আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দিবস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ ভারতের হিন্দুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০১ জুলাই, ২০১৬, ০১:১৩:১৬ দুপুর



”১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ কলিকাতা গড়ের মাঠে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়।”

‘১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ গড়ের মাঠে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিস্ঠার বিরুদ্ধে হিন্দুরা প্রতিবাদ সভা ডাকে। প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ। কারণ তিনি ছিলেন জমিদার। তিনি মুসলমান প্রজাদের মনে করতেন লাইভ স্টক বা গৃহপালিত পশু’( শ্রী নীরদ চৌধুরী, দি অটোবায়োগ্রাফী অব এ্যান আননোন ইন্ডিয়ান)।

১৯১২ সালে ১৬ই ফেব্রুয়ারী বড় লাটের সাথে বর্ধমানের রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিমন্ডলী সাক্ষাত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিস্ঠা না করার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করেন।( রিপোর্ট অব দি ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি কমিশন) আরও বহু রেফারেন্স আমার কাছে আছে।

ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন সে সময়ে। ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ তার ঢাকা সফর শেষে কলকাতা প্রত্যাবর্তন করলে ১৯১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল তার সাথে সাক্ষাৎ এবং ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতামূলক একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।

ভারতের যে ২২ জন ‘মহাজ্ঞানী ব্যক্তি’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে এক নম্বরে নাম ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কলকাতার গড়ের মাঠে যে সভা হয়, তাতে সভাপতিত্ব করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য মুসলিম এবং

ঢাকার নবাবদের অবদান ছিল। তখন ঢাকার হিন্দু এবং ভারতের হিন্দুদের বিরোধিতা কে তুচ্ছ করে মুসলিম ও

ঢাকার নবাবদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আশুতোষ মুখার্জীর (রবীন্দ্রনাথের ভাইঝি জামাতা) নেতৃত্বে সেই সময়কার ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করার জন্য ১৮ বার স্মারকলিপি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। নীচতা এত নীচে নেমেছিল যে, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্রুপ করে বলতেন মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়। ( সূত্র: জীবনের স্মৃতিদ্বীপে: ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদার)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বিরোধী ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আর রাজনীতিক সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী। ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কী মূল্যে অর্থাৎ কিসের বিনিময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা থেকে বিরত থাকবেন?

বিষয়: বিবিধ

২৪২৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

373678
০১ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০২:১৪
ক্রুসেড বিজেতা লিখেছেন : হায়রে বঙ্গদেশের চেতনার সন্তানেরা ! অথচ এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি নজরুলের চেয়ে রবীন্দ্র প্রীতি চরমে !!
373686
০১ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৩৯
তরবারী লিখেছেন : তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।
373687
০১ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৩৯
শেখের পোলা লিখেছেন : সেই রবীন্দ্র নাথ নাকি না জম্মালে বাঙ্গালীর অস্তিত্বই থাকত না,হায় চামচার দল। আবার তারই লেখা আজ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত,আর তাকে নিয়ে মাতামাতির কোন শেষ নেই। হায়রে বাঙ্গালী মুসলীম!
373715
০২ জুলাই ২০১৬ রাত ০২:৪১
কাঁচের বালি লিখেছেন : রবীন্দ্র নাথ এর জন্ম , মৃত্যু দিনে আমাদের বাংলাদেশে পুঁজো না করলে সুশীল দের পেটের ভাত হজম হয় না আসল ইতিহাস জানানর জন্য ধন্যবাদ ।
373969
০৫ জুলাই ২০১৬ রাত ০২:৫৮
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : এত বিরোধিতার পরও ঢা বি তে রবীন্দ্রভক্তই বেশি..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File