ডিজিটাল সরকারের দেয়া বই পড়ার অযোগ্য ।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০১:৩৮:৪৮ রাত



এদিকে যারা সরকারি বই পায়নি তারাও অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন। কারণ ২০১৪-২০১৫-২০১৬ সালের বই মিলিয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর হাতে সরকারি বই দেয়া গেছে। আর বাকীরা সরকারি বই পায়নি বলে শিক্ষার্থীদের দেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।



ডিজিটাল সরকারের দেয়া বইয়ের ভেতরের পাতা নেই।যে কয়েকটি পাতা আছে সেখানে বানান ভুল।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হচ্ছে উইপোকা খাওয়া পড়ার অযোগ্য বই।

সরকারের দেয়া অত্যন্ত নিম্নমানের পড়ার অযোগ্য বই নিয়ে খুশি হতে পারছে না শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অবিভাবক কেউ। এসব বই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ যারা সরকারি বই পেয়েছেন তাদের দেয়া হয়েছে উইপোকা খাওয়া পড়ার অযোগ্য বই। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব বই বিতরণ না করে ফেলে দেয়া হয়েছে। কারণ এসব বই পড়ারই যোগ্য নয়। রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরকারের দেয়া এবারের বই অত্যন্ত নিম্ন মানের। বইয়ের কাগজের মান ঠিক নেই। অনেক বইয়ের ভেতরের পাতা নেই। ঠিক নেই বাইন্ডিয়েরও। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বানান ভুল। এদিকে যারা সরকারি বই পায়নি তারাও অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন। কারণ ২০১৪-২০১৫-২০১৬ সালের বই মিলিয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর হাতে সরকারি বই দেয়া গেছে। আর বাকীরা সরকারি বই পায়নি বলে শিক্ষার্থীদের দেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত কয়েকদিনে রাজধানীর কয়েকটি স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এ অবস্থা। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে যেসব বই দেয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। এসব বইয়ের ছাপা ঠিক নাই। নিম্নমানের কাগজ। রয়েছে অনেক বানান ভুল।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরকার দেয়া অনেক বই পড়ার উপযুক্ত নয়। এছাড়া তাদের অনেককে দেয়া হয়েছে ২০১৫ এবং ২০১৪ সালের বই। বর্তমান বইয়ের সঙ্গে ঐ বইয়ের পড়ার মিল নেই। আর ২০১৬ সালের যেসব বই দেয়া হয়েছে তাও আবার উইপোকা খাওয়া। অনেক বইয়ের আবার ভেতরের পৃষ্ঠা নেই। আর যারা বই পায়নি তারা ভুগছেন হতাশায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অনেক স্কুলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি বই পায়নি। এসব বিষয় নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অবিভাবকরা।

রাজধানী মুগদাপাড়া মহানগর আইডিয়াল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকরা সরকারি যেসব বই পড়াচ্ছেন তা উইপোকা খাওয়া। অর্থাৎ নতুন বছরের বই হওয়া সত্ত্বেও গোডাউনেই উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে। এসব বইগুলো এমনভাবে খেয়েছে যে শিক্ষার্থীরা এই বই পড়বেন সেই যোগার নেই। স্কুলের পিয়ন রমজান আলী জানালেন এই বই তাদের দিয়ে দেয়া হচ্ছে। রাজধানীর জুড়াইন শেখ কামাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল সেখানেও নিম্ন মানের বই বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণের অযোগ্য হওয়ায় অনেক বই আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেয়া হয়েছে। রাজধানীর উত্তরখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক সংগ্রামকে জানান, এ বছর পড়ার অযোগ্য বই বিতরণ করা হয়েছে। এসব বই নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অবিভাবক কেউ খুশি নন। কারণ ছাপা থেকে শুরু করে ভুলে ভরা বই বিতরণ করা হয়েছে। ভুলে ভরা বই পড়ে তো শিক্ষার্থীরা ভুল শিখবে।

রাজধানীর একাধিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বই না থাকায় তাদের ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের বই দেয়া হয়েছে। এসব বই নিয়ে তাদের কোন লাভ হয়নি। কারণ ২০১৬ সালের বইয়ের সাথে ১৪-১৫ সালের বইয়ের পড়ার মিল নেই। সুতরাং এসব বই দিয়ে শিক্ষার্থীদের এক ধরনের বুঝ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বুঝ দেয়া এসব বই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর মুগদাপাড়ায় অবস্থিত মহানগর আইডিয়াল স্কুল এ- কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তারা যে বই পেয়েছে এসব বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টারগুলোই ছাপায় আসেনি। আর ২০১৪-১৫ সালের অনেক অধ্যায় ১৬ সালের বইয়ে নেই। তাই ১৪-১৫ সালের বই নিয়ে কোন কাজে আসছে না শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাকীব জানায়, তাদের ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ নামক নতুন বছরের বইয়ে অনেক পৃষ্ঠা নেই। তার বইয়ে ১৬ থেকে ২৫ পর্যন্ত পৃষ্ঠা নেই। আবার ৫৬ থেকে ৬৫ নম্বর পৃষ্ঠা নেই। আবার ৮ থেকে ১৭ পৃষ্ঠা নেই। শুধু তার বইয়ে এমন সমস্যা নয়। তার ক্লাসের সবার বইয়ের ভেতরে এমন অনেক সমস্যা রয়েছে। একই ক্লাসের ফয়সাল আহমেদ রাফী জানায়, তার বইয়েরও ২৫ থেকে ৪০তম পৃষ্ঠা ঠিক নেই। অনেক বইয়ে ছাপা ঠিক নেই। ফলে বই পেলেও পড়া যাচ্ছে না।

এই দুই শিক্ষার্থী জানাল, যেসব অধ্যায় খুব গুরুত্বপূর্ণ সেসব অধ্যায়ের সমস্যা হচ্ছে। ফলে বই পেয়েও তেমন কোন লাভ হচ্ছে না।

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া জানালেন, মনে হচ্ছে তড়িঘড়ি করে ছাপতে গিয়ে এ সমস্যাগুলো হয়েছে। এছাড়া সংরক্ষণ ঠিকভাবে না করায় নতুন বছরের বই উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে।



এদিকে সংকটের কারণে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সরকারি বই পায়নি।
নতুন বছরের এক মাস পার হলেও বই পায়নি অনেক শিক্ষার্থী। বিশেষ করে সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ নামের বইটি সব স্কুলে দেয়া হয়নি। আবার কিছু ক্লাসে তিন চার ধাপে বই দিতে হচ্ছে। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিষয়: বিবিধ

১১৪৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

358447
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১০:১০
শেখের পোলা লিখেছেন : ভারতের দক্ষ বিজ্ঞ কারিগরের ফষল৷
358452
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:০৭
হতভাগা লিখেছেন : ইচ্ছাকৃতভাবেই এসব করা হচ্ছে যাতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনার পথ তৈরি হয়ে যায় ।
358533
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শিক্ষার অযোগ্য শিক্ষা যেমন তেমন পড়ার অযোগ্য বই!
358580
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৯:৩৩
কাঁচের বালি লিখেছেন : শিক্ষা ভেতরেও ভেজাল Waiting Waiting

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File