নাসিক নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী নিউজিল্যান্ডে তালিকাভুক্ত ঋনখেলাপী
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ০৪:৪২:২৭ বিকাল
নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী আইভি হায়াত আইনের চোখকে ফাকি দিয়ে কিভাবে এত বছর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন? আইনের চোখকে কিভাবেই বা তিনি মেয়রের মত একটি গুরুত্বপূর্ন পদে ভোট প্রার্থী হতে পারেন? প্রসঙ্গত কোন বিদেশী নাগরিক বা দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী ব্যক্তি আইনগত ভাবে বাংলাদেশের জাতীয় বা স্থানীয় কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারেন না।
অথচ আইভি হায়াত, যিনি নিউজিল্যান্ডের স্থায়ী নাগরিকত্ব বহাল রেখে, অর্থাৎ সেদেশে স্থানীভাবে রেসিডেন্স পারমিটের অধিকারী হয়েও কিভাবে দির্ঘদিন নারায়নগঞ্জ পৌর সভার চেয়ারম্যান ছিলেন এবং কিভাবেই বা বর্তমানে তিনি মেয়র পদের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত হয়েছেন।এবার নির্বাচনে ও আছেন।
নিঊজিল্যান্ডে তাঁর চিরস্থায়ীভাবে বসবাসের পারমিটের কথা তিনি অন্যান্য অনেক কিছুর মত গোপন করেছেন এবং আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করছেন। এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এখানে উল্লেখ্যে যে, নারায়নগঞ্জের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরও তিনি নিউজিল্যান্ডের পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট সম্বলিত পাসপোর্ট নিয়েই সেদেশে ভ্রমন করেছেন।
আসুন জেনে নেই সেই ২০১১ সালের যা প্রকাশিত হয়েছিল -
নিউজিল্যান্ডের আইনে লেখা আছেঃ
Resident Class Visa Options
For all the many advantages of being a New Zealand resident, consider a resident visa
With residence status you can live, work and study in New Zealand indefinitely.
The benefits of being a resident include being able to work for whomever you want, having full access to funded (government-paid) healthcare, having access to all courses of study without the need to pay international student fees – most of the rights of a citizen, in fact, including the right to vote.
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের কোন জাতীয় অথবা স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, যদি তাঁর অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব বা অন্যকোন দেশে ভোটাধিকার আছে। এক্ষেত্রে মেয়র প্রার্থী স্পষ্ট আইনের বরখেলাপ করছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আইভি হায়াত নির্বাচন কমিশনকে তাঁর আয়-ব্যয়ের ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেনঃ নির্বাচনে প্রতিটি প্রার্থীকে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক হিসাব, আয়ের সোর্স, ব্যয়, পেশা ইত্যাদি সম্বন্ধে পুঙ্খানূপুঙ্খরূপের এবং সততার সাথে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিভিন্ন পদে প্রত্যেক প্রার্থী তাঁদের নিজ নিজ হিসাব এনসি অফিসে জমা দিয়েছেন শুরুতেই। মেয়র প্রার্থী হিসেবে আইভি হায়াত বলেছেন এবং লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন যে, তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত বেতন উপভোগ করতেন না এবং ব্যাঙ্কে তার ফিক্স ডিপোজিট হিসেবে প্রায় ১০ লাখ টাকার মত জমা আছে।
নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত তাঁর স্বামী কাজী আহসান হায়াত সেতু নিউজিল্যান্ড থেকে আইভির ভরনপোষন করেছেন এবং এখনো করছেন, তা সম্পূর্ন মিথ্যা এবং অযোক্তিক। আইভির স্বামী কাজী আহসান হায়াত সেতু, যিনি বয়সে আইভির চেয়ে ছোট এবং নিউজিল্যান্ডে তাঁদের দুই সন্তানের একজনকে নিয়ে বসবাস করছেন। অন্য সন্তান আইভির কাছেই বাংলাদেশে থাকে।
কাজী আহসান হায়াত সেতু ১৯৯৩ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডে পেশাগতভাবে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার। সেদেশের ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টে খোজ নিয়ে জানা যায় যে, তিনি তাঁর ট্যাক্সি চালানোর আয়ের স্বল্পতার কারনে ট্যাক্সও কম দিয়ে থাকেন।
নিউজিল্যান্ডের নিয়মানুযায়ী কোন নাগরিক যদি সেদেশে একটা নূনতম স্ট্যান্ডার্ড থেকে কম আয় করে থাকেন, তাহলে সেদেশের সরকার কতৃক তাঁকে সেই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পরিপূরক হিসেবে New Zealand Government (WINZ) থেকে বারতি কিছু অর্থ দিয়ে থাকে, যাকে “social service benefit” (called DOLE) বলা হয়ে থাকে। হায়াত সেদেশে তাঁর আয়ের স্বল্পতাঁর জন্য এই সুবিধাটি ভোগ করছেন আজ অনেক বছর ধরেন।
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, যিনি একটা দেশের নূনতম স্টান্ডার্ড মেইন্টেন করার মত আয় রোজগার করেন না, তিনি কিভাবে অন্য দেশে অবস্থিত তাঁর এক সন্তান এবং স্ত্রীর ভরনপোষন করবেন? উপায় একটা আছে অবশ্য। হয় তিনি ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে প্রতি মাসে ট্যাক্স ফাকি দেয়ার জন্য আয় কম দেখান এবং সরকার থেকেও স্যোসাল বেনিফিট নিয়ে থাকেন। তাই যদি হয় এবং তা যদি প্রমান হয়, তাহলে হায়াতের বিরুদ্ধে মামলাসহ অনেক ঝামেলা আসবে বলেই সেদেশের ট্যাক্স অধিদপ্তর জানায়।
গত নির্বাচনের সময় এটিএন-এর সাথে সাক্ষাতকারে আইভি মিথ্যাচার বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল এটিএনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে আইভি বলেছেন যে, ১৯৯৫ সালে তিনি তাঁর স্বামী আহসান হায়াত সেতুর সাথে একত্রে নিউজিল্যান্ডে যান। এক্ষেত্রে আইভি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় টেলিভিশন এটিএনের মাধ্যমে সারা জাতীর সাথে মিথ্যাচার করেছেন, যা গর্হিত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। আইভি ১৯৯৫ সালে যখন নিউজিল্যান্ড গমন করেন, তখন তিনি ছিলেন অবিবাহিতা এবং সিঙ্গেল। সেখানে যাওয়ার বেশ পরে তিনি আহসান হায়াত সেতুর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ।
উল্লেখ্য যে, প্রেমের ধারাবাহিকতায় আইভি তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট হায়াতের সাথে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। আরো জানা যায় যে, হায়াত তখন নিউজিল্যান্ডে রাজনৈতিক শরনার্থী হিসেবে আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নিউজিল্যান্ড সরকার কতৃক প্রত্যাক্ষিত হওয়ায় আইভিকে বিয়ে করার মাধ্যমে শেষমেশ সেদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান।
হায়াতের নিউজিল্যান্ডে গমনের ইতিহাসঃ ১৯৮৭-৮৮ দিকে হায়াত, যার বাড়ী বাংলাদেশের ফরিদপুরের রাজবাড়ী, ইন্দোনেশিয়ায় গমন করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিলো সেখান থেকে নৌপথে অষ্ট্রেলীয় যাওয়া। তিনি ১৯৮৮ সালের শেষের দিকে নৌপথে অষ্ট্রেলিয়া পাড়ি জমালেও অষ্ট্রেলিয়া পুলিশের হাতে পড়েন এবং তাঁকে পূনরায় ইন্দোনেশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। উপায়ন্তর না দেখে দালালের হাত ধরে ভিসাবিহিন বেআইনীভাবে নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ করেন ১৯৯০ সালের দিকে। সেদেশে যেয়ে তিনি আওয়ামী লীগের সদস্য পরিচয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু তাঁর আবেদন প্রত্যাক্ষিত হলে, তিনি আইভিকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি 304/A Mt. Albert Road, Auckland,New Zealand- ঠিকানায় এক সন্তান নিয়ে বাস করেন। আইভির সাথে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা কেউ বলতে পারেননা। তবে তাঁদের দুই সন্তানের একজন আইভির সাথে এবং অন্যজন হায়াতের সাথে আছে ।
নিউজিল্যান্ডে আইভি একজন তালিকাভুক্ত ঋনখেলাপী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী মিসেস আইভি হায়াত নিউজিল্যান্ডে এসে পাবলিক হেলথ-বিষয়ের উপর কিছু কোর্স করেছেন। কিন্তু তিনি কখনোই চিকিৎসক হিসেবে প্রাকটিস বা চাকরী করেননি সেখানে। তিনি পড়াশুনার জন্য সেদেশের সরকারের স্টুডেন্ট তহবিল থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা লোন নিলেও, আজোবধি তা তিনি ফেরত দেননি বা দেয়ার চেষ্টা করেননি। আইনানুযায়ী আইভি হায়াত নিউজিল্যান্ড সরকারের রেজিষ্ট্রিতে একজন তালিকাভুক্ত ঋনখেলাপী হিসেবেই বিবেচিত বলে জানান সেদেশের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
বিষয়: বিবিধ
৫২৩০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অথচ আইভি হায়াত, যিনি নিউজিল্যান্ডের স্থায়ী নাগরিকত্ব বহাল রেখে, অর্থাৎ সেদেশে স্থানীভাবে রেসিডেন্স পারমিটের অধিকারী হয়েও কিভাবে দির্ঘদিন নারায়নগঞ্জ পৌর সভার চেয়ারম্যান ছিলেন এবং কিভাবেই বা বর্তমানে তিনি মেয়র পদের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত হয়েছেন।এবার নির্বাচনে ও আছেন।
এরকম দ্বৈত নাগরিক বাংলাদেশের মসনদের আসে পাশে অনেক আছে ।
‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’।
‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। নতুন নাম হয়-‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নাম নেয় দলটি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন