চাইনা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন। চাই জনগণের ভোটাধিকার

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৭ আগস্ট, ২০১৭, ০১:১৭:০৬ দুপুর

নির্বাচনের আগেই ১৫৩ জন বিনাভোট এমপি হয়ে যায়। এর পর আরেকজন। ১৫৪ জন। বাকিরা ৪% . ৫ % ভোট পেয়েছেন। তাদের কথা সবাই জানে। কিন্তু এখন পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙ্গে দিয়েই হতে হবে নির্বাচন।

সাবেক বিচারপতি খারুল মুন সিনেমা হলে মালিকানা মামলায় পর্যবেক্ষণ অংশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই আওয়মীলীগ জোর করে কেটে ফেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।


সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক কয়েকটি রায়ের কারণে বাংলাদেশ একটি রক্তাক্ত জনপদে রূপান্তরিত হয়। বিশেষ করে সংবিধানে মার্শাল ল অন্তর্ভুক্ত করে আনা পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাসংবলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে তিনি অনেক বিতর্কিত।

বাংলাদেশে দেশে দীর্ঘকাল ধরে চলা রাজনৈতিক সঙ্কট ও ভয়াবহ অরাজকতার অনেক পরিস্থিতির মূলে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়া এ বি এম খায়রুল হকের রায়।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক সংক্ষিপ্ত প্রাথমিক রায়ে অন্তত আরো দুইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যেতে পারে বলে বলা হলেও অবসরে যাওয়ার ১৬ মাস পরে লিখিত বিস্তারিত রায়ে সে বিষয়টি একেবারে তুলে দেয়ার কারণেও খায়রুল হক আইনি ভাবে গুরুতর অভিযুক্ত ব্যক্তি।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মূল্যায়ন এবং পর্যবেক্ষণকে অপ্রয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলন করলেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং গুরুতর অপরাধ। কারণ তিনি এখনো সরকারি বেতনভোগী হয়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল তবিয়তে আছেন।

কিন্তু খায়রুল হক নিজে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় দিলেন কিসের ওপর ভিত্তি করে। সেটা তো ছিল মুন সিনেমা হল প্রসঙ্গে একটি মামলা। মুন সিনেমা হল নিয়ে মামলায় তিনি তখন কিভাবে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করলেন

খায়রুল হোক শেষ পর্যন্ত নিজেই প্রমাণ করে দিলেন, কার স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছিলেন। এখন আবার নতুন করে একটি পক্ষের দলের হয়ে আবির্ভূত হতে চাচ্ছেন? খায়রুল হক যে বিচারালয়ের প্রধান বিচারপতি ছিলেন সেই আদালতকে কী করে অবমাননা করতে পারলেন ? এর জবাব জাতি কে দিতেই হবে।

আবার নির্বাচন এসে গেছে। ৫ জানুয়ারিতে যা হয়েছে সেটা সবার জানা। কিন্তু বর্তমানে জরুরি কিছু বিষয় অবশ্য জাতির দাবিতে পরিণত হয়েছে।

(১)
সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে না রেখে সবার অংশগ্রহণের জন্যই সেনাবাহিনী দরকার। সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিতে হবে। সেনাবাহিনী অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা নয়। তারা বিদেশে নির্বাচন করে। দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করে। দেশর সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের ভূমিকা রাখতে হবে।সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সকল দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে একটি ঠিম করে তারাই মনিটরিং করবেন।

(২)
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড জরুরী। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।ইসিকে প্রমান করতে হবে তারা সরকারের নয়।

(৩) -
নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বলতে হবে আপনারা সমঝোতায় না আসলে আমাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ভোট দেয়ার সুযোগ ও ভোট শেষে সঠিক ফলাফল বেশী জরুরী।

(৪) -
দেশী-বিদেশী প্রচুর নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক থাকা জরুরী। বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিতে হবে।গণ গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে।



(৫)-
ক্ষমতায় থেকে জনগণের টাকা নষ্ট করে সকল সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

(৬)-
মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের অবাধ পর্যবেক্ষণ সুবিধা দিতে হবে। দলীয় কোন নেতা কর্মীকে মিডিয়া কার্ড ইস্যু করে ভোট কেন্দ্রে পাটানো নিষিদ্ধ করতে হবে।

সংবিধানপ্রদত্ত ক্ষমতাবলেই ষোড়শ সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করেছে আদালত।

কিন্তু গণহারে আদালত অবমাননার জন্য এখনো কেউ আদালতের কাঠগড়ায় নিয়ে যাচ্ছে না আদালত , কারণ কি ?


ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার ব্যক্তি। তারা হলেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বুধবার সন্ধ্যায় তারা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করতে যান।

রাষ্ট্রপতি কী পরামার্শ দিয়েছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কী পরামার্শ দিয়েছেন তা বলা যাবে না। আলোচনা শেষ হয়নি।

তাহলে কি বিশেষ ইশারায় আবারো চলবে -

আদালত নিজেরা সুয়োমোটো করবেন ?

পর্যবেক্ষণ এক্সপাঞ্জ করবেন ?

রিভিউ করার পথ খুলে দিয়ে রায় পাল্টানোর প্রক্রিয়া ?

লাঠি মিছিল করেও তারা আদালতে আসামি হয়নি , তারাই এখন লাফাচ্ছে।

ষোড়শ সংশোধনী মামলায় আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতি সর্বসম্মতিতে রায় দিয়েছেন। এ রায়কে বিচারপতি খায়রুল হক পূর্বপরিকল্পিত ও অগণতান্ত্রিক বলেছেন। এত বড় আদালত অবমাননামূলক বক্তব্য একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি কিভাবে দিলেন?

একই সুরে কথা বলছেন আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। এমনি আওয়ামীলীগের একজন ( ব্যারিস্টার তাপস ) বলেছেন - ষোড়শ সংশোধনী মামলায় আপিল বিভাগের রায় একজন ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক ড্রাফট করে দিয়েছেন ?

তাহলে সহজেই প্রশ্ন জাগে - সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের দেয়া সকল রায় কি তাহলে আওয়ামীলীগের কেউ লিখে দিয়েছিলেন ? ফাঁসির রায় কি তাহলে স্কাইপির বক্তৃতার সেই কথাগুলোর রায় ?

বিষয়: বিবিধ

১০৭৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383804
১৭ আগস্ট ২০১৭ দুপুর ০২:১৯
হতভাগা লিখেছেন : গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখতে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য ০৫.০১.২০১৪ এর নির্বাচন অপরিহার্য ছিল।

কেউ না আসলে আওয়ামী লীগের দোষ কোথায় ? এর ৬/৭ মাস আগে এই আওয়ামী লীগের অধীনেই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল বি.এন.পি. এবং জিতেছিলও । তাহলে সেই আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৪ এর সাধারণ নির্বাচনে না আসার কোন গ্রহণ যোগ্য কারণ থাকতে পারে না।
383864
২৪ আগস্ট ২০১৭ রাত ০৮:৩০
হারেছ উদ্দিন লিখেছেন : আসলে আজ উপকার হতো আওয়ামীলীগ অবৈধ সরকার উপাধী থেকে বেঁচে যেত!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File