অ্যামোনিয়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নাই তার পর ও পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের চুক্তি করে বাংলাদেশ !!
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৩ আগস্ট, ২০১৬, ০৩:৫১:২৭ দুপুর
চট্টগ্রামে অ্যামোনিয়া গ্যাস ধারণ ক্ষমতার ট্যাংক বিস্ফোরিত লিকিং থেকে শিক্ষা নেয়া হবে কি ? অ্যামোনিয়া গ্যাস থেকে রক্ষার উপায় নাই , সেই দেশে পারমাণবিক চুল্লি !!!
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি সার কারখানায় অ্যামোনিয়াম বার্নাল বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে।
ট্যাংক ফেটে ছড়িয়ে পড়া অ্যামোনিয়া গ্যাসে আশে পাশের মানুষ সাথে সাথে অসুস্থ হয়ে যায়। অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সেখানে মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় অ্যামোনিয়া ছিল। বিস্ফোরণে সেখান থেকে ছড়ানো গ্যাস আশাপাশে ঘন কুয়াশার মতো ভেসে ছিল।
দুর্ঘটনার পর অ্যামোনিয়া গ্যাস নদীর পশ্চিম পাড়ে চট্টগ্রাম নগরের বন্দর ও হালিশহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে এ দুর্ঘটনার পর শহরের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাসের কারণে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেশ কয়েকজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাট এলাকার উল্টো দিকে কর্ণফুলী নদীর পূর্ব পাড়ে ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
গ্যাস নিঃসরণ এবং ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে পানি ছিটিয়ে দেয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গ্রাউন্ড মনিটর এবং টুইন ওয়ান গ্রাউন্ড ফেইজের মাধ্যিমে পানি ছিটিয়ে গ্যাস সরানো হয়েছে। এতে সেই কুশায়ার ঘনত্ব কমতে কমতে রাত ৪টার দিকে ৬০ শতাংশে আসে। সকাল ৮টা নাগাদ ১০ শতাংশে নেমে আসে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি
পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে নির্মানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে পাবনার রূপপুরে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশি মুদ্রায় রাশিয়ার কাছ থেকে নেওয়া ৯১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার শুধু সুদ বাবদই সরকারকে ফেরত দিতে হবে ৬৯ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। এর পর বাংলাদেশের কতজন আছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষনা বেক্ষনের উপযুক্ত এবং পরিবেশ ?এ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে চুল্লি নির্মান আত্মহত্যার শামিল। ইতোমধ্যেই পৃথিবীবাসি বেশ কয়েকটি পারমানবিক দূর্ঘটনার সাক্ষি। ফুকুশিমার মতো দূর্ঘটনা ঘটলে কি পরিস্থিতি হতে পারে ?
পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লির দুর্ঘটনার ফলে ক্যান্সারজনিত রোগের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। যেসব স্থানে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে সেসব স্থানে জন্ম নেয়া সকল শিশুই শারীরিক প্রতিবন্ধীকতার শিকার হয়, জমির উর্র্বরতা চিরদিনের জন্য বিনষ্ট হয়। পারমাণবিক চুল্লিতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার পর সৃষ্টি হয় তেজস্ক্রিয় বর্জ্য যা জীবজগত ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপদজনক।
চেরনোবিল বিস্ফোরণ কি মনে আছে ?
১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত ১টা ২৩ মিনিটে ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অবস্থিত পরমাণু কেন্দ্রটির চতুর্থ (বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট রিয়্যাক্টরের সংখ্যা ৪টি) রিয়্যাক্টর থেকেই দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে মানুষের বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি জাত দুর্ঘটনা ঘটেছিল, কয়েকটি তাপ উত্পাদিত বিস্ফোরণে রিয়্যাক্টর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল. বিশেষজ্ঞ দের মতে পরিবেশে পারমানবিক পদার্থ বেরিয়ে পড়েছিল প্রায় পাঁচশ টি ১৯৪৫ সালে হিরোসিমার উপর আমেরিকার ফেলা পারমানবিক বোমার সমান। উৎপাদিত শক্তির পরিমাণ স্বাভাবিক পর্যায়ের ১০০ গুণ হয়ে যায় এবং দুটো বড় পর্যায়ের বিস্ফোরণ ঘটে শক্তি প্রশমিত হয়। এই বিস্ফোরণ চুল্লীর তেজস্ক্রিয় রক্ষাকারী ডোম আকারের ছাদ ধ্বংস হয়ে যায় এবং চুল্লীর মধ্যের তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলো বাইরে বেরিয়ে যায়।
সরকারি তথ্যমতে, দুর্ঘটনার কারণে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে ছিল ছয় লক্ষ শিশু। এই দুর্ঘটনার ফলে ২০০বিলিয়ন ডলারের সমমান ক্ষতি হয়েছিল।
বর্তমানে চেরনোবিল শহরটি পরিত্যক্ত এবং প্রায় ৫০ মাইল এলাকা জুড়ে বলতে গেলে কেউ বাস করে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চেরনোবিলের ধ্বংসাবশেষে থাকা গলিত প্রায় ২০০ টন পরমাণু জ্বালানি থেকে যে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়েছে তা হাজার বছরেও সম্পূর্ণ দূর হবে না।
বিষয়: বিবিধ
৩৭৩২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গ্রাউন্ড মনিটর এবং টুইন ওয়ান গ্রাউন্ড ফেইজের মাধ্যিমে পানি ছিটিয়ে গ্যাস সরানো হয়েছে। এতে সেই কুশায়ার ঘনত্ব কমতে কমতে রাত ৪টার দিকে ৬০ শতাংশে আসে। সকাল ৮টা নাগাদ ১০ শতাংশে নেমে আসে।
তাহলে পারমাবিক চুল্লি র কি হতে পারে ? যেখানে জাপান এখনো পূর্ণতা পাচ্ছে না , সেখানে বাংলাদেশ ? তাও বিদেশ নির্ভর !!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন