ভারতীয় গোমাতার সন্তানদের , গোমূত্র পানকারীদের বর্বরতা।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ৩০ জুন, ২০১৭, ০১:০৭:২৮ দুপুর
গরুর মাংস বহনের সন্দেহে ঝাড়খন্ড রাজ্যে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এ সময় ওই ব্যক্তির মাইক্রোবাসটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়খন্ড রাজ্যের রামগড় জেলার বজরতন্ড গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গো-রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করছে উগ্রহিন্দুরা।
নিহত ব্যক্তির নাম আসগর আনসারি ওরফে আলিমুদ্দিন (৫০)। তাঁর বাড়ি জেলার নয়াসরাই গ্রামে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিন তাঁর মাইক্রোবাসে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। গাড়িতে গরুর মাংস বহন করা হচ্ছে সন্দেহে বজরতন্ড গ্রামে একদল লোক তাঁর গাড়ি থামায়। এ সময় লোকজন আলিমুদ্দিনকে বেধড়ক মারধর করে। এরপর গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রকাশ্য দিবালোকে ওই দুর্বৃত্তরা মারুতি গাড়িটি ভাঙচুর করে সেটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পুলিশ আহত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর তিন দিন আগে ঝাড়খন্ডের দেওরিতে উসমান আনসারি নামের এক ব্যক্তির বাড়ির বাইরে মরা গরু পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই ব্যক্তির বাড়িতে।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ঈদের বাজার শেষে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে এক কিশোরকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
গরু পাচারকারী’ তকমা দিয়ে বিবস্ত্র করে নিগ্রহ উত্তরপ্রদেশে
সংবাদ সংস্থা
২০ জুন, ২০১৭
গরু পাচারকারী’ তকমা লাগিয়ে এক জনকে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে নির্মম ভাবে পেটানো হল। আর গোটা ঘটনাটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন এক অসহায় পুলিশকর্মী। উত্তরপ্রদেশের এটা জেলায়।
উসমানের পরিবারের উপর এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় মানুষ বিস্মিত! গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, গরুর মাংস কেনাবেচার সঙ্গে কোনও ভাবেই উসমান জড়িত নন। বহু দিন ধরেই তাঁদের গরুর দুধের ব্যবসা। ওই গ্রাম ও আশপাশের সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের মানুষই উসমানের গ্রাহক। হাসিখুশি উসমানের সঙ্গে সব সম্প্রদায়ের মানুষেরই সদ্ভাব রয়েছে। এমন একটি পরিবারের উপরে কিছু মানুষ চড়াও হল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
http://www.anandabazar.com/national/muslim-man-man-beaten-up-his-house-set-on-fire-after-finding-a-dead-cow-outside-dgtl-1.634938?ref=strydtl-rltd-national
২০১৫-র সেপ্টেম্বরে দিল্লির অদূরে দাদরি গ্রামে গোরক্ষকদের আক্রমণের শিকার হন মহম্মদ আখলাক। ফ্রিজে গরুর মাংস রাখা আছে, এই অভিযোগে ওই প্রৌঢ়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তাঁকে এমন ভাবে মারধর করা হয় যে, ঘটনাস্থলেই মারা যান আখলাক। এর পর দেশ জুড়ে এ রকম একের পর এক ঘটনা ঘটেছে। কয়েক দিন আগে হরিয়ানায় ট্রেনে মধ্যে জুনেইদ নামে এক কিশোরের ব্যাগে গরুর মাংস আছে এই অভিযোগে তাকে পিটিয়ে খুন করা হয়। দিল্লি থেকে অল্প দূরে হরিয়ানার ওই ঘটনা যে কোনও বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, তা ফের প্রমাণ করল গিরিডি।ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটিতে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মোট ১৪৫৪টি সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১৮৩ জন মানুষ নিহত ও ৪৫৮৫ জন আহত হয়েছেন। রাজ্য সরকারের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ইন্ডিয়াস্পেন্ড জানায়, ভারতের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ২০১৪ সালের মে থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ৩২টি। আর এসব হামলায় নারী-শিশুসহ ২৩ জন নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি হরিয়ানা রাজ্যে দুই তরুণীকে গণধর্ষণ ও তাদের দুই আত্মীয়কে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে।
দুর্বৃত্তরা বলেছে, গো-মাংস খাওয়ার জন্য এই শাস্তি। গো-ভক্তির নামে এ ধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। গো-রক্ষার নামে এই সহিংসতা ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে। গো-রক্ষার নামে ২০১৪ সালের জুন এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এ ধরনের ১১টি ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে তা বেড়ে ১২টি এবং ২০১৭ সালের এই ছয় মাসেই নয়টি ঘটনা ঘটেছে। আর এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটছে ভারতের উত্তরাঞ্চলে।
বিষয়: বিবিধ
৯৬৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ট বলে সেটার দাপট তারা প্রায়শই দেখায় দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের উপর অত্যাচার করে,শোষণ করে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন