আমরা ভারত বিদ্বেষী নই , কিন্তু ভারতের আগ্রাসনের বিরোধী।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১০ জুলাই, ২০১৬, ০১:০৫:০১ দুপুর
ভারতের জন্য চাহিবা মাত্র দেয়ার এ ব্যবস্থাই পাকাপোক্ত হল ১৫ মে ২০১৬ থেকে। ‘ট্রানজিট’ নামে ভারতের পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে আবার ভারতেই নেয়ার আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা শুরু হয় । বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের মর্যাদা হত্যা করে জল ও স'লপথ ব্যবহার করে ভারত তার এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেভাবে পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাচ্ছে তাকে কোনভাবেই ট্রানজিট বলা না গেলেও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা অজ্ঞাত কারণে এরূপ সুবিধাকে করিডরের পরিবর্তে ট্রানজিট হিসেবে অভিহিত করছে।
আমাদের সরকারও মানুষকে বোকা বানাবার জন্য করিডোরকে ট্রানজিট নামে চালিয়ে দিচ্ছে।
ভারত থেকে রওনা হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করে আবার ভারতেই প্রবেশ, ট্রানজিটের এ রকম দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা বন্ধিত্বের জন্য একটা ভয়ঙ্কর ফাঁদ। এর সঙ্গে তুলনীয় একমাত্র দেশ পাওয়া যায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও লেসেথো। দক্ষিণ আফ্রিকা দিয়ে চারদিকে ঘেরাও থাকা দেশ লেসোথোর সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতা তিক্ত এবং রাজত্বের ফাঁসি।
এ রকম দৃষ্টান্ত পাওয়া কঠিন হলেও এর আগে বাংলাদেশ অনেকবার ‘শুভেচ্ছাস্বরূপ’, ‘মানবিক’ কারণে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে।কিন্তু বিনিময়ে আশ্বাস ছাড়া কিছুই পায়নি বাংলাদেশ। তিতাস নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়েও ভারতের বিদ্যুৎ সরঞ্জাম নিতে দিয়েছে। এবারে শুরু হল শুল্ক বা মাশুলের মাধ্যমে। বিশেষজ্ঞ কমিটি এর হার নির্ধারণ করেছিল টনপ্রতি ১০৫৮ টাকা। ভারত-বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহন করলে প্রকৃতপক্ষে তার খরচ কমবে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ। এ খরচ কমিয়ে যে পরিমাণ লাভ হবে তাদের সেই তুলনায় টনপ্রতি ১০৫৮ টাকা অনেক কমই ছিল। তবে সরকার তা গ্রহণ করেনি, চূড়ান্তভাবে এ হার নির্ধারিত হয়েছে শতকরা ২০ ভাগেরও কম, টনপ্রতি ১৯২ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশের একটি সেতু পর হতেও এর চেয়ে বেশি টাকা টুল দিতে হয় বাংলাদেশে পরিবহণ কে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান চেয়েছিলেন বিনা ফিতেই এসব পণ্য যেতে দিতে, তার ভাষায় এরকম মাশুল চাওয়া অসভ্যতা বলে জানালেন জাতিকে।
অসম গোলামী চুক্তির বিরোধী।
পিন্ডি থেকে স্বাধীনতা এনে দিল্লির কাছে বিক্রির বিরোধী।
১৯৭২ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতে ট্রানজিটের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। এরপর ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ট্রানজিটের বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। তবে ফি নির্ধারণ, অবকাঠামো দুর্বলতাসহ নানা সমালোচনার কারণে ট্রানজিট নিয়ে কেউ আর এগোয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নৌ প্রটোকল চুক্তিতে বন্দর ব্যবহারের বিধান না থাকায় ভারতকে এতদিন তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এলে এই চুক্তি সংশোধন করে বাংলাদেশ। এরপর গত বছর দিল্লিতে মাশুল নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। মূলত এরপর থেকেই ট্রানজিটের বিষয়ে ভারত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বেশি।বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের নাম ব্যবহার করে লাভ ভারতের পেটেই যাবে।
সর্বশেষ দুই দেশের আলোচনার মাধ্যমে ট্রানজিটের রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের চেন্নাই, কৃষ্ণপত্তম, বিশাখাপত্তম, কাশিনাদা, প্যারা দ্বীপ, হলদিয়া ও কলকাতা নৌবন্দর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়বে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মংলা, খুলনা, পায়রা, নারায়ণগঞ্জ, পানগাঁও ও আশুগঞ্জ বন্দরে। বন্দর থেকে পণ্য খালাস হলে বাংলাদেশি ট্রাক সেই পণ্য নিয়ে যাবে ভারতে।
ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত সাতটি রাজ্য এবং অপরাপর অংশের মধ্যে পণ্য চলাচলে ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করতে চায়। বৃহৎ এই প্রতিবেশি ইতোমধ্যে নৌপথে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান হারে ট্রানজিট সুবিধা ব্যবহার করছে। আশুগঞ্জ নদীবন্দর ব্যবহার করে ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ১৯৭২ সাল থেকে পণ্য চলাচলের বিদ্যমান রীতিকে রাজনৈতিকভাবে আরও প্রসারিত করে নিতে পেরেছে ভারত।বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে হবে , হচ্ছে এই জাতীয় বিবৃতি।
২০১০ সালে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বছর ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মধ্যে ট্রানজিটসহ অন্য কয়েকটি বিষয়ে যৌথ ইশতেহার সই হয়। ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশের সড়ক ও রেলপথ উন্নয়নে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার উচ্চ সুদের ঋণও মঞ্জুর করে ভারত। অর্থাৎ উচ্চ সুদের এ ঋণ ব্যবহৃত হবে আমাদের সড়ক-রেলপথ উন্নয়নে, যা ৮০-৮৫ ভাগ ব্যবহৃত হবে ভারতের পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে।
যৌথ ইশতেহারের কার্যকারিতা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভারতকে কথিত ট্রানজিট দিতে হলে স্থল, নৌ ও রেলপথসংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও নির্মাণ বাবদ এক প্রাথমিক সমীক্ষা কাজ বাংলাদেশ সরকার নিয়োজিত কোর কমিটি সম্পন্ন করে এবং প্রথম সমীক্ষায় দেখা যায় ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে রেলপথ ব্যয় হবে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এখানে বাংলাদেশ কত হাজার বছরে সব সুদ দেন পরিশোধ করতে পারবে সেটা হিসাব করলেই দেখা যায়। মূলত ভারত সুদ পাবে , সেই সাথে বাংলাদেশের ভূমি যেমন খুশি তেমন ব্যবহার করবে।
ট্রানজিট শব্দটি যেহেতু রাজনৈতিক স্পর্শকাতর তাই ‘কানেকটিভিটি’ নামে জাতিকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকা ও আগের বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তিস্তা নদীর পানি দুই দেশ ৪০ : ৪০ শতাংশ এবং নদীর মধ্যে সব সময় ২০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রেখে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু ড. মনমোহন সিংয়ের ২০১১ সালে ঢাকা সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাগড়ার দোহাই দিয়ে সেই চুক্তিকে হিমাগারে পাঠিয়ে দিয়ে ড. মনমোহন ঢাকা সফরের সমাপ্তি টানেন। বাংলাদেশ হয়ে গেলো তামাশার রাষ্ট্র। কিছুই পায়নি , কিন্তু উজাড় করে দেয়ার পথটি খুলে রেখেছে বাংলাদেশ।
ভারতজুড়ে আন্তঃনদীসংযোগ প্রকল্পের যে মহাপরিকল্পনা রয়েছে, তারই অংশ হিসেবে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যেও তিস্তা-গঙ্গা-মানস-সংকোষ নদীসংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে বলে ভারতের পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয় গত ১৩ জুলাই। এ দিকে দেশটির পানিসম্পদ মন্ত্রী সানোয়ার লাল জাট জানিয়েছেন, তার মন্ত্রণালয় আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার সরকারের সাথে আলোচনা করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদীসংযোগ প্রকল্প ‘মানস-সংকোষ-তিস্তা-গঙ্গার কাজ শুরু করবে। তিনি আরো বলেছেন, এ সংযোগ প্রকল্প শুধু এ অঞ্চলের কৃষি ও পানিপ্রাপ্যতাকেই সহজ করে তুলবে না, একই সাথে তা দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে বিপুল পানি চালান করবে। (দৈনিক ইত্তেফাক ২২-৭-২০১৫)। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানালেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে খুব দ্রুত চিঠি পাঠাচ্ছেন তিনি।কিন্তু এর পর সব গায়েব। লক্ষ করার বিষয়, পূর্ববর্তী মনমোহন সরকার বাংলাদেশের সরকারকে বারবার এ আশ্বাসই দিচ্ছিল যে, বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এবং বাংলাদেশের কোনো রকম অসুবিধার কারণ, এমন কোনো কার্যক্রম ভারত সরকার আদৌ গ্রহণ করবে না। মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের এ বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞাত থাকার কথা। তিনি চিঠি লেখালেখি করে কালক্ষেপণ না করে জরুরি ভিত্তিতে ভারত সফরে গিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনে নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাৎ করে জানতে চাওয়া উচিত, এ ধরনের অন্যায় ও বাংলাদেশের জন্য জীবন-মরণ কর্মকাণ্ড বন্ধে ভারত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন, যে বিষয়ে পূর্ববর্তী কেন্দ্রীয় সরকার বারবার বাংলাদেশ সরকারকে উচ্চতম পর্যায়ে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এক এক করে বাড়িতে এনে ভারতের হাতে সব তুলে দিচ্ছে বাংলাদেশ। বিনিময়ে সীমান্তে লাশ ছাড়া তেমন কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।
পণ্যের শুল্ক, সড়ক ও বন্দর ব্যবহারের জন্য তিনটি পর্যায়ে ফি বা মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে।বাংলাদেশ-ভারত নৌ ট্রানজিট আরেকটি অসম চুক্তির মাধম্যে বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন।
প্রতি মেট্রিক টন পণ্যের জন্য শুল্ক ফি ধরা হয়েছে ১৩০ টাকা, রোড চার্জ প্রতি কিলোমিটারে ৫২ টাকা ২২ পয়সা, বন্দর ব্যবহারের জন্য ১০ টাকা পাবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ১৯২ টাকা দিয়ে ভারতের এক মেট্রিক টন পণ্য বাংলাদেশ দিয়ে আবার ভারতে যাবে।
ভারত যদি ট্রানজিট না নিয়ে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি (পশ্চিমবঙ্গ), শিলং (মেঘালয়) হয়ে সড়কপথে আগরতলায় পণ্য নেয়; তবে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটারের মতো পথ পাড়ি দিতে হতো। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ট্রানজিট নেওয়ায় দূরত্ব দাঁড়ায় ৫০০ কিলোমিটারের মতো। ফলে টনপ্রতি ১৯২ টাকা মাশুল ফি দেওয়ার পরেও ভারত কম খরচে এখন থেকে পণ্য পাঠাতে পারবে।
নকশা , মালামাল , তদারকি সব ভারত করবে , বাংলাদেশ তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তাহলে সেটা নগ্ন আগ্রাসন নয় কি ? ক্রেতা তার ইচ্ছে মত কিনবে , সেখানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাধ্য করা হয়েছে একমাত্র ভারত থেকেই আনতে হবে।
মিডিয়াতে হাজির হয়ে সড়কের বিষয়ে কথা বলার চেয়ে শুধু আমরা শুনতে থাকি, এতে বাংলাদেশের বিপুল লাভ হবে, কানেক্টিভিটি বাড়বে, ট্রাকচালকরা খাবার কিনবে, যাত্রীরা থাকবে- ঘুরবে, আমাদের রাস্তা-বন্দর কত কত ব্যবহারের সুযোগ পাবে, এতে অবকাঠামোর উন্নতি হবে ইত্যাদি। এগুলো সবই ‘বাইপ্রোডাক্ট অন্ধকার কাহিনী , গল্প ছাড়া আর কি হতে পারে।
ভারত দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে উচ্চহার সুধে। যদিও পুরো টাকার অংশ না দিয়ে বাংলাদেশ তাদের কর্তৃত্বে, তাদের জিনিসপত্র কিনে, তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশের রেল ও সড়কপথ, বন্দর উন্নয়নের জন্য। ভারতের কাছে জিম্মি করে এমন সুদের কারবার জানি না কোন জংলী দেশে আর আছে কি না সন্দেহ। একেই বাংলাদেশের বিরাট অর্জন হিসেবে বলেন অনেকে। কিন্তু অবকাঠামোর নতুন বিস্তার করতে কতটা কৃষিজমি, জলাশয়, অরণ্য ধ্বংস হবে , ভূমি নষ্ট হয়ে যাবে, সেটার হিসাব জনগণের জানা নেই। সড়ক, রেল ও নৌপথে ভারতের পণ্য পরিবহন পুরোদমে শুরু হলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ কীভাবে হবে তারও হিসাব নেই। বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অসম চুক্তিই ফাঁসি হয়ে থাকবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য।
অনেকে এ ধরনের যোগাযোগকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তুলনা করেন। কিন্তু কেউ বলে না মূল খিনি। ভালো করে বিশ্লেষণের দরকার হয়না। সহজেই অনুমান করে দেখুন বাংলাদেশ চারদিকে কি করে আগ্রাসী হামলার মুখে।
প্রথমত, এ যোগাযোগ ভারত থেকে ভারতে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে এ রকম কোনো ঘটনা নেই, যেখানে এক দেশ দ্বিতীয় আরেক দেশের মধ্য দিয়ে নিজ দেশেই আবার যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, ইউরোপের প্রতিটি দেশের সঙ্গে প্রতিটি দেশের স্বার্থ স্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে সুরক্ষিত। তাদের বাণিজ্যি চুক্তি শক্তিশালী , রাষ্ট্রের ভিতরের নিরাপত্বা নিজ নিজ সরকার নিশ্চিত করেছে। সব সিদ্ধান্ত ও চুক্তি বহুল আলোচনা এবং বিতর্কের মাধ্যমে গৃহীত। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে ভারতের অসম এবং আগ্রাসী চুক্তিতে এখানে তার কোনো লক্ষণ নেই।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশের তুলনায় ভারত যে ক্ষমতা ও সুবিধা ভোগ করে, সেই ক্ষমতায় ভারত হয়ে গেলো প্রভু রাষ্ট্র আর বাংলদেশ পরিণত হলো দাস রাষ্ট্রে। যে ভারসাম্যহীন ক্ষমতার সম্পর্ক, সে রকম অবস্থা কোনো দু’দেশের মধ্যে সেখানে নেই। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যা ঘটছে তা আসলে আগ্রাসন। যে কোন দিন ভারত বলবে তাদের পণ্যের নিরাপত্বার জন্য বাংলাদেশের ভিতরে তাদের বাহিনী পাহারা দেবে , তখন বাংলাদেশ কি করবে সেটা চুক্তির কোথাও নাই। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের আগ্রাসন কোন কথিত চেতনা দিয়ে বিক্রি করা যাবে না। যদি সেটা বিক্রি হয়ে যায় , তাহলে বাংলাদেশের মানুষের গলায় ফাঁসি লাগানো থাকবে কয়েক শত বছরের জন্য।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৯৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ হয়ত এমন ব্যবস্থাই করে রেখেছেন সামনের দিন গুলোতে যেখানে বাংলাদেশকে নিয়ে অতিরিক্ত নাক গলানো তাদের পুরো মাথাতেই ইনফেকশন ছড়িয়ে দেবে ।
আপনার লিখার হেডিং পড়ে মনে হয়েছে এ যেন চমৎকার এক ঠকে যাওয়া আওয়ামী স্যেকুলারের ড্রয়িং রুমে বসে উল্লেখ করা ডিপ্লোমেটিক এক স্ট্যেইটমেন্ট। আর লিখার ফ্যাক্টস ফিগার ও যুক্তিসমূহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সেন্স এ মানান সই হলেও - তা বুঝিবা র্যাব বিজিবি ও গওহর রিজভীদের চোখে জংগী তৈরীর উপাদান হিসাবে বিবেচিত হবে - স্পেশিয়ালী যখন কোন এক মাথামোটা নুর হোসেন টাইপের জাতীয়তাবাদী ঐ ট্রানজিটস্থ বাহনে হামলা করে বসবে।
কিন্তু আমি ভাবছি কে এই আমরা যারা ভারতের আগ্রাসনের বিরোধী কিন্তু বিদ্বেষী নয়? আগ্রাসন হলে তার প্রতি মানুষের বিদ্বেষ না পোষন করার কারন কি কি হতে পারে? কেন?
এই দেশের মানুষ কি গান্ধির ধর্মে দিক্ষা নিয়েছে না কি মার্টিন লুথারের অনুসারী হয়েছে? না কি গৌতম বুদ্ধের অনুসারীতে পরিনত হয়েছে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন