলে পাথরে চড়ে হযরত ইব্রাহীম আ. উপরে নিচে যে কোন স্থানে যেতেন।
২. পাথরটার উপরের পায়ের চিহ্ন হলো হযরত ইব্রাহীম আ. এর পায়ের চিহ্ন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ইব্রাহীম আ. এর খেদমত করার জন্য পাথরকে নির্দেশ প্রদান করেন এবং পাথর সে নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করতে পারতেছে কিনা সে ভায়ে গলে নরম হয়ে যাওয়াতে পাথরে হযরত ইব্রাহীম আ. এর পায়ে দাগ পড়ে যায়।
৩. হযরত ইব্রাহীম আ. কাবা ঘর নির্মাণের পর এই স্থানে দাড়িয়ে নামায আদায় করেছিলেন।
উপরের তথ্য গুলো জানা বা না জানার মাঝে আপনার উমরা পালনের কোন সমস্যা হচেছনা। আপনি চলে আসুন মাকামে ইব্রাহীমের এলাকায়। একদম মাকামে ইব্রাহীমের কাছে হতে হবে এমন শর্ত নয়। কিন্তু অবশ্যই আপনাকে কাবাঘর মুখী হয়ে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে কাছে বা দূরে কোথাও দাড়াতে হবে। মাকামে ইব্রাহীমকে আপনিও মুসল্লা বা নামাযের স্থান বানাতে হবে তথা আপনাকে ওখানে ২ রাকাত নামায আদায় করতে হবে। এই নামাযে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সুরা কাফিরুন আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইখলাছ পড়তে হবে।
নামাযের পর ওখানে নরম দিলে আল্লাহর দরবারে আপনি যা খুশী চাইতে পারেন। এর পর আপনি ইচ্ছা করলে একবার হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করে আসতে পারেন। ওটা নির্ভর করছে ওখানকার ভীড়ের উপর। ভীড় বেশী হলে পরিহার করাই উত্তম।
এবার আপনি চলে আসুন সাফা পাহাড়ের দিকে। ওখানে আসার পথে আপনি বিভিন্ন কন্টেনারে জমজমের পানি দেখতে পারবেন। সাধারণত এক জায়গায় ৩টি কন্টেনার থাকে। তার মাঝে ১টিতে ঠান্ডা আর ২টিতে নরমাল পানি থাকে। আপনি প্রাণ ভরে জমজম পান করুন। কিন্তু ঠান্ডা নেবেন না স্বাভাবিকটা নেবেন, তা নির্ধারণ করুন আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থাকে বিবেচনায় নিয়ে। জমজমের পানি পান করে আপনি এগিয়ে চলুন সাফা পাহাড়ের দিকে।
সাফা পাহাড় পেতে হলে আপনাকে যে কাজটি করতে হবেঃ
১. কাবা ঘরের হাজারে আসওয়াদ বরাবর কোন থেকে বিপরীত দিকে তথা মসজিদের দিকে বরাবর অগ্রসর হোন। কাঁচে ঘেরা সাফা পাহাড় পেয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ।
২. মসজিদুল হারামের মিনার গুলোর দিকে একবার চোঁখ ঘুরিয়ে নিন। দেখবেন সর্বত্র জোড়ায় জোড়ায় মিনার রয়েছে। কেবলমাত্র ১টি স্থানে দেখবেন মাত্র ১টি মিনার। ঐ মিনারের নিচেই সাফা পাহাড়।
৩. আপনি আধা শিক্ষিত মানুষ না হলে আরবী, ইংরেজী এবং উর্দূ ভাষায় লিখা নির্দেশক অনুসরণ করে পৌছতে পারেন সাফা পাহাড়ে।
সাফা পাহাড়ে পৌছে আপনাকে সায়ী শুরু করতে হবে। যা উমরার দ্বিতীয় অন্যতম কাজ। তাই তাড়াহুড়া না করে তৃপ্তির সাথে জমজম পান করে আপনি অগ্রসর হোন সাফা পাহাড়ের দিকে। সাফা পাহাড়ের যখন নিকটে পৌছবেন তখন পড়ুনঃ
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْراً فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
“নিঃসন্দেরহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ নিশানী সমূহের অন্তর্ভূক্ত। কাজেই যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর হজ্জ বা উমরাহ করে তার জন্য ঐ দুই পাহাড়ের মাঝখানে সাঈ করায় কোন গোনাহ নাই। আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে কোন সৎ ও কল্যাণের কাজ করে, আল্লাহ তা জানেন এবং তার যথার্থ মর্যাদা ও মূল্য দান করবেন।”
বিষয়: বিবিধ
১২৭৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চালিয়ে যান...
মন্তব্য করতে লগইন করুন