আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কি করে বিচারিক কার্যক্রম চালায় ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৫ মে, ২০১৮, ০১:১৭:০৮ দুপুর
একজন নাগরিক বিচারিক বিষয়ে প্রশ্ন করার অধিকার আছে , সেখানে আদালত অবমানরা বানোয়াট ভয় দেখানো তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার হবে না বলে আমরা যে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলাম ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপ ফাঁস হওয়ায় তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালে কোনো আসামি ন্যায়বিচার পাবেন না।অডিও রেকর্ডে ফেঁসে যান তুরিন আফরোজ ও প্রমাণিত হয়েছে।
যখন আওয়ামীলীগের নেতারা সরাসরি আদালতকে হুমকি দেয়। বিবাদী পক্ষের সাক্ষীদের হুমকি দিয়ে বলে দেখা যাবে আদালতে সাক্ষী দিয়ে কি করে বাড়ি যায়। তখন আদালত অবমাননা হয় না। বিচিত্র বাংলাদেশ।
কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার ওয়াহিদুল হকের মোবাইল ফোনে থাকা দুই অডিও রেকর্ডে তুরিন আফরোজ নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন , অভিযুক্ত ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত কালে অপরাধের কিছুই পান নাই। দুটি অডিওর মধ্যে একটি টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড৷ এটি চার মিনিটের মতো৷ অন্য অডিওটি ওই গোপন বৈঠকের, প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টার মতো৷
ওয়াহিদুল হকের মামলার প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ এবং তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান৷ গত বছর তদন্ত শুরু হওয়ার পর ১১ নভেম্বর তুরিন আফরোজকে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়৷
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তুরিন আফরোজকে সব মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ তবে প্রসিকিউটরদের নিয়োগ দেয় আওয়ামী সরকার৷
ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতারের আগে গত নভেম্বরে তুরিন আফরোজ প্রথমে তাকে টেলিফোন করে দেখা করার সময় চান৷ এর পর একটি হোটেলে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠকও করেন তিনি৷
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গত বছরের ১৮ নভেম্বর গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে গোপনে বৈঠক করেন। এর আগে তিনি ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাক্ষাৎ করতে চান। ওয়াহিদুল হককে যে কোনো দিন আটক করা হতে পারে জানিয়ে এ নিয়ে তিনি আসামির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। রেস্টুরেন্টে বৈঠকের সময় তারা পৌনে তিন ঘণ্টা মামলার নথিপত্র নিয়ে আলোচনা করেন। তখন ওয়াহিদুল হকের কাছে তুরিন আফরোজের সহকারী ফারাবী কয়েকটি প্রস্তাব দেন। জানতে চান তার টাকা পয়সা কেমন আছে। টেলিফোন রেকর্ডে তুরিন আফরোজ বলেন , তিনি বোরকা পরে ওই হোটেলে যাবেন৷ তার সঙ্গে থাকবে সহকারী ফারাবি, যাকে তিনি নিজের স্বামী পরিচয়ে সেখানে নিয়ে যাবেন৷
জানা গেছে, তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে৷
তুরিন আফরোজ নিজের একটি ফেসবুক পোস্টে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করে বলেছেন, আমি তদন্তের জন্য যে কোনো কৌশল অবলম্বন করতে পারি৷ আর আমি যা করেছি, আমার ঊর্ধ্বতনদের জানিয়ে করেছি৷
তথ্য ফাস করার অপরাধ কি বিচারের পূর্বেই রায় তইরির চেতেও বড় অপরাধ?
স্কাইপি কেলেঙ্কারিতে দেখা যায় নিজেরাই বলেছে সরকার পাগল হয়ে গেছে তারা একটা রায় চায়। স্কাইপি কেলেঙ্কারিতে তারা বলেছে কে কবে কি করে দাঁড়াবে আর কি করে বসিয়ে দেবে। লোকে দেখবে আমাদের মধ্যে খাতির নাই।
জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে স্কাইপ কেলেঙ্কারী ফাস হওয়ার পর দায় নিয়ে পদত্যাগ করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর সাবেক চেয়াম্যান বিচারপতি নিজামুল হক।
২০১২ সালের ৬ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এর একটি আদেশের মধ্য দিয়ে জানা যায়, বিচারপতি নিজামুল হক ও প্রবাসী আহমেদ জিয়াউদ্দিন স্কাইপের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতেন এবং ইমেইলে চিঠি আদান-প্রদান করতেন। কিন্তু যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট ও বিচারপতি নিজামুল হক ও প্রবাসী আহমেদ জিয়াউদ্দিন অপরাধ আর অনুসন্ধান করা হয়নি।
বিচারক রা কথোপোকথনে বলছে " সরকার গেছে পাগল হইয়া তারা একটা রায় চায় " অথচ যারা এই কথাগুলো ফাস করল তারা হল দুষ্টচক্র !!!
(ক) তিনি বিচারিক বিষয়ে বেলজিয়ামের অধিবাসী জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে পরামর্শ করতেন এবং তা স্কাইপি কথোপকথনে প্রকাশ পেয়েছে। (খ) কখন কোন সাক্ষী আসবে এবং কি সাক্ষ্য দেবে তাও স্কাইপির মাধ্যমে জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। সাবেক চেয়ারম্যান নিজামুল হকের সঙ্গে জেয়াদ আল মালুম কথা বলতেন।
স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিনটি মামলা পুনরায় বিচারের আবেদন করা হয়। একই ভাবে ট্রাইব্যুনাল-২-এ চিফ প্রসিকিউটর বনাম মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলা পুনর্বিচারের আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনাল সেটি বিবেচনায় নেয়ার পর জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্কাইপ কেলেঙ্কারীর দায়ে সুয়োমোটো রুল জারি করেন। দৈনিক আমার দেশে পত্রিকা স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁস করে। তবে প্রথমে আন্তর্জাতিক সাময়িকি দি ইকনমিন্ট-এ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপ কেলেঙ্কারীর কাহিনী প্রকাশ করে।
আমার দেশ পত্রিকায় বিচারপতি নিজামুল হক ও ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপি সংলাপ ফাঁস হওয়ার আগে ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের কাছে সংলাপের কথা স্বীকার করেছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক। স্ববিরোধী কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছে বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট। ৫ ডিসেম্বর ইকোনমিস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কারও সঙ্গে তিনি কথা বলেননি। বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলা গুরুতর অন্যায়। বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা যায় না। অন্যদিকে, তার পরদিন ৬ ডিসেম্বর, ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে জারি করা রুলে তিনি বলেছেন, যে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে এবং আদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বেলজিয়াম প্রবাসী বাংলাদেশী আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সহায়তা নিয়েছেন। এমনকি জিয়াউদ্দিন যে মামলার একটি পক্ষ তাও এড়িয়ে গেছেন বিচারপতি নিজামুল হক। এই স্ববিরোধিতা নিয়ে ইকোনমিস্ট বেশ কিছু প্রশ্নও তুলেছে।
ইকোনমিস্টের অনলাইন সংস্করণে ‘বাংলাদেশ : ডিসক্রিপ্যানসি ইন ঢাকা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করা হয়েছে।
স্কাইপি সংলাপে অনৈতিক বেআইনি ভয়ঙ্কর কিছু কথা -
কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক (নাসিম) নিয়মিত বিচারের নানাদিক নিয়ে বিদেশে অবস্থানরত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে স্কাইপি কথোপকথন করেন। গত আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বিভিন্ন দিনে মোট ২৭ ঘণ্টার কথোপকথনের রেকর্ড আমাদের কাছে একটি সূত্র থেকে এসেছে। বিদেশের একটি সূত্র থেকে পাওয়া কথোপকথনে রয়েছে বিস্তারিত তথ্য। মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যাবতীয় বিষয় নিয়ে পরামর্শ করেন তাদের সঙ্গে। কোন কেসটা কীভাবে আগাবে, কোনটার রায় কখন দিলে ভালো হবে, কতজন সাক্ষী নিলে সুবিধা সবকিছু নিয়ে সংলাপ হয়। এছাড়া যাদের সঙ্গে কথোপকথন হয় তাদের একজন রায় ও আদেশের স্ট্রাকচার লিখে পাঠান বলে এই স্কাইপি আলোচনায় উঠে আসে। তাদের এই কথোপকথন থেকে জানা যায়, সরকার ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রায়ের জন্য চাপ দিচ্ছে ট্রাইব্যুনালকে। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম স্কাইপি কথোপকথনে জানান, সরকার রায়ের জন্য পাগল হয়ে গেছে। সরকার শুধু একটা রায় চায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের নানা দিক নিয়ে বেলজিয়ামে অবস্থানরত ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের স্কাইপি কথোপকথনে উঠে এসেছে প্রসিকিউশনের সঙ্গে কীভাবে শলাপরামর্শের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াটি চলছে। চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর স্কাইপি কথোপকথনে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম সম্পর্কে বলেন, ‘মালুম খালি লাফায় লাফায় ওঠে। না, মানে যখন ওঠে যৌক্তিক কারণ নিয়া তো ওঠে না।’ অপরদিক থেকে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘কী সেইটা বলেন?’ জবাবে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জানান, ‘না কোনো কারণ নাই। আমি ধমক দিয়ে বসায় দিছি। পরে আবার রুমে ডাকছি। পরে কইছে এইডাই ঠিক আছে। আমি দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে বসাইয়া দেবেন। লোকে দেখুক আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই।’ এছাড়া অন্যান্য প্রসিকিউটরদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে দুইজনের কথোপকথনে। কথোপকথনের একপর্যায়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, কাকে আর এখানে আনা যেত। ড. কামাল হোসেন ক্রিমিনাল বোঝে না। আমির উল ইসলাম গ্যানজাম করবে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা বিলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী ঘরানার সাবেক আমলা ওয়ালিউর রহমানকে চোর বলে আখ্যায়িত করা হয়। সুলতানা কামালের সাক্ষ্য এবং তার সঙ্গে আলোচনার বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয় সেদিনের স্কাইপি কথোপকথনে।
স্কাইপি সংলাপ অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের কাছে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জানতে চান, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চার্জের কপিটা আছে কি না। তিনি এ-ও বলেন, ‘থাকতেই হবে, থাকতেই হবে। তো, এই জিনিসগুলোর রিপলাইডা আপনি যদি একটু ইয়ে করে দেন আমাকে। তাইলে আমি জাজমেন্টর জন্য একটু রেডি হইতে পারি।’ তার এই কথার জবাবে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আচ্ছা আপনি ধরে থাকেন, আপনি একটু হোল্ড করেন, আমি একটু চেক করে নেই। আসলে আপনি কোনটার কথা বলছেন? আমার দুই মিনিট লাগবে। আমি অর্ডারটা নিয়ে নিচ্ছি। আমি এইডা বোধহয় বলেছিলাম ইন্টারন্যশনাল ল’য়ের কনটেক্সট থেকে। তখন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, ‘হ্যাঁ ঠিক আছে। আপনি যান কাগজ আনেন, আমি দিমুয়েনে আপনারে.., আই উইল গিভ ইউ দ্য লাইন ইভেন।’
একই দিনের স্কাইপি কথোপকথনে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম আরও বলেন, ‘জাজমেন্টের কাজ তো শুরু করছি আমি, অন্য কাজ ফেলাইয়া টাইপ শুরু করছি আমি।’ তখন তাকে আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘আপনি ওই জায়গাটাকে, আপনি করেন কি যে... এ জায়গাটিতে একটু গ্যাপ রাখেন। কারণ এখনও লিগ্যাল আরগুমেন্ট কিন্তু তারা প্লেস করে নাই।’ অর্থাৎ লিগ্যাল আরগুমেন্ট শুরুর আগেই বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম রায় লেখার কাজ শুরু করে দেন এবং রায়ের কিছু বিষয় লিখে পাঠানোর জন্য ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের কাছে অনুরোধ জানান।
একই দিনের আলোচনায় আরও দেখা যায় ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বিচারপাতি নিজামুল হক নাসিমকে বলছেন, না... না... না, এটা করমুই না। এটা করার কোনো কারণও নাই, করবও না। কিন্তু ওইইটা যেইটা আপনি বলছেন, সেইটা তো জাজমেন্টে আসবে। সেইটার একটা এক্সপ্লানেশন তো দেতে হবে আমাকে...। আমি বলতেছি সেইটাই আমারে লেইখা পাঠান, এই কথাডা বলছি আপনারে।
১৫ সেপ্টেম্বরের স্কাইপি কথোপকথনে দেখা যায় মন্ত্রিসভার রদবদল সম্পর্কে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে উদ্দেশ করে বলছেন, ‘আচ্ছা, আজকে তো মনে হয় একটু পজিটিভ নিউজ মনে হচ্ছে আপনাদের দিক থেকেও, আমাদের মানে, সার্বিক বিবেচনাতে।’
নিজামুল হক নাসিম তখন তাকে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কী?’ পাল্টা জবাবে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘এই যে সাহারা খাতুনকে যে সরাইছে। It’s a very good news আসলে। এবং যারে দিছে, তাদের সাথে অনেকেরই এক্সেস ভালো আছে। কাজেই এবং উনি তো ইনফরমালি অলরেডি ICT’র contact person ছিলেনই। so... এইটা পজিটিভ হবে। অ্যাটলিস্ট প্রসিকিউটরদের মানে যারা, ওই আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ টাইপের যারা, যারা চিপে ধরেছিল ICT-কে, এটা হোম মিনিস্টার আর ছোট আইনমন্ত্রীর যৌথ প্রচেষ্টা।’ বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম তখন হু-হু করে হাসতে থাকেন।
১ সেপ্টেম্বরের স্কাইপি আলোচনায় আবারও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রসঙ্গটি উঠে আসে। কথোপকথনের একপর্যায়ে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনার এই জাহাঙ্গীর সাহেবকে এমনি মানুষ হিসেবে কী রকম মনে হলো?’ জবাবে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, ‘আমি তো আগে থেকে চিনি। আছে ভালোই। পলিটিক্যাল লোক তো, কথাবার্তা মিষ্টি আছে এডা ঠিক। লোক কেমন, হেডা আল্লাহ জানে। কইতে পারি না হেডা এহনও কিছু।’ এতে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘দেখেন, আনোয়ার সাহেব জয়েন করার পর কী কম্বিনেশনটা দাঁড়ায় বা কী ব্যাপারটা দাঁড়ায়।’ তখন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, ‘দেখা যাক, খারাপ হবে না। তারে বইল্যাও দিছে, তুমি যা বলবা রুমে বলবা, কোর্টে চেয়ারম্যান যা বলবে তা ok ।’
কথোপকথনের একপর্যায়ে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে বলেন, ‘আরও কিছু খবর আছে, যেটা আপনার জেনে রাখা দরকার। ভালো কথা যে, নাইলে আবার ভুইল্লা যাইতে পারি। হায়দার আলী সাহেবকে নিয়ে তারা খুবই সন্দেহের ভেতর আছে। হায়দার আলী গতকাল উনারে জানাইছে, রাত্রে বেলাতে উনি স্কাইপি আসার আগে যে, ইয়ে হইছে... অ্যা... উনার বাসাতে জানালা থেকে উনার ল্যাপটপটা নিয়ে চলে গেছে।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলোর বিষয় ও চার্জ গঠন, সাক্ষী নেয়া, রায়ের স্ট্রাকচার লিখে পাঠানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম ও ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের কথোপকথনে উঠে আসে।
এতে নিজামুল হক নাসিম প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘হায়দার আলীর?’ তখন জবাবে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন জানান, ‘আপনি কাউকে বইলেন না। উনি বোধ হয় কাউকে জানান নাই। আজকে কাউকে জানাইছে কি না জানি না। বাট তখন জানায় নাই। ল্যাপটপ নাকি নিয়ে চলে গেছে। ল্যাপটপের বক্সটা রাইখ্যা। ল্যাপটপটা ছিল না, ল্যাপটপের বক্সটা ছিল ভেতরে। আর বক্সের ভেতরে সমস্ত চাবি ছিল আরকি। ইনক্লুডিং প্রসিকিউশন অফিসের চাবি আরকি।’ এই প্রসঙ্গে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন স্কাইপি কথোপকথনে আরও বলেন, ‘তো এইডা জানাইছে উনারে। আমি বললাম, এখন তো এইটা prosecution office-এর চাবি। আপনার তো তাইলে ফাস্ট হচ্ছে... মালুম ভাই তখন খুবই ইয়ে করছে। সিকিউরিটিগুলাকে আরেকটু রি-অর্গানাইজ করছে। মানে ওই রাতের বেলাতেই। আজকে নিশ্চয়ই গিয়া কিছু একটা এদিক-সেদিক করছে। তালা-টালা হয়তোবা change করছে।’ তখন নিজামুল হক নাসিম বলেন, ‘আজকে তো হায়দার আলীকে court-এ দেখি নাই।’
বিষয়: বিবিধ
১৮৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন