বিমান বাংলাদেশ নামের ডানা ভাঙা পঙ্গু পাখিটি যেমন চলছে
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৭ জুন, ২০১৭, ০১:৪৩:০৬ রাত
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেয়া টাস্কফোর্স তাদের রিপোর্টে বলেছে, ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোট ৩২ বার বিমান দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট গায়েব করে দেয়া হয়েছে। টাস্কফোর্স এসব দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ না করার জন্য ফ্লাইট সেফটি বিভাগের দায়িত্বে অবহেলা বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, অধিকাংশ বিমান দুর্ঘটনা পাইলটদের অবহেলা কিংবা ‘হিউম্যান ইরর’জনিত কারণে সংঘটিত হয়েছে। এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা রীতিমতো হাস্যকর।
রিপোর্টে বলা হয়, অভিজ্ঞ পাইলটদের হাতে যেসব দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। পাইলটরা তাদের ব্যক্তিগত ভুলের জন্য বিভিন্ন দুর্ঘটনার মাধ্যমে বিমানের মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি করেছে। এসবের মাধ্যমে পাইলটরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিমানের ব্যাপক ভাবমূর্তি ক্ষুণ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি অতীতে।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন) ও বিমান কর্তৃপক্ষ দায়সারা তদন্ত কমিটি গঠন করে কিছুদিন পর আর কোন তৎপরতা দেখা যায়না ।
হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দেখিয়ে লুটপাট তীব্র গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কের দিকেই যাচ্ছে
দেশে বিদেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যেকোন অফিসে টিকেটের জন্য গেলে সবসময় শুনতে পাবেন তখন পুরো ফ্লাইট যাত্রী বোঝাই হয়ে গেছে। কিন্তু সেই ফ্লাইটে ভ্রমণে দেখতে পাবেন অনেক সিট্ খালি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাঝে মাঝে প্রায় যাত্রী শুন্য ফ্লাইট চলাচল করে
লোডার, হেলপার, মেকানিক , পাইলট , সাপ্লাইয়ার, মন্ত্রী , বিমান ম্যানেজমেন্ট আমলা , রাজনৈতিক পদ সব মিলে বিমান কে শেষ করে দেয়া হয়েছে। ডান ভাঙ্গা পাখি এখন কোনমতে পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে চলছে। বহু দেশে এখন বিমান উড়ে না। বহু দেশে বাংলাদেশ বিমানের স্লট বাতিল করে দেয়া হয়েছে।
বিমানের এক পাইলট ও কো-পাইলট চাকার সেফটি পিন না খুলে আকাশে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে উড্ডয়ন করেছিলেন। পরে ৫০ মিনিট পর ফের জরুরি অবতরণ করলেও ঘটনায় অভিযুক্ত পাইলটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।পাইলটের অদক্ষতার কারণে বিমানের একটি উড়োজাহাজ ল্যান্ডিং করতে গিয়ে ১০টি টায়ার ফেটে যায়। এতে মোটা অংকের টাকা ক্ষতি গুনতে হয়েছে বিমানকে।
বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের রি-ফুয়েলিং (জ্বালানি তেল ভরা) শেষ করে চাকার সেফটি পিন খোলা ও পুশকার্ড মেশিন চালু করে যখন ফ্লাইট উড্ডয়ন করবে তখন পর্যন্ত চলে বিমানের অনিয়ম-দুর্নীতি ।
পদের অভাব নাই , কাজের কাজ শূন্য
বাংলাদেশ বিমান ও বিমানবন্দর, বিমানের গন্তব্য শিডিউল সবকিছু বেশিরভাগ সময় হযরলব হয়ে যায়। বিমানের শিডিউল ঠিক থাকে না। বিদেশের মাঠিতে সেই কারণ বিমানকে অতিরিক্ত মোটা অংকের টাকা খেসারত দিতে হয়। রাজনৈতিক নগ্ন হস্তক্ষেপ , আমলাদের লেলুপ আক্রমণ , রাজনৌতিক দেউলিয়াপনা , আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্প নামে বিদেশ ভ্রমণ , টেন্ডারবাজি , প্রকল্পের পরামর্শক সেবা প্রকল্প , পর্যটন মোটেল নির্মাণ, সম্প্রসারণ সহ বহু নাম দিয়ে চলছে অহরহ লুটপাট।
জানা গেছে, বর্তমানে বিমানের ১১৭ জন পাইলট রয়েছেন। এর মধ্যে ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধেই নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। এ গুটিকয়েকজনের কাছেই পুরো বিমান কর্তৃপক্ষ জিম্মি।বিমানের অনেক পাইলটের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
বিষয়: বিবিধ
১১২৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে বিমান ও পর্যটনের দ্বায়িত্বের যারা নিয়োজিত আছেন তারা মনে হয় কষ্মিন কালেও চান না যে এ খাত দুটো ফ্ল্যারিশ করুক , পর্যটন খাত হতে বিশাল বৈদেশিক মুদ্রা আসুক। কারণ এসব খাতে উন্নয়ন করতে গেলে ব্যাপক খাটুনী মারতে হবে ।
টাকা দিয়ে পদ যারা পেয়েছেন তাদের কোন ডিপার্টমেন্টাল এক্সিলেন্সী থাকবে না - এটাই স্বাভাবিক। তারা চাইবেই কিভাবে কিছুই না করে শত কোটি টাকা হাতানো যায়, কারণ ঘুষের টাকা উসূলের উপর উসূল করা লাগবে। সরকারী কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা এত গাধা না যে - যেখানে কিছু না করে আরেক পার্টিকে সুবিধা এনে দিয়ে বেতনের শত সহস্রগুন পাওয়া যায় , সেখানে তারা শুধু শুধু খাটতে যাবে।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প/ব্যবসা লাভ করতে থাকলে আশে পাশের দেশগুলোর পর্যটন ব্যবসায় ধ্বস নামতে বাধ্য আর বাস মালিক - শ্রমিক সমিতিতে সরকারের মারদাঙ্গা ক্যাডার ভরপুর।
উপরোক্ত বিষয় দুটো সরকারের কাছে খুবই সেনসিটিভ ইস্যু বলে এদেরকে চটানো থেকে ১৫ কোটি কি.মি. দূরে থাকে সব সরকার।
মন্তব্য করতে লগইন করুন