চাকরির মেয়াদ বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের থামুন। আর দেশটাকে চেতনা দিয়ে শেষ করবেন না।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩৫:১২ রাত
কয়েক লক্ষ তরুন আজ অসহায়। তাদের চাকুরী নাই।
শিক্ষা প্রতিষ্টানে বার বার ছাত্রলীগের তান্ডবে বন্ধ হচ্ছে।
একদিকে ছাত্রদের সরকারী চাকুরীতে আবেদনের বয়স শেষ হচ্ছে , অন্যদিকে বেশির ভাগ ভুয়া মুক্তি যোদ্ধরা চেতনার বানিজ্য করে চাকুরিতে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে চায় মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত।
মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের চাকরির বয়স ৬০ থেকে ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পক্ষে মত দিয়েছেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শিগগিরই প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। এদিকে সরকারের এ পদক্ষেপে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের মতে, এটি বাস্তবায়ন হলে কর্মরতদের পদোন্নতির দরজা সংকোচিত হবে। বঞ্চিত হবেন নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের ১২ জুলাই এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি হতে অবসর গ্রহণের বয়স ৫৭ থেকে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই সময় বিষয়টি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়নি। এরপর ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে সব চাকরিজীবীকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। সচিব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধাদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর ও সাধারণ চাকরিজীবীদের বয়সসীমা ৬০ বছরে উন্নীত করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই তা ফেরত আসে।
এরপর ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি গণকর্মচারী অবসর আইন ১৯৭৪ সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। পরবর্তীকালে ২০১২ সালের জনৈক জামাল উদ্দিন শিকদার আদালতে রিট করেন; যার নম্বর ২৩৫/২০১২। আদালতের পর্যবেক্ষণ মতে পুনরায় তা ৬০ বছর করা হয়, যা এখনও মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোগ করছেন। জামাল উদ্দিন শিকদার অবসরে গেলেও আবারও তিনি এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন; যার নম্বর ৩৫২৩/২০১৩। এ রিটের শুনানি চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এ রিটের পূর্ণাঙ্গ রায়ে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান সম্প্রতি স্বাক্ষর করেন। এ রায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ২০০৬ সালের ১২ জুলাইয়ের পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, আদেশপ্রাপ্তির দুই মাসের (৬০ দিন) মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপন করার কথা বলা হয়।
জালিয়াতি চক্রের এই সব হোতাদের চাকুরিতে বহাল রাখা হচ্ছে কেন ?
ভুয়া সনদ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের এ কর্মকর্তারা প্রতারক ,
এদেরকে জনগনের টাকায় বেতন দেয়া হচ্ছে কেন ?
সরকারী দলিল , সনদ জালিয়াতির কারণে এদের গ্রেফতার করে বিচার করা হচ্ছে না কেন ?
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুপারিশের পর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত সোমবার এক সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ স্থগিত ও চার সচিবের (একজন যুগ্ম সচিব) সনদ বাতিল করা হয়। এরপরও এ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অপরাধেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। অভিযুক্তরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ব্যবহার করে অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন।
সনদ বাতিল হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন, স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন (মো: নিয়াজউদ্দিন মিয়া), যিনি বর্তমানে জাতিসঙ্ঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব বর্তমানে ওএসডি কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব এ কে এম আমির হোসেন এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব বর্তমানে ওএসডি আবুল কাশেম তালুকদার। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ও বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামানের সনদ স্থগিত করা হয়েছে।
৪৪/৪৫ বছর পর কি করে এত মানুষের বয়স সরকারী ভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে ?
এরই মধ্যে সচিব , পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা , এমনকি মুক্তি যুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের অনেকের বিরোদ্ধে ভুয়া , জালিয়াতি মুক্তি সনদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এত কিছুর পর কেন এত লেলুপ দৃষ্টি ? কেন তরুনদের স্বপ্ন শেষ করে কথিত চেতনার বানিজ্য ?
বিষয়: বিবিধ
২৩০৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এদেরকে জনগনের টাকায় বেতন দেয়া হচ্ছে কেন ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন