প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী- ‘বিচারপতি মোজাম্মেল ও শামসুদ্দিনের লেখা সাঈদীর রায় অবৈধ, খায়রুলের রায়ও অবৈধ’
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:২২:১৩ দুপুর
বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখাটা বেআইনি[/b
“সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী অবসরে থাকাকালীন সময়ে” অবৈধভাবে জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসোইন সাঈদীর আপিলের রায় লিখেছেন।
একইভাবে “সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনীর যে রায় লিখেছেন তাও অবৈধ। কেননা শপথ শেষ হয়ে অবসরে যাওয়ার পর কোনো বিচারপতি রায় লেখার কোনো এখতিয়ার নেই”।
“ইতোপূর্বে ত্রয়োদশ সংশোধনী সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক যে রায় লিখেছেন তাও অবৈধ। কেননা শপথ শেষ হয়ে অবসরে যাওয়ার পর কোনো বিচারপতি রায় লেখার কোনো এখতিয়ার নেই”।
[b]তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের দেয়া রায় যে অবৈধ ছিলো সেটি আরো স্পষ্ট হয়েছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যের মাধ্যমে।
“সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন গত বছরের ১৬ জানুয়ারি এবং বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী গত বছরের ১ অক্টোবর অবসরে যান । কিন্তু পূর্ণাঙ্গ মাওলানা দেলাওয়ার হোসোইন সাঈদীর রায় দেয়া হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখাটা বেআইনি”।
এখনো প্রধান বিচারপতি থেকে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা পরিবর্তন করবেন না তো ?
অবসরে যাওয়া বিচারপতিরা যে রায় লেখেন তা সংবিধান ও আইনপরিপন্থী: প্রধান বিচারপতি
অবসরে গিয়ে বিচারপতিদের রায় লেখা সংবিধান ও আইনপরিপন্থী
https://shar.es/1hfihC
বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। বাংলাদেশের ২১ তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
গত বছরের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বাণীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তাঁর গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারি দলিল (পাবলিক ডকুমেন্ট)। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান।
এরই মধ্যে বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী অবসরে যেয়ে স্বীকার করেছেন তিনি রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তার রায়েই মাওলানা দেলাওয়ার হোসোইন সাঈদীর ফাসির আদেশ ।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব রয়েছে। লন্ডনে তার নিজের বাড়িও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আত্মসাতসহ দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগও রয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজপথে মিছিল-সমাবেশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও করতে যাওয়ার পরেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় লিখছেন বিতর্কিত সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
গত ১ অক্টোবর অবসর নেওয়ার পরের মাসেই দেখা যায় বিচারপতি মানিক সেই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে ফাঁসি হওয়া জামায়াত নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানাচ্ছেন, যেই সংগঠনটি জামায়াত নেতাদের বিচারের দাবিতে রাজনীতিতে প্রায় দুই যুগ ধরে সক্রিয়।
ছাত্রলীগের সঙ্গে মিছিল-সমাবেশ করার পরেও আপিল বিভাগের রায় লিখে যাচ্ছেন।
বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক চলতি বছরের ১ অক্টোবর অবসর নেন। এরপর গত ২৬ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি মানিক ছাড়াও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানি সেনা বাহিনীকে মুরগি সাপ্লাইয়ের কাজে জড়িত শাহরিয়ার কবির, সহ-সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানি সেনা বাহিনীর কাছ থেকে ড্যানডি( নিরাপদে চলাফেরা করার সনদ ) কার্ড নিয়ে দেশে অবস্থানরত সেই অধ্যাপত মুনতাসির মামুন ও শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এই তিন জন দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী দিয়েছেন। তারা ১৯৯২ সালে গণআদালতে জামায়াত নেতাদর ফাঁসি ঘোষণার সঙ্গেও জড়িত।
বিচারপতি মানিকের ব্যাপারে উচ্চ আদালত এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। বরং প্রধান বিচারপতিকে লেখা তার একটি চিঠিতে দেখা যাচ্ছে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে মিছিল-সমাবেশ করার পরেও আপিল বিভাগের রায় লিখেন।
বিচারপতি মানিকের বিচারের প্রশ্নটিও আসবে। আর আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের মামলার মরনোত্তর বিচার ও তাদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার নৈতিক দায়িত্বও অর্পিত হবে উচ্চ আদালতের উপর।
সংবিধান ও আইনপরিপন্থী রায়ের কার্যকর বেইনি হবেই। কিন্তু যাকে ফাসি দেয়া হয়েছে তাদের জীবন কেন কেড়ে নেয়া হয়েছে ? সেটা একদিন দিনের আলোর মত প্রকাশিত হবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যখন নিজেই বিতর্কিত , তখন আদালতে তার বিচারের ক্ষমতা কি সংবিধান ও আইনপরিপন্থী নয় ?
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজের স্বীকার করেছেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি (পিচ) কমিটির সদস্য ছিলেন যাদের কাজ ছিল একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করা । তাই তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজাকার ।
https://www.youtube.com/watch?v=27uaMLLviVQ
তাহলে কারাগারে রাতের অন্ধকারে সাজানো মামলা দিয়ে বিশেষ গুষ্ঠিকে খুশি ও তাদের কথামত রায়ের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জবাই করার রায়ের বিচারকদের কি হবে ? আইনের উর্ধে কি তারা ?
আমরা যদি বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কথা সত্য ধরি তাহলে জামাত নেতাদের ফাসির রায় অবৈধ এবং তত্ত্বাবধায়ক এমেন্টমেন বাতিল রায় ও অবৈধ।
আর যদি মানিকের কথা সত্য ধরি তাহলে বর্তমান বিচারপতিকে এই মুহুর্তে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অবসরে যাওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর, ‘বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের পরিপন্থী বলে রায় দিয়েছিলেন ।
আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তা কার্যকরও হয়েছে, সেই দুটি রায় দানকারী বিচারপতিদের অন্যতম ছিলেন বিচারপতি মানিক। বিচারপতি মানিক অবসরে যাওয়ার পরছাত্রলীগের সঙ্গে রাস্তায় মিছিলের পরেও রায় লিখছেন ।
বিষয়: বিবিধ
১৯০১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন