একজন উমরাহ যাত্রীর জন্য প্রয়োজনঃ ০২
লিখেছেন লিখেছেন আধা শিক্ষিত মানুষ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৪:৩৭:১৬ বিকাল
একজন উমরাহ যাত্রীর জন্য প্রয়োজনঃ ০১
((আধা শিক্ষিত মানুষের উমরাহ পালনের জন্য পড়াশুনা))
ইহরাম পর্বঃ
উমরাহকারীর উমরাহের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ইহরাম পরিধানের মধ্য দিয়ে। আর এজন্য আছে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থান। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে মক্কাতে পৌছা মানুষদের জন্য ৫টি প্রধান প্রবেশ পথকে ইহরাম পরিধানের স্থান নির্ধারণ করেছেন রাসূল সা.। পরিভাষায় ইহরাম গ্রহণের এই স্থানকে বলে মিকাত।
ইহরাম মানে হলো সকল সাধারণ পোষাক ত্যাগ করে দুই খন্ড সাদা কাপড়ের পোষাক গ্রহণ। আর হ্যাঁ! তা কেবল মাত্র পুরুষদের জন্য। মহিলাদের জন্য পাক সাফ সাধারণ পোষাকই ইহরামের পোষাক বলে গন্য। তবে এমন পোষাক, যা পর্দা ও রুচিশীলতা রক্ষা করে। আর পার্থক্য এতটুকু যে, মহিলাদেরকে ইহরাম অবস্থায় মুখ মন্ডল খোলা রাখতে হয়।
ইহরামের জন্য নির্ধারিত পোষাক পরিধানের আগে পুরুষ মহিলা উভয়কে গোসল করে পবিত্র হতে হয়। অতএব, মিকাতে পৌছে একজন উমরাহকারীর কাজ হলো গোসল করা। সৌদী সরকার হাজী সাহেবদের সুবিধার জন্য প্রতিটি মীকাতে শত শত বাথরোমের ব্যবস্থা করে রেখেছেন আর সেখানে একজন হাজী সাহেবের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই পাওয়া যায়। অতএবঃ
১. একটি বড় পলিথিনের কিস ব্যাগে ইহরামের কাপড়, বেল্ট, প্লাস্টিকের সেন্ডেল, সাবান, তোয়ালে, আতর, ব্রাশ, পেষ্ট ইত্যাদি নিয়ে বাথরোমে প্রবেশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, নোখ কাটা, সেই করা, বগল বা নাভীর নিচের লোম পরিস্কার করার কাজটা বাড়ীতে থাকা অবস্থায়ই করে নিতে হবে।
২. বাথরুমে সাবান দিয়ে ভাল ভাবে গোসল করে নিতে হবে। সাবান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুগন্ধি সাবান পরিহার করাই উত্তম।
৩. গোসলের পর সাথে থাকা শুকনো টাওয়াল দিয়ে মাথা ও শরীরের পানি উঠিয়ে নিতে হবে।
৪. সাথে থাকা সুগন্ধি শরীরে ব্যবহার করতে হবে। ইহরামের কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবেনা।
৫. ইহরামের একটি চাদরকে লুঙ্গির মতো করে পরিধান করতে হবে। ইহরামের কাপড়কে শক্ত করে ধারণ করার জন্য উপরে বেল্ট লাগাতে হবে। বেল্টের পকেটে আপনার মোবাইল, টাকা পয়সা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে দিতে হবে।
৬. ইহরামের অপর চাদর খানা গায়ে পরিধান করতে হবে।
৭. বাথরুমে প্রবেশ করার সময় সাথে নেয়া সকল জিনিস পলিথিনের ব্যাগে ঢুকিয়ে নিতে হবে।
৮. গোসলের পর রয়েছে নামায।পাশেই পাওয়া যাবে মসজিদ। সেখানে গিয়ে দুই রাকাত নামায পড়বে। তবে যদি কোন মহিলা সেই সময়ে মাসিক অসুস্থতায় থাকেন, তাহলে তিনি নামায পড়বেন না।
৯. নামায শেষ হলে মসজিদ থেকে বের হয়ে কিবলামুখী হয়ে উমরার নিয়ত করতে হবে। উমরার নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা শর্ত। অতএব বলতে হবে “আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা উমরাহ”-যার অর্থ হচ্ছেঃ হে আল্লাহ! উমরা পালনের জন্য আমি তোমার সমীপে হাজির।
১০. নিয়ত মুখে বলার পর তালবিয়া পড়তে হবে কোরাসের মতো করেঃ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারীকা লাক। এর অর্থ হচ্ছেঃ হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির তোমার সমীপে।আমি হাজির তোমার সমীপে-তোমার কোন অংশীদার নাই। আমি তোমার দরবারে হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রসংশা তোমার জন্য, সকল নিয়ামত তোমার জন্য এবং সকল রাজত্বও তোমারই। তোমার কোন অংশীদার নাই।
১১. পুরুষেরা আওয়াজ করে তালবীয়া পড়বে। মহিলারা নিচু স্বরে পড়বে। এই তালবিয়া পড়া চলবে আল্লাহর ঘর চোঁখে দেখা পর্যন্ত। তালবিয়া পড়তে পড়তে মীকাত থেকে আল্লাহর ঘরের উদ্দেশ্যে যেতে হবে।
জ্ঞাতব্যঃ এই লেখাটি মুলতঃ হজ্জ্ব উমরা বিষয়ে বিভিন্ন বই পড়ালেখা করে এবং যারা ইতিমধ্যে উমরা করেছেন তাদের সাথে আলোচনা করে তৈরী করা হয়েছে। আপনার অভিমত বা মতামত প্রদানে কৃতজ্ঞ হবো।
বিষয়: বিবিধ
২২৫৪ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেশে গেলে বাসায় দাওয়াত।
তার পড়ের বাকিটুকু কখন পাব?
মন্তব্য করতে লগইন করুন