মিরপুরের কালশীতে ১০ জন বিহারীকে পুড়িয়ে হত্যায় চেতনার ফেরিয়ালারা জড়িত । বিহারীরা কি মানুষ নয় ? তারা কি বিচার পাবে না ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৩:৩৫:১৫ দুপুর
কোনো যুদ্ধের সময় নয়। একটি দেশের ভেতরে নারকীয় কাজটি করলাম আমরা বাংলাদেশীরা ? নাকি একটি দলের অপকর্মের দায় নিচ্ছে পুরো জাতি ?
স্বাধীন দেশের দাবিদার চেতনার ফেরিয়ালারা কি হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেল ?
যেমন রক্ষীবাহিনী বাংলাদেশীকে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নেজামে ইসলাম , খেলাফত ইসলাম , জাসদ , ইউনিয়ন , ন্যাপ , মুসলিমলীগ সহ আওয়ামীলীগের বিরোধী দলের প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশীকে হত্যা করেছিল। যার বিচারের পথ বন্ধ করে বিল পাশ করেছিলেন মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান।
তেমনি আওয়ামীলীগের সময়ের পুলিশ , আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের জন্য সব জায়েজ ? মাফ ?
৫ জানুয়ারির বিনাভোটের একজন মন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন আওয়ামীলীগের জন্য সব মাফ। কারণ তারা চেতনার বাহক।
পল্লবী থানা পুলিশের প্রত্যক্ষ মদদে কালশী হত্যাকাণ্ড হয়েছে ।
গত ১৪ জুন ভোরে মিরপুরের কালশীতে ১০ জন বিহারীকে পুড়িয়ে মারতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লার নিদের্শে পুলিশ এ মদদ দিয়েছে।’
নারকীয় হত্যার কথা কি মনে আছে ? যখনি কোনো হত্যা কান্ডের সাথে আওয়ামিলীগ , পুলিশ জড়িত তথ্য বের হয়। ঠিক সেই মুহুর্তেই পুরো ঘঠনা আড়াল করে দেয়া হয়।
মিরপুরে বিহারি ক্যাম্পে আগুন দেয়ার আগে তাদের ঘরে তালা মেরেছিল পুলিশ। পরে পুলিশের সঙ্গেই ঢোকে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। এরপর শুরু হয় মুহুর্মুহু গুলি টিয়ার শেল নিক্ষেপ আর পেট্রোল ঢেলে ঘরে ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা। বিহারি পল্লীর কয়েকজন বাসিন্দা এ দৃশ্য দেখে তাদের স্বজনদের বাঁচাতে তালা ভাঙার চেষ্টা করলে তাদেরও গুলি করা হয়। এ সময় বিহারি পল্লীর ভেতর থেকে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করলে তাদের জোরপূর্বক আটকে রেখে মারধর করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারীরা চলে যায়।
সেই সময়ের কিছু খবর -
এদিকে মিরপুর কালশীর ওই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিহারিরা। মঙ্গলবার মোহাম্মদপুর আদাবর সুচনা কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ ও বিহারিদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠকে ৭ দফা দাবিসহ এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়। তারা জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে কোন সুরাহা না হলে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে। বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের বিষয়ে একমত হয়েছেন। তিনি বিহারিদের সাত দফা দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এদিকে বৈঠকে পুলিশ বিহারিদের কোন বিশৃঙ্খলা না করে শন্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দিয়েছে।
এদিকে রাজধানীর মিরপুরে বিহারিদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের। মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত মিরপুর ১১ নম্বর সড়কে থেমে থেমে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিহারি ক্যাম্পের প্রায় শতাধিক বাসিন্দা ক্যাম্পে আগুন ও গুলিতে নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে মিরপুর ১১ নম্বর সড়কে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। একপর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকেরা একজোট হয়ে বিহারিদের ধাওয়া করেন। এরপর দুই পক্ষে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এতে কেউ আহত হওয়ার তাত্ক্ষণিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
আগুন দেয়ার আগে তাদের ঘরে তালা মেরেছিল পুলিশ!
মিরপুরের কালশী এলাকার বিহারি পল্লীতে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে ১০ বিহারিকে হত্যার ঘটনার লোমহর্ষক সব বর্ণনা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিহারিদের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছেই। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার ওই নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে সাংবাদিকরা মিরপুরের বিহারী পল্লীতে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানান, ঘটনার দিন সকালে বিহারী পল্লীতে আগুন দেয়ার আগে তাদের ঘরে তালা মারে পুলিশ। পরে পুলিশের সঙ্গেই ঢোকে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। এরপর শুরু হয় মুহুর্মুহু গুলি টিয়ার শেল নিক্ষেপ আর পেট্রোল ঢেলে ঘরে ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা।
পল্লীর কয়েকজন বাসিন্দা এ দৃশ্য দেখে তাদের স্বজনদের বাঁচাতে তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে তাদেরও গুলি করা হয়। এ সময় পল্লীর ভেতর থেকে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের জোর করে আটকে রেখে মারধর করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারীরা চলে যায়।
বিহারি পল্লীর বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইলিয়াস মোল্যা মসজিদে দাঁড়িয়ে ওয়াদা করেছিলেন তাদের পল্লীতে গ্যাস, পানি বিদ্যুত্সহ সকল আবাসন সুবিধা দেবেন। স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তা কেবল ভোট আদায়ের কৌশল ছিল মাত্র। ওই নির্বাচনের পর তার দেখা না মিললেও তার ক্যাডাররা গিয়েছিলেন ঘটনার দু’দিন আগে বিহারী পল্লীতে, পাশেই তাদের তৈরি রাজু বস্তিতে বিদ্যুত্ সংযোগের জন্য। এতে রাজি না হওয়ায় বিহারিদের উচ্ছেদ ও ব্যাপারটা দেখে নেয়ার হুমকি দেয় ওই ক্যাডাররা। পরে ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে ঢুকে ঘরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারে এক পরিবারের ৯ জনকে। এছাড়া একজন গুলিতে নিহত হয়। ওই ঘটনার পর থেকে পল্লীর বেশক’জন যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাসিন্দারা।
বিষয়: বিবিধ
১১৫১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ..
মন্তব্য করতে লগইন করুন