সালমান শাহকেকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৩৩:২৫ দুপুর
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান মারা যায়। সালমানের পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড়। ছোট ভাই শাহরান চৌধুরী ইভান। জন্ম ১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেট শহরের দাড়িয়াপাড়া নানার বাড়িতে। মাত্র ২৭ বছর বয়সে তাকে হত্যা করা হয়।
২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। এর পর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
খুব সম্ভবত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৭ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
খুব সম্ভবত চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরের দিন অথবা এর পরদিন একটা পত্রিকায় আর্টিকেল লিখেছিলাম- "" তাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে "" মূল বক্তব্য ছিল - সামিরা এবং চাইনিজ ব্যবসায়ীরা হত্যার সাথে জড়িত। যার মধ্যে সম্ভবত একজন চাইনিজ নাগরিক যিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। সালমান শাহকে খুন করেছে তার স্ত্রী সেটা অসম্পূর্ণ তথ্য। সামিরা নামের মেয়েটিকে সালমান বিয়ে করেছিল , সেই মেয়েটি ছিল উচ্চাবিলাসী এবং তার সাথে যোগাযোগ ছিল ঠান্ডা মাথার খুনি চক্রের।
আমার জানা মতে চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহের মা নীলুফার চৌধুরী জাতীয় পার্টির নেত্রী , এবং সালমান শাহের বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা।
১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৭ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ’র পিতা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। এর পর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ’র মা নীলুফার চৌধুরী ছেলের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।
নারাজির আবেদনে সালমান শাহের মা নীলুফার চৌধুরী উল্ল্যেখ করেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ’র মা নীলুফার চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন। আদালত নারাজির আবেদন গ্রহণ করে পুনঃতদন্তের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন।
আগের রাতে খাবারের সাথে স্নায়ুই বিষাক্ত ঔষধ ( বিদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল খুনের আগের সপ্তাহে ) এর পর ইঞ্জেকশন পুশ করে বা গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়। সালমান শাহর মরদেহের পাশ থেকে যে সিগারেট পাওয়া যায় সেটি পরীক্ষা করে দেখানো হয়নি কেন ? সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবারকে রিমান্ডে নিয়ে কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরার পরকীয়া সম্পর্ক এবং চলচ্চিত্রের সিন্ডিকেটের কারণে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। মে ফেয়ার বিউটি পার্লার থেকে সামিরার বান্ধবী রুবি নামের একজন সাথে জড়িত। সামিরার সাথে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল
(১৯৯৭ সালের ২৬ অথবা ২৭ নভেম্বর মতামতের কলামে লিখেলছিলাম বিষয়টি নিয়ে। হয়তো পত্রিকা খুঁজলে পাবেন আমার সেই সময়ের লেখা মুক্তকলামে বক্তব্যটি।)
বিষয়: বিবিধ
১১০৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন