১১ জানুয়ারী বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন। শেখ হাসিনা আখ্যায়িত করেছিলেন তার লগি-বৈঠার আন্দোলনের ফসল।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১১ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৭:৫৬:২০ সন্ধ্যা



এখানে উলে­খ করতে চাই, ১১ জানুয়ারি ক্ষমতা দখলের আগেও বঙ্গভবনের বিভিন্ন কক্ষে এমএসপি এবং সেনাপ্রধানকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করতে দেখা গেছে।



বঙ্গভবনের ভেতরে ৩টি পিস্তল সরবরাহ


অতি উৎসাহী এমএসপি আমিনুল করিম তখন অফিস থেকে বের হয়ে বঙ্গভবনের গেইটে আসেন। পিজিআর চীফ-এর সাথে এমএসপি’র অনেক বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে পিজিআর চীফকে উদ্দেশ্য করে এমএসপি বলেন, আমি হলাম তোমার উর্ধ্বতন। সুতরাং সেনা আইন অনুযায়ী আমি তোমার পাওয়ার সীজ করলাম। তারপরও পিজিআর প্রধান তাঁর অবস্থানে দৃঢ় ছিলেন। এক পর্যায়ে এমএসপি তিন বাহিনী প্রধানকে তাঁর রুমে চা খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এবং আরো বলেন, তারা কোন মুভ করবে না। এমএসপি এবং পিজিআর চীফ-এর বাদানুবাদের সময় পিজিআর অর্গানোগামের কথা উলে­খ করেন এমএসপি। তিনি পিজিআর চীফকে বলেন, আই অ্যাম নাউ অপারেশনাল কমান্ডেন্ট অব পিজিআর। এক পর্যায়ে উত্তেজনা সাময়িক নিরসন হলে ৩ বাহিনী প্রধানকে চা আপ্যায়নের কথা বলে এমএসপি ভেতরে নিয়ে যান।

তখন স্যান্ডওইচ-এর ট্রেতে করে ন্যাপকিনে মোড়ানো ৩টি পিস্তল তিন বাহিনী প্রধানকে সরবরাহ করেন এমএসপি। কারন বঙ্গভবনে বহিরাগত যে কারো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশে আইনত নিষিদ্ধ। তাই তারা অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এজন্যই বঙ্গভবনের ভেতরে এমএসপি তাদের ৩টি পিস্তল সরবরাহ করলেন।

১/১১ নামের ষড়যন্ত্রের মধ্যে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে শুধু ক্ষমতা দখলের ঘটনা ঘটেনি। বরং ওই অভ্যুত্থানের নকশা অনুযায়ী সংবিধান-বিচার বিভাগ-প্রতিরক্ষা-নির্বাচনী ব্যবস্থা তছনছ করা হয়েছে। স্বাধীন সত্ত্বা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে তাবেদার নতজানু আজ্ঞাবহ যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছে।

মইন ইউ আহমদের ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপট কমবেশি সবাই জানেন। তবে অন্তরালের ঘটনা গুলো এখনো বের হয়ে আসেনি।

২০০৮ সালের প্রথমার্ধের শেষের দিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক এগারর জড়িতদের সমঝোতা হয়। এর ভিত্তিতেই ওই বছরের জুন মাসে প্যারোলো মু্ক্তি পান তিনি। বিদেশ যান । এক এগারর জড়িতদের সাথে সমঝোতা না করে পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।

আওয়ামী লীগ সমঝোতা অনুযায়ী ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্ব নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ওই নির্বাচনে মহাজোট ২৬৩ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩০, জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ ৩, ওয়ার্কাস পার্টি ২ ও এলডিপি ১টি আসনে জয়ী হয়। অন্যদিকে চার দলীয় জোট ৩৩ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে বিএনপি ৩০, জামায়াতে ২ ও বিজেপি এটি আসন পায়। স্বতন্ত্র সাংসদ নির্বাচিত হন ৪ জন।

সেদিনের খলনায়করা স্বাধীনতা বিসর্জনে ব্যবহৃত

২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত আওয়ামী লীগ মহাজোট সরকারের সময় শুরুতে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, ১৪ জন বিডিআর সদস্যসহ মোট ৭৪জন খুন হন।



এক-এগারোর ষড়যন্ত্র


২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী এমএসপি মেজর জেনারেল আমিনুল করিম, ডিজিএফআই, এস এস এফ, নবম ডিভিশন সকলেই ছিলেন সেনা প্রধান মইন ইউ আহমদের ক্ষমতা দখলের পক্ষে ছিল। শুধুমাত্র পিজিআর কমান্ডেন্ট এবং এনএসআই-এর ডিজি ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে ছিলেন। এখানে আরেকটু বলে রাখতে চাই মাঝারি পর্যায়ের কিছু অফিসারও।

সেনা প্রধান মইন ইউ আহমদের গ্রুপে সরাসরি ছিলেন এমএসপি, ডিজিএফআই, এসএসএফ চিফ। এনএসআই-এর ডিজি তাদের পক্ষে ছিলেন না। তাই তারা এনএসআই-এর ডিজির বিরুদ্ধে লেগেছিলেন। প্রায়ই তারা এম এস পি’র রুমে বসে এনএসআই-এর ডিজির বিরুদ্ধে কথা-বার্তা বলতেন।

জেনারেল মঈনের ক্ষমতা দখলকে সমর্থন করেনি। তাদেরকে পরবর্তিতে ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডের আগে বিডিআর-এ বদলী করা হয়েছিল, অর্থাৎ ডাম্পিং করা হয়েছিল। তারা সকলেই ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডে শহীদ হয়েছেন।

৮ এবং ৯ জানুয়ারি ওই দিন দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনের কেবিনেট কক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেস্টা প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ওই মিটিং চলাকালে দুপুর পৌনে ১টায় এমএসপি (রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব) মেজর জেনারেল আমিনুল করিম বললেন ৩ বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে আসছেন। মিটিং চলাকালে এমএসপি কয়েকবার টেলিফোনে কথা বলেন। এমনকি এমএসপি মিটিং থেকে উঠে বাইরে গিয়েও মোবাইলে কথা বলতে দেখা গেছে। বঙ্গভবনে আসার ব্যাপারেই সেনাপ্রধানের সাথে এমএসপি তখন ফোনে কথা বলায় তৎপর ছিলেন।

এক এগারোর খলনায়কদের রাজধানীর চাপ্টার ছিল লগি বৈঠার তান্ডব। সারা দেশে যে করেই হোক তান্ডব চালাতে হবে। তান্ডব দিয়েই মিডিয়া দিয়েই সন্ত্রাস এর পর মূল অপারেশন হবে ক্ষমতা দখলের আগেও বঙ্গভবনে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশে ।

২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর বিএনপি নেৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল।

এর ঠিক দুদিন আগে রাজধানীর পল্টন মোড়ে জাময়াতে ইসলামীর সমাবেশে লগি-বৈঠা নিয়ে হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা কর্মীরা।

এতে ওই দিন সারাদেশে মোট ১৭জন বিএনপি-জামায়াত কর্মী নিহত হন। আর ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর ৩ দিনে নিহত হয়েছিল চারদলীয় জোটের ৫৪ নেতাকর্মী।

এই ঘটনার জের ধরে সাবেক প্রধান বিচারপতি কেএম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন। এতে ক্রমেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে, দেশে নির্বাচনী আবহ শুরু হয়ে যায়।

২২ জানুয়ারি ভোটের দিন ধার্য করে নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়। এ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয়জোট ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট অংশ নেয়।

কিন্তু সাবেক স্বৈরশাসক ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের মনোনয়ন বাতিলকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে।

৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। ৪ জানুয়ারি নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের ওপর পশ্চিমা কূটনীতিকদের গুরুত্ব আরোপ করে। মহাজোট ৭ ও ৮ জানুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।

৭ জানুয়ারি টানা অবরোধ চলাকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী বৈঠক করেন।

অবরোধের শেষ দিন মহাজোট বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে। ৯ জানুয়ারি বঙ্গভবনের আশপাশে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা শুরু হয়।

১০ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিরোধে শেখ হাসিনার হরতাল অবরোধসহ ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা , প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর পিলখানার হত্যা করার ষড়যন্ত্র

১১ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে দেশে গুমোট অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিকাল ৪টায় পূর্বনির্ধারিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক বাতিল করা হয়। তিন বাহিনী প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা বঙ্গভবনে যান। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গভবনে অবস্থান করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিটিভির স্ক্রলে প্রথম জরুরি অবস্থা ঘোষণার কথা জানানো হয়।

রাত ৮টার পর তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশের আইজি, র্যা ব, বিডিআরসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মইন উ আহমেদ সেনাসদরে বৈঠক করেন।

রাত সাড়ে ৮টায় সব উপদেষ্টাকে বঙ্গভবনে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তারা উপদেষ্টাদের ব্রিফ করে পদত্যাগ করতে বলেন। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন ৯ উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন ড. ইয়াজউদ্দিন।

সন্ধ্যার পর থেকেই ‘কিছুক্ষণের মধ্যে রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন’ মর্মে বিটিভিতে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত রাত ১১টা ২০ মিনিটে বিশেষ স্থান থেকে আসা একটি বক্তব্য জাতির উদ্দেশে পড়ে শোনান ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। তাতে প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে তাঁর পদত্যাগ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রেক্ষাপট এবং সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা ছিল। উপদেষ্টাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে বিচারপতি ফজলুল হককে প্রধান উপদেষ্টার অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব দেয়া হয়।

রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। রাজনৈতিক সংবাদ প্রকাশে জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। রাস্তায় নামে সেনাবাহিনী। রাতেই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের ডিজি পদ থেকে মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারকে বদলি করা হয়।

পরদিন ১২ জানুয়ারি নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ শপথ নেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম জিল্লুর রহমান, আবদুল জলিল ও আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, শেখ সেলিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ, এলডিপি সভাপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আব্দুর রবসহ মহাজোটভুক্ত দলের নেতারা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জামায়াত আমির মাওলানা নিজামীসহ চারদলীয় জোটভুক্ত দলের নেতারা এ অনুষ্ঠান বর্জন করেন।

২০১১ সালের ৩০ আগস্ট উইকিলিকসে ফাঁস হওয়া জেনারেল আমিনের বর্ণনায় ১/১১

২০১১ সালের ৩০ আগস্ট উইকিলিকসে ফাঁস হওয়া ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিসের গোপন তারবার্তা থেকে এক এগারর অন্যতম কুশীলব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এটিএম আমিনের ভাষ্য জানা যায়।

ঢাকা ০০০০৬৬ শিরোনামে পাঠানো তারবার্তাটি তুলে ধরা হয় এক এগারোতে বঙ্গভবনে কী ঘটেছিল।

বার্তায় বলা হয়, ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স কাউন্টার টেররিজম (ডিজিএফআই) প্রধান ব্রিগেডিয়ার এটিএম আমিন ১২ জানুয়ারি সাক্ষাত করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। তারবার্তায় বলা হয়েছে, এটিএম আমিনের মতে, তিন বাহিনী প্রধান ও আর্মি চিফ অব স্টাফ অফিসার মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী ও সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মইন উ আহমেদ ১১ জানুয়ারি বিকাল প্রায় ৫টার দিকে প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

ওই বৈঠকে তারা প্রেসিডেন্টকে কোন সময় না দিয়ে উপরের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে বলেন। আমিন দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট সেসব দাবি মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রাক্কালে ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের ডাইরেক্টর জেনারেল মেজর জেনারেল মো. রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে তখনও নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি যে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা।

আমিন বলেন, মেজর হায়দারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তাকে অবসরে যেতে বাধ্য করা হতে পারে। ( বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে অনেকেই মনে করেন)। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে আমিন বলেন, আমরা এ বিষয়টি দেখবো।

আমিন আরো বলেন, প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব এম. মোখলেসুর রহমান চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে তাকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। রাষ্ট্রদূতকে আমিন বলেন, এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের কাছে যেতে সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তকে দু’টি বিষয় প্রভাবিত করেছিল।

সেনাবাহিনী যদি একপক্ষীয় নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে কাজ করে তাহলে তা নিয়ে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের অব্যাহত অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশের ওপর একটি বিবৃতি। জাতিসংঘের স্থানীয় প্রতিনিধির জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনও নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সমর্থনকে সম্পর্কিত করে বিবৃতি দেয়। তাতে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সমর্থনের বিষয়টি উঠে আসে।

শুরুতেই জেনারেল মইন জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ করেন, যাতে জাতিসংঘ একটি চিঠি ইস্যু করে এবং তিনি ওই চিঠি নিয়ে প্রেসিডেন্টকে রাজি করাতে পারেন যে, যদি রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান না করা যায় তাহলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন বাধাগ্রস্ত হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৯৩৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

356673
১১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:০৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
সত্য একসময় প্রকাশিত হবে এবং বিচার ও হবে।
১১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:১৩
296071
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : স্যান্ডওইচ-এর ট্রেতে করে ন্যাপকিনে মোড়ানো ৩টি পিস্তল তিন বাহিনী প্রধানকে সরবরাহ করেন এমএসপি। কারন বঙ্গভবনে বহিরাগত যে কারো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশে আইনত নিষিদ্ধ। তাই তারা অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এজন্যই বঙ্গভবনের ভেতরে এমএসপি তাদের ৩টি পিস্তল সরবরাহ করলেন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা , প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর পিলখানার হত্যা করার ষড়যন্ত্।আওয়ামী লীগ সমঝোতা অনুযায়ী ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্ব নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
356675
১১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:১৭
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : রিদওয়ান কবির সবুজ ভাইয়ের কথাগুলোই কেবল লিখতে যাচ্ছি কিন্তু উনি দেখি আগেই বলে ফেলেছেন।

পৃথিবী এত নিষ্ঠুর একটা দানব যা কখনো কাউকে ছাড়ে না। সে কিছু দিলে তা কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নেয়। সো ওয়েট করি এণ্ড দেখি
১১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:২৩
296072
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : ভালো লাগলো । ধন্যবাদ। কড়ায় গণ্ডায় আদায় হবে ?সেনা প্রধান মইন ইউ আহমদের গ্রুপে সরাসরি ছিলেন এমএসপি, ডিজিএফআই, এসএসএফ চিফ। এনএসআই-এর ডিজি তাদের পক্ষে ছিলেন না। তাই তারা এনএসআই-এর ডিজির বিরুদ্ধে লেগেছিলেন। প্রায়ই তারা এম এস পি’র রুমে বসে এনএসআই-এর ডিজির বিরুদ্ধে কথা-বার্তা বলতেন।

জেনারেল মঈনের ক্ষমতা দখলকে সমর্থন করেনি। তাদেরকে পরবর্তিতে ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডের আগে বিডিআর-এ বদলী করা হয়েছিল, অর্থাৎ ডাম্পিং করা হয়েছিল। তারা সকলেই ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডে শহীদ হয়েছেন।
356682
১১ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৩৮
কাঁচের বালি লিখেছেন : সাধীনতার এতো বছর পরেও যদি বিচারের নামে অবিচার করে নিরপরাধ মানুষদের ধরে ধরে ফাসি দেওয়া হয়, তাহলে ওদের বিচার কেন হবে না?
এরা তো আরও বড় অপরাধ করেছে পুরো জাতির সাথে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File