আগে জাতির কাছে ক্ষমা চান , তার পর ২০ দলের জোট ভাঙ্গনের শর্ত দিন
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৮ জুলাই, ২০১৬, ০৩:৪৫:৪১ দুপুর
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে গর্তে ফেলে এবার জোট ভেঙে বলবে আরো অনেক কিছুই করতে হবে।
আগে জাতির কাছে ক্ষমা চান , তার পর ২০ দলের জোট ভাঙ্গনের শর্ত দিন।
বাংলাদেশের বুকে জঙ্গির আমদানি এবং জনক দের মুখে শুনা যায় জঙ্গি দমনের হুঙ্কার !!
আওয়ামী লীগ ও বাম দলগুলো ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতের সাথে তত্বাবধায়ক বা কেয়ারটেকার সরকারের দাবীতে যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। দেশে কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শুধু আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য বামপন্থী দলকেও জামায়াতের সঙ্গে সংসদে ও রাজপথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক হয়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে। আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনা ও মাওলানা নিজামীসহ জামায়াতের নেতাদের সাথে বহু রাজনৈতিক বৈঠক ইতিহাসে এখনো আছে। দু’দলের নেতারা প্রকাশ্য বৈঠক করেছেন তার প্রমানও অহরহ রয়েছে।
সেই বৈঠক সমাবেশ গুলোতে তখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন জামায়াত পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরী ও সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত , আমির হোসেন আমু , শেখ সেলিম সহ আরো অনেকে অন্যান্যরা উপস্থিত থাকতেন।
আমি জামায়াতের ও নেত্রী : হাসিনা
সেই কথাটি এখনো জাতীয় সংসদে লিপিবদ্ধ আছে।
অপরাধী হয়ে থাকলে তারা শেখ হাসিনার সাথে যৌথ আন্দোলন করল কিভাবে?
এখন আবার তারাই বলছে জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকারের দল। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে যুগপৎ আন্দোলনের সময় কি তারা ভুলে গিয়েছিল জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী?
জামায়াতের নেতাদের গ্রেফতারের পূর্বে তারা ছিলেন ধর্ম অবমাননা মামলার আসামি। এর পর যুদ্ধাপরাধী !!!
দলীয়করণের মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাধারণ জনগণের এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য আদালতের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। রিমান্ডের ইতিহাস শত দিন পার হয়ে যায়।
২০ দলীয় জোটের ঐক্য দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অটুঁট থাকা জরুরী।
সংবিধান বর্ণিত জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে নিয়ে অমানসিক নির্যাতনের এই কূটকৌশল জনগণ প্রতিহত করবেই।জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য একটা পথ খুঁজে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেই সাথে মাঝে মাঝে ইস্যু দিয়ে বলা হচ্ছে জামায়ের সাথে যারা জোটে আছে তারা অপরাধী। যারা একজন সেক্টর কমান্ডার , স্বাধীনতার ঘোষককে রাজাকার, যুদ্ধ থেকে পলাতক বলতে পারে , তারা জাতিকে কত বানোয়াট কাহিনী বলতে পারে , সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সালাহউদ্দীন কাদের চেীধুরীর ফাঁসি হল। তখন আর আঁতাতের কথা উঠে নাই। এরপর ও যারা বুঝে না তাদের কে কোন কিছুই দিয়ে তাদের মানসিক বিকলাঙ্গতা দূর করা যাবে না।
১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আলী আহসান মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার সাথে বৈঠকের কথা কি শেখ হাসিনার মনে পড়েনা ?
কতশত বার শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার সাথে বৈঠক করেছে তা কি মনে পড়ে?
কিভাবে আওয়ামী লীগ তাদের পুরোনো দিনের কাহিনী ভূলে গেল?
কই তখন তো একবারের জন্যও শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ বলেনি, আপনারা যুদ্ধপরাধী আপনাদের সাথে কোন বৈঠক হবেনা, কোন কথা হবেনা, কোন সমর্থন লাগবেনা। তখন ভাল লেগেছিল এখন খারাপ লাগছে কেন?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা যদি ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধ করে থাকেন তাহলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাদের সাথে বিরতিহীন ১২ বছর ধরে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, সভা সমাবেশ, বাইরে, প্রকাশ্য-গোপনে অসংখ্য বৈঠক ও সাংবাদিক সম্মেলন করলো কিভাবে?
আজ যারা যুদ্ধকালীন বিচারের দাবি করছেন , তারা কি বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ এর নারকীয় গণহত্যার বিচার দাবি করে ? সহজ উত্তর করে না। কারণ কি ?
যেমন জাসদের মাইন্ উদ্দিন বাদল টিভিতে স্বীকার করেছেন - " আমরা মেরেছি , আমরা মরেছি "" এই বক্তবের পর তাদের কেন বিচারের জন্য গ্রেফতার করা হচ্ছে না ?
একটি দেশে বাকশাল হলেও নামমাত্র সরকার ছিল। তার বিরুদ্ধে বেইনি জঙ্গি গণবাহিনী তৈরী করে আওয়ামীলীগের নির্বাচিত জনপ্রতি নিধিকে হত্যা , ঈদের জামায়াতের জঙ্গি হামলা , নিখিল বোমা , ভারতীয় দূতাবাসে হামলা সহ হাজার হাজার জঙ্গি তান্ডবে জাসদ প্রকাশ্য জড়িত ছিল।
একদিকে রক্ষী বাহিনীর তান্ডব , অন্যদিকে জাসদের নিষিদ্ধ গণবাহিনীর জঙ্গি তান্ডব। উভয় পক্ষ বাংলাদেশকে নরকে পরিণত করেছিল। এই সব বললেই বাম পন্থী , জাসদ , আওয়ামীলীগ একটাই কথা বলে এইসব ইতিহাসের বিষয়। ইতিহসের উপর ছেড়ে দিতে হবে। বাহ্ কি তাজ্জব ইতিহাস লোকানোর পায়তারা। বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর মধ্যে জাসদ বেআইনি ভাবে গোপন সংগঠন তৈরী করে সেনা বাহিনীতে হত্যা কান্ড শুরু করে নাই ? আজ সেই হাসানুল হক ইনু বলেছেন,বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদকে ধবংস করতে বদ্ধপরিকর।
রক্ষী বাহিনীর কমান্ডার সহ আওয়ামী নেতারা বলেন গণতন্ত্র !!!
জাতীয় ঐক্যের ডাক ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
জোট ছাড়ার কথা বলার পূর্বে আওয়ামীলীগের জবাব চাই ?
জোট ছাড়ার কাহিনী দিয়ে আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে যে মরণ খেলায় মেতে উঠেছে, বিএনপির সাথে তা করবেনা এর নিশ্চয়তা এক পার্সেন্ট ও নাই।
আজ যে আওয়ামিলীগ বলছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সাথে বৈঠকের প্রশ্নই আসে না। তাহলে কি আওয়ামিলিগ ভুলে গেছে সেই অতীতের ১৬ বছরের জামায়াতের সাথে মহব্বতের রাজনীতির কথা ?
গণতন্ত্র মানে কী।একনায়িকাতন্ত্রে বিশ্বাসী ?
গ্যাঁড়াকল এড়াতে আর কত তামাশা >
তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াও এই কাতারে আছেন। এর সংখ্যা কত হবে জানি না। তবে সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দুই হাজারের মত হবে। তাদের সাজা দিবেন দেন। তারপরেও বলবো জনগণের ভোট জনগণকে দিতে দিন।সাহস থাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়ে একটা নির্বাচন দিয়ে দেখুন কে কত ভোট পায়।
বিষয়: বিবিধ
১৮১৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন