কাশ্মির ইস্যুতে ওআইসি ও জাতিসংঘ প্রস্তাব। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সরাসরি সক্রিয় রয়েছে ২৬টি ছোট ও বড় রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২২ আগস্ট, ২০১৬, ০২:২৮:০০ দুপুর
কাশ্মীরের জনতার পক্ষে লড়াই হবে জাতিসংঘে।
* জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতকে আলোচনার আমন্ত্রণ পাকিস্তানের।
* জাতিসংঘের মহাসচিব কাশ্মির বিষয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
* ওআইসি মহাসচিব জানিয়েছেন - কাশ্মীরি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব অনুযায়ী এর সমাধান বের করা উচিত।’
* ওআইসি মহাসচিব বলেছেন, কাশ্মির ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। বরং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিষয়।’
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সরাসরি সক্রিয় রয়েছে ২৬টি ছোট ও বড় রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং দল। এইসব দল ও গোষ্ঠী হুররিয়াত কনফারেন্স জোটের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।উগ্র হিন্দুরা যে-কোনোভাবে এ অঞ্চলের মুসলমানদের দুর্বল করতে চাইছে। কাশ্মিরি প্রতিবাদকারী নেতাদের পক্ষ থেকে একনাগাড়ে বনধ কর্মসূচিও চলছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী জোট হুররিয়াত কনফারেন্সের তিন শীর্ষস্থানীয় নেতা সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও মোহাম্মেদ ইয়াসিন মালিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভারতীয় সেনাদের দমন-পীড়নের কারণেই কাশ্মিরে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের জনগণ বর্তমানে সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। সেখানে সমাবেশ ও এমনকি শোক পালনেরও অনুমতি দিচ্ছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।ঘরে ঘরে তল্লাশির নামে হয়রানি ও গুম করা হচ্ছে কাশ্মীরিদের এ অবস্থায় ভারত সরকারের প্রতি কাশ্মিরিদের ক্ষোভ ও ঘৃণা ক্রমেই বাড়ছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে জরুরি অবস্থা ও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বহাল থাকায় এই বাহিনী হত্যা ও ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে নিরপরাধ কাশ্মিরিদের ওপর। এই বাহিনীর ওপর নজরদারিরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ভারত সরকার।
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র মহাসচিব আইয়াদ আমিন মাদানি বলেছেন, “গণভোটকে কারোরই ভয় পাওয়া উচিত নয় বরং কাশ্মিরের জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে এ সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার।”ওআইসি সেক্রেটারি জেনারেল আইয়াদ আমিন মাদানি বলেছেন কাশ্মির ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়।বরং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিষয়।’
রোববার গণমাধ্যমে মহাসচিব বলেছেন, ‘রাজনৈতিক স্তরে কাশ্মির সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভারত শাসিত কাশ্মিরে জনগণের উপর ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত ভারতীয় সরকারের কঠোরতার বিরুদ্ধে অল্প আওয়াজ প্রকাশ্যে মিডিয়াতে আসছে।
মহাসচিব বলেছেন ওআইসি চায়- শান্তিপূর্ণভাবে কাশ্মির সমস্যার সমাধান হোক। কাশ্মির ইস্যুতে ওআইসি একজন বিশেষ উপদেষ্টা ও একটি কনটাক্ট গ্রুপ নিয়োগ করেছে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে এ গ্রুপ নিউইয়র্কে বৈঠক করবে ।
শুক্রবার সেনাবাহিনীর উত্তরাঞ্চলীয় কম্যান্ড কর্মকর্তা লে. জেনারেল ডি এস হুদা এক আবেদনে কাশ্মিরে শান্তি ফেরানোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।নিরাপত্তাবাহিনীই হোক, সরকারই হোক অথবা বিচ্ছিন্নতাবাদী। সবার উদ্দেশেই এই আবেদন।কোনো এক ব্যক্তি বা একটি সংগঠনের পক্ষে এটা সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব কাশ্মির বিষয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করারও প্রস্তাব দিয়েছেন। পাকিস্তান সাফ জানিয়েছে, তারা ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী’ কাশ্মির নিয়ে চলতি মাসের শেষের দিকে আলোচনা চাচ্ছে।
যদিও শুক্রবার ভারতের পক্ষ থেকে দেয়া শর্তকে উপেক্ষা করে পাক পররাষ্ট্র সচিব ইজাজ আহমেদ চৌধুরী ভারতকে ‘কাশ্মির পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সেদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের হাতে এ ব্যাপারে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেয়া হয়েছে।
গত ৮ জুলাই কাশ্মিরের স্বাধীনতার জন্য , মানবাধিকার প্রতিষ্টার জন্য তরুণ সংগ্রামী বুরহান ওয়ানি কে ক্রস ফায়ারে ঠান্ডা মাথায় খুন করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ গ্রূপ। নিহত বুরহান ওয়ানিকে ‘শহীদ’ বলে আখ্যা দিয়েছে তার মা-বাবা সহ সমস্থ জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণ। তার প্রমান লাগাতার কর্মসূচি।
বুরহান ওয়ানির বাবা মুজাফফর ওয়ানি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন - ‘এখানে এমন কোনো তরুণ নেই যাকে সেনারা পেটায়নি। অনেক নারী বিধবা হয়েছেন, তাদের স্বামী নিহত হয়েছেন। আমরা ছেলে হারিয়েছি, কিন্তু আল্লাহ সঙ্গে আছেন। আল্লাহর ওপর আমাদের পূর্ণ ভরসা রয়েছে।ছেলে চলে যাওয়ার কষ্ট তো আছেই। এক ছেলে আগেই চলে গেছে, এবার অন্যজনও বিদায় নিয়েছে। কিন্তু পাক্কা মুসলমান তো সেই যে আল্লাহ্কে ভালোবাসে। যারা তা করে না, তারা সম্পূর্ণ মুসলিম নয়। তারা মুমিন হতে পারে না।’ কাশ্মিরি জনতা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে।
Kashmir is not an internal issue of India: OIC Secretary General
Ensure Implementation of Resolutions on Kashmir: Pakistan to UN
http://kashmirwatch.com/category/news/
বিষয়: বিবিধ
১১৮২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা কাশ্মিরের নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য দোয়া করি।
এরা বরং ভারতের সুরেই গান গাইবে ।
কাশ্মীরের জনগনের উচিত যারা তাদের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে চায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন