বাংলাদেশের মানুষ যে কতটি ভুল করেছিল
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২২ জুন, ২০১৭, ১০:৩৩:৩১ সকাল
(১) একদলীয় বাকশালের বিচার না করা।
(২) বাংলাদেশের প্রথম ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ বাতিল করে রক্ষী বাহিনীর গণহত্যার বিচার না করা।
(৩) জাসদের নিষিদ্ধ জঙ্গি গণবাহিনীর নারকীয় তান্ডব, বোমাবাজি , ডাকাতির , গণহত্যার বিচার না করা।
(৪) বাংলাদেশের বুকে যুদ্ধ ছাড়া ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সাধারণ জনগণের উপর নির্বিচারে গণহত্যার বিচার না করা।
(৫) যুদ্ধ বন্দি নিরীহ বিহারীদের উপর বর্বরতা এবং ভারতে বিশেষ এলাকায় আরাম আয়েসে থেকে দেশে ফিরে চেতনার দাবিদার চক্রকে আটক না করা , বিচারের আওতায় না আনা।
(৬) ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত দলীয় প্রভাবে লুটপাট , অনৈতিক কার্যকলাপ , ভারতের পতিতা পল্লীতে আটক বিশেষ দলের নেতাদের বিচার না করা। ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কর্নেল তাহের ও ইনু’রা স্বশস্ত্র বিপ্লবের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়ে মঞ্চে ও নেপথ্যে সর্বাত্মক তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে জাসদ। জাসদের গণবাহিনীর প্রধান কর্নেল তাহেরের সহায়তায় তারা সেনাবাহিনীতে ‘শ্রেণি সংগ্রাম ও বিপ্লবে হত্যা করা হয় অনেক সৈনিক , অফিসারদের। ঈদের নামাজে ব্রাশ ফায়ার করে আওয়ামীলীগের নেতাদের হত্যা করে কুখ্যাত জঙ্গি জাসদের গণবাহিনী। একদিকে গণবাহিনীর নারকীয় তান্ডব , অন্যদিকে রক্ষী বাহিনীর বর্বরতা। তখন বাংলাদেশ বর্বর রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
জাসদ গণবাহিনী করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছিল
http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=18594
ছাত্রলীগ করে আসা জাতীয় পার্টি নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, আমাদের বিরোধী দলের এমপিদের সংখ্যা অত্যন্ত কম, মাত্র ৪০ জন। কিন্তু টিভিতে আমাদের মুখটা দেখানো হয় না। এর কারণ হচ্ছে এই সংসদে যিনি ‘ইনফরমেশন মিনিস্টার’ (তথ্যমন্ত্রী) তিনি জাসদ করেন। সমস্যাটা এইখানে না, সমস্যা হচ্ছে আমরা ছাত্রলীগ করেছি। আর তথ্যমন্ত্রী জাসদ করেন। তিনি বলেন, একাত্তরে একসঙ্গে যুদ্ধ করলাম, সবকিছু করলাম। একই বিছানা থেকে উঠে উনারা (জাসদ) আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেন। অস্ত্র ধরার বিনিময়ে কি করলেন, আমাদের গুণে গুণে ২০ লাখ লোককে হত্যা করলেন।
তাহের ও সিরাজুল আলম খানের চাওয়া কী ছিল?
১৯৭৩ থেকে তাই তারা সশস্ত্র সামরিক সংগঠন গণবাহিনী গড়ে তোলে। দেশজুড়ে গুপ্তহত্যা, থানা ফাঁড়ি ও অস্ত্র লুট, পাট ও খাদ্য গুদামে অগ্নিসংযোগ, রেললাইনে নাশকতা সৃষ্টিসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছিল। গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথ ছেড়ে তারা সশস্ত্র রাজনীতির পথ ধরে নকশালসহ আরও চৈনিকপন্থি সশস্ত্র সংগঠনের পাশাপাশি অবস্থান নেয়।
তাই এ সিপাহিরা স্লোগান তুলেছিল- ‘সেপাই সেপাই ভাই ভাই, অফিসারদের রক্ত চাই। ’ তারা সর্বোচ্চ পদ চেয়েছিলেন সুবেদার। তার উপরে আর কোনো পদ থাকবে না।
তারা প্রথমেই হত্যা করে খালেদ, কে এন হুদা, এ টি এম হায়দার- তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে। এরা ক্যান্টনমেন্টে একজন মহিলা ডাক্তারসহ (আবু ওসমান চৌধুরী সেক্টর কমান্ডারের স্ত্রী), ১৩ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে।
২৩ ও ২৪ নভেম্বর তাহেরসহ জাসদের অন্য নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।
তাহেরকে মুক্ত করার জন্য ২৬ নভেম্বর ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেনকে অপহরণ করে জিম্মি করার ব্যর্থ চেষ্টা চালায় তাহেরের ভাইসহ সশস্ত্র অনুগতরা। ঘটনাস্থলে তাহেরের এক ভাই মারাও যায়।
শেখ মুজিবের আগমন ঠেকানোর জন্য ছক কষছিলেন প্রাণরসায়ন বিভাগের লেকচারার আনোয়ার হোসেন। তিনি ছিলেন জাসদের সামরিক সংগঠন বিপ্লবী গণবাহিনীর ঢাকা নগরের কমান্ডার। শেখ মুজিবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন উপলক্ষ করে গণবাহিনী বিষয়টা বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে গণবাহিনীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মোশতাক আহমেদের বয়ানে:
‘আনোয়ার ভাই শিক্ষকদের একটা লিস্ট আইনা আমারে দিছে। তারপর আমি বাংলাবাজার যাইয়া এনভেলাপ কিনলাম। উনার ভাই বাহার কোথা থেকে একটা সাইক্লোস্টাইল মেশিন আনলো। ওখানেই কপি করা হয়। আপিলটা বাকশালে জয়েন না করার জন্য। কারও সই ছিল না। প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের জন্য চিঠিগুলো আলাদা করছি। আমরা একই সময়ে সব ডিপার্টমেন্টে দিয়া আসছি। এটা ১৫ই আগস্টের দুই দিন আগে। ১৫ই আগস্ট টিচাররা সবাই বাকশালে জয়েন করবে এমন একটা কথা ছিল। এটা যেন না করে।
ফকিরাপুলের একটা ঢালাই কারখানায় বোমার খোল বানানো হতো। আনোয়ার ভাই আমারে একবার নিয়া গেছিল। একটা ছালার ব্যাগে ভইরা সেই খোল মোটরসাইকেলের পেছনে কইরা নিয়া গেল, মিরপুরে পাঠাইয়া দিলো। হয়তো আরো ডেলিভারি হইছে। নিয়া তো ‘নিখিল’ বানানো হইছে। (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার নিখিল চন্দ্র সাহা চুয়াত্তরের ২৬শে নভেম্বর জাসদের হরতাল উপলক্ষে বোমা বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনাজনিত বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন। তাঁর স্মরণে গণবাহিনী তাদের তৈরি বোমার নাম রেখেছিল ‘নিখিল’।)
১৪ই আগস্ট তো ইউনিভার্সিটিতে হাই এক্সপ্লোসিভ ফাটানো হইল।
এই বিষয় গুলো আইনের আওতায় না এনে সেই চক্র পার পেয়ে আজ বাংলাদেশকে নরকে পরিণত করেছে।ঐতিহাসিক প্রমাণিত খুনি চক্র আজ দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১৯৩৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন