আমেরিকার সাথে চুক্তিতে বিপদে থাকবে ভারত। বাংলাদেশে কার বাড়ীতে যেয়ে সাক্ষর করলেন চলছে সেই যাত্রা পালা।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০১:৫৫:৪০ দুপুর



সোমবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রিকার এবং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ্টন কার্টারের মধ্যে ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়।

ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সই হওয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে খুঁজে দেখলাম - স্পষ্ট উল্লেখ আছে

ভারতের ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে মার্কিন সেনাবাহিনী। অন্য কোনো দেশে অভিযান চালানোর সময় মার্কিন সেনারা ভারতের ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে।প্রয়োজন মতো আমেরিকা এবং ভারত পরস্পরের সামরিক ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করতে পারবে।

একটিবার চিন্তা করে দেখুন - ভারতের ঘাঁটি ব্যবহার করবে মার্কিন সেনাবাহিনী। কারণ এশিয়ার এই অঞ্চলে তাদের দরকার। কিন্তু আমেরিকায় যেয়ে ভারত কার সাথে লড়বে ? এখানে তো উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশের সাথে কোন ধরণের যুদ্ধের কারণ ভারতের নাই। এমনকি কোন দিন সেই সুযোগ ও পাবে না ভারত।

উত্তর কোরিয়া , চীন এবং পাকিস্তানের সাথে আরেকটি বিপদ ডেকে এনেছে ভারত।

এরই মধ্যে ভারতে এই নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও চুক্তির তীব্র বিরোধিতা শুরু হয়েছে।

ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সই হওয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করল সিপিআই(এম)। দলটির পলিটব্যুরোর পক্ষ থেকে ওই চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে,‘ভারত ওই চুক্তি সই করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সামরিক মিত্রে পরিণত হচ্ছে। ভারতের ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে মার্কিন সেনাবাহিনী। অন্য কোনো দেশে অভিযান চালানোর সময় মার্কিন সেনারা ভারতের ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে এ ধরণের চুক্তি সই করে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সামরিক স্বাধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে মোদি সরকার।’

সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর পক্ষ থেকে সমস্ত দেশপ্রেমিক শক্তিকে ওই চুক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।



কেরির টুইট বার্তা




ঢাকা সফরে এসে দু'টি টুইট বার্তায় সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করে জন কেরি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতির ইতিহাস রয়েছে৷ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত৷'

এই টুইটের কয়েক মিনিট পরে কেরি আরেকটি টুইট করেন৷ এই টুইটে তিনি লেখেন, ‘নিরাপত্তা ইস্যু ও চরমপন্থি সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় সহযোগিতা নিয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে৷'

কিন্তু বাংলাদেশ কি করলো ?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্যারিফ আইন সংশোধনের বিলে সই করেছেন৷ এর ফলে বাংলাদেশে নির্যাতিত নারীদের দিয়ে তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে পারবে না৷ সেই বিষয়ে কিছুই আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ। যে আওয়ামীলীগ কিছুদিন পূর্বে জন কেরিকে বিএনপি জামায়াতের লোক এবং মার্কিন রাষ্ট্র দূত মজিনাকে কাজের মেয়ে মর্জিনা উপাধি দিয়েছিলো। সেই আওয়মীলীগ ধানমন্ডিতে যেয়ে বইয়ে স্বাক্ষর করার কারণেই এখন কেরির প্রশংসায় ভেসে যাচ্ছে !!!

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেপথ্যের খেলা।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরান সরকার যুদ্ধ পরিস্থিতির উপযুক্ত ভাবে পরীক্ষা করেছে. ইরানের রকেট উন্মুক্ত সমুদ্রে লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম. “আকাশ থেকে সমুদ্র” ছাড়া এই ধরনের রকেট রয়েছে “ভূমি থেকে সমুদ্র” ও “ভূমি থেকে ভূমি” ধরনের, সেগুলোর পরীক্ষা আগেই সফল ভাবে পরীক্ষা শেষ করেছে।তাছাড়া বিমান থেকে নিক্ষেপ করার উপযুক্ত “নাসর্” ডানাওয়ালা রকেট পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছাং ওয়ান ছুয়ানের সঙ্গে গত সোমবার বেইজিং সফররত ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নগো সুয়ান লিচ বৈঠক করেছেন।বৈঠকে ছাং ওয়ান ছুয়ান বলেন, ভিয়েতনামের ভাল প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র চীন। চীন ভিয়েতনামের সঙ্গে বাহিনীর যোগাযোগ, রাজনীতি, সামরিক কৌশল, প্রতিরক্ষা ও বহুপক্ষীয় নিরাপত্তাসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চেষ্টা চালাতে চায়।

রাশিয়া ও কাজাখস্তান দু দেশের রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং নুরসুলতান নজরবায়েভের আলাপ-আলোচনার ফলাফলের ভিত্তিতে সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সম্পর্কে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গত ৩ বছর পূর্বেই।


ডিসেম্বরে জাপান সফরে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন

প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ স্থানীয় গণমাধ্যমকে পুতিন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে’র মধ্যে অনুষ্ঠেয় সংলাপের বিষয়টি গত মঙ্গলবার অবহিত করেন। একটি অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকের পাশাপাশি দু’নেতা আগামী শুক্রবার ভ্লাদিভস্তকে সাক্ষাত করবেন।

চারটি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিদ্যমান বিবাদের কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান এবং রাশিয়ার মধ্যে আর কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি।

জাপানে উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা নামে পরিচিত এই দ্বীপ্পুঞ্জগুলো রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জাপান সরকার এই দবীপ্পুঞ্জগুলো ঐতিহ্যগতভাবেই দেশটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাবি করে। দেশটি বলে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দ্বীপপুঞ্জগুলো অবৈধভাবে রাশিয়া দখল করে রেখেছে।

রাশিয়া প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, মস্কো এবং টোকিও, ইতোমধ্যেই মিস্টার পুতিনের সফরের দিন-তারিখের বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে এবং জাপানের তরফ থেকে প্রস্তুতি গ্রহণের পরই তা ঘোষণা করা হবে।

“কিন্তু এখানে হিসাবের মধ্যে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে যে, আধুনিক ও খুবই দ্রুত সঙ্কুচিত হয়ে আসা বিশ্বে ভারত মহাসাগর সংজ্ঞাবহ হয়ে দাঁড়াচ্ছে শুধু নিজের কারণেই নয়, বরং একটা আরও প্রসারিত এলাকার অংশ হিসাবেই, যেখানে সমগ্র বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রই এবারে সরিয়ে আনা হচ্ছে, যাকে বহুল প্রচারিত স্ট্র্যাটেজিক দিক-পরিবর্তন বলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বলা হয়েছে, আর যা এবারে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাতে সরে যাচ্ছে. এর ফলে এই এলাকায় আমেরিকা ও চিনের পরস্পর বিরোধ বেড়ে চলেছে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে নিজেদের কাজ অন্যের হাত দিয়ে করিয়ে নেওয়ার, চিনকে এই এলাকার অন্যান্য দেশের উপরে লেলিয়ে দিয়ে. তার মানে দাঁড়াচ্ছে যে, এই এলাকা এবারে এক বিপজ্জনক রক্ত রেখার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, যার পরে শুরু হচ্ছে শান্তি ও বৃহত্ আকারের যুদ্ধের সীমানায় ভর সামলানোর খেলা”

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মালদ্বীপে এক অভ্যুত্থান হয়েছিল, যেখানে ভারত পন্থী রাষ্ট্রপতি মোহামেদ নাশিদকে ক্ষমতা থেকে অপসৃত করা হয়েছিল. মনে হয়েছিল যে, এই এলাকায় শক্তির ভারসাম্য চিনের পক্ষেই চলে গিয়েছিল. পরবর্তী কালের ঘটনা মনে হয়েছিল যে, এটারই যেন প্রমাণ: মালদ্বীপের নবনিযুক্ত প্রশাসন দেশের রাজধানী মালে শহরে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত চুক্তি ভারতীয় কোম্পানীর সঙ্গে বাতিল করে দিয়েছিল. তার পরে যখন নাশিদ আবার ক্ষমতায় ফেরার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল অবশ্যম্ভাবী, তখন প্রশাসন নির্বাচনের প্রথম পর্বের ফলাফল বাতিল করে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিল. তারপরে ব্যবহার করেছিল প্রশাসনিক চাপের কৌশল ও সব রকম ভাবে নাশিদ যাতে ক্ষমতায় ফিরতে না পারে, তারই ব্যবস্থা করেছিল. ফলে দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন আবদুল্লা ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম – যিনি এই দ্বীপের প্রাক্তন স্বৈরাচারী শাসক মামুন আবদুল গাইয়ুমের সত্ভাই, যার শাসনের সময়ে এই দ্বীপপূঞ্জ এলাকায় চিনের প্রভাব বেশী করেই বেড়ে গিয়েছিল।

কিন্তু ২০১৩ সালের শেষদিকে ভারত খুবই শক্তি প্রয়োগ করে চেষ্টা করেছে মালদ্বীপকে নিজেদের প্রভাবের কক্ষপথে ফিরিয়ে আনার. ডিসেম্বর মাসে দিল্লীতে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোহামেদ নাজিম গিয়েছিলেন. ভারতের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে যাঁরা আলোচনা করেছেন, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ. কে. অ্যান্টনি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভারত আগের মতই মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা বিষয়ে প্রধান সহকর্মী দেশ হিসাবে রয়েছে. দুই প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর আলোচনার ফলাফল চুক্তি হিসাবে স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি আবদুল্লা ইয়ামিনের সফরের সময়ে. প্রাথমিক ভাবে এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ডিসেম্বর মাসের শেষে, কিন্তু তারপরে তা জানুয়ারী মাসে পিছিয়ে যায়। এর পর চীন এবং উত্তর কোরিয়া সব থামিয়ে দেয়।

উত্তর কোরিয়া সীমান্ত মজবুত করছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছেন উচ্চ মাত্রার যুদ্ধ-প্রস্তুতি বজায় রাখতে, এ উপলক্ষে যে, যুদ্ধ শুরু হতে পারে যুদ্ধ ঘোষণা না করেই।


উত্তর কোরিয়ার সরকার নিজেদের সীমান্ত আরও মজবুত করছে ও চিনে নিজেদের গুপ্তচর সংস্থার লোকদের পাঠিয়েছে, যাতে দেশ থেকে উত্তর কোরিয়ার জনগনের পালানো বন্ধ হয়।

সেই হিসাবে ভারত হবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একটি বাহক। এর পর ভারতের বুকে বসে আঘাত করবে মার্কিন বাহিনী। তখন ভারতের কিছুই করার থাকবে না।

বিষয়: বিবিধ

২৫৪০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

377049
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:০৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
377061
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:৫৩
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

এভাবেই বিশ্ব এগিয়ে যাবে গজওয়ায়ে হিন্দের পথে
377085
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সকাল ০৭:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : ভারতকে টুকরো টুকরো হতে দেখলে শান্তি পাব

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File