বাহ এইতো ডিজিটাল আইনের যুগ। ১৩ বছর ধরে কারাবন্দি অথচ দুই বছর আগে এক সন্তানের জনক হয়েছে।

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৮:১০:৪৫ রাত



অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। ঢাকার রামপুরা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কাইল্যা পলাশ কারাগার থেকে তার রামপুরার বাসায় চলে আসে। সেখানে কিছু সময় অবস্থানের পর ফের কারাগারে ফিরে যায়। গত কয়েক বছর ধরেই এভাবে মাঝে মধ্যেই নিজ বাসা ভ্রমণ করছে। এখানেই শেষ নয়, ১৩ বছর ধরে কাইল্যা পলাশ কারাবন্দি। এই দীর্ঘ সময়ে সে একদিনও জামিন পায়নি। অথচ দুই বছর আগে এক সন্তানের জনক হয়েছে। কারাগার থেকে নিয়মিত মোবাইল ফোনে স্ত্রীসহ নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে। চাঁদাবাজিও করে দেদার। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তার টেলিফোনে আড়ি পেতে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। কাইল্যা পলাশের ভাগ্নে সন্ত্রাসী তুষার কিছুদিন আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পলাশ তার ভাগ্নেকে গ্রেপ্তার এড়াতে গাঢাকা দিতে বলে টেলিফোনে। তার টেলিফোন রেকর্ডও বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে।

গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ইকবাল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, তারা বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০টি সিম ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছেন। যে সিমগুলো দিয়ে কাইল্যা পলাশ নিয়মিত কথা বলত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে। এ ব্যাপারে ভাগ্নে তুষারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

২০০২ সালের ২৯ মে রামপুরায় যুবদল নেতা মিজানুর রহমান মিজানকে গুলি করে হত্যা করে কাইল্যা পলাশ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় খিলগাঁও থানায় মিজানের পরিবার কাইল্যা পলাশসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যামামলা দায়ের করে। ওই মামলায় নিম্ন আদালতে কাইল্যা পলাশের মৃত্যুদ- হয়। পরে উচ্চ আদালতে হয় যাবজ্জীবন কারাদ-। ২০০২ সালে মিজান হত্যাকা-ের পরপরই পুলিশ কাইল্যা পলাশকে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে কারাগারেই কাটছে তার জীবন। কারাজীবনের বেশিরভাগ সময় এই শীর্ষ সন্ত্রাসী কাটিয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ। এই কারাগার থেকেই গত কয়েক বছর ধরে দিনের বেলায় নিজের রামপুরার বাসায় ভ্রমণ করে। তাও আবার পুলিশ পাহারায়। রামপুরাবাসী জানে কাইল্যা পলাশ কারাগারে। কিন্তু হঠাৎ তাকে এলাকায় যেই দেখেছেন, সেই বিস্মিত হয়েছেন। কীভাবে কারাগার থেকে সে রামপুরার বাসায় আসে? কোনো কোনো সূত্র বলেছে, কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকার নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে আসা-যাওয়ার পথেই কাইল্যা পলাশ পুলিশ পাহারায় বাসায় চলে আসে। এ জন্য প্রিজনভ্যানের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে থাকে। বিনিময়ে তারা নিজ বাসাতেই স্ত্রীর সঙ্গে কিছু সময় থাকার সুযোগ করে দিত কাইল্যা পলাশকে। এর সঙ্গে কারাগারের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীও জড়িত। নিজ বাসায় ঘুরে যাওয়ার জন্য কাইল্যা পলাশ কৌশলে আদালতে বেশি করে হাজিরার দিনক্ষণ নির্ধারণ করে থাকে। এর সঙ্গে আদালতের কিছু কর্মচারী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

কারাগার থেকেই কাইল্যা পলাশ টেলিফোনে রামপুরা এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। প্রতি মাসে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে। এর মধ্যে কারাগারে রাজকীয় জীবনযাপন করতেই প্রতি মাসে ব্যয় করে ১ থেকে ২ লাখ টাকা। এই টাকার ভাগ কারাগারের বড় কর্তাদের পকেটেও যায়। প্রতি মাসের চাঁদার টাকা দিতে দেরি হলে কারাগার থেকে টেলিফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। দেড় মাস আগে পলাশকে কাশিমপুর কারাগার থেকে হঠাৎ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি করা হয়। বর্তমানে সেখানে রয়েছে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।

কী কারণে তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে রাজশাহী বদলি করা হলো তার কারণ বলতে পারেননি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফরিদুর রহমান। তার ভাষ্য, ওপরের নির্দেশেই কাইল্যা পলাশকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে কাইল্যা পলাশের টেলিফোন ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতে হাজিরার দিন সেখান থেকে টেলিফোনে কথা বলতে পারে। কারাগার থেকে কোনো বন্দি যেন টেলিফোনে কথা বলতে না পারে এজন্য নিয়মিত সেল তল্লাশি করা হয় বলে জানান। ফরিদুর রহমান আরও বলেন, যে কোনো বন্দিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা-নেওয়া করার দায়িত্ব পুলিশের।

বর্তমানে রামপুরা এলাকায় তিন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি করছে। কাইল্যা পলাশ, তার ভাগ্নে তুষার এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহজাদা। কাইল্যা পলাশের সঙ্গে শাহজাদার সম্পর্ক বর্তমানে খারাপ। তবে তার ভাগ্নে তুষারের সঙ্গে শাহজাদার সম্পর্ক ভালো। শাহজাদাও বর্তমানে কারাগারে। কাইল্যা পলাশকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তরের পেছনে শাহজাদার হাত রয়েছে বলেও মনে করে পলাশের সহযোগীরা। ওই ৩ সন্ত্রাসীর অত্যাচারে বর্তমানে অতিষ্ঠ রামপুরাবাসী।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ তুষারকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২টি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি পিস্তল পুলিশের খোয়া যাওয়া। তুষারও প্রতি মাসে অন্তত ১০ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করে থাকে রামপুরা ও আশপাশ এলাকা থেকে। এই চাঁদার একটি অংশ তুষার মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সন্ত্রাসী ঘাতক স্বপনের কাছে পাঠায়। তুষারের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ২১টি মামলা রয়েছে। অথচ এই সন্ত্রাসী মাঝে মধ্যে রাতে নিজ বাসাতেই থাকত। http://www.dainikamadershomoy.com/2015/09/29/50176.php#sthash.h1FFY8sf.dpuf

লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বড় ছেলে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি এইচএম বিপ্লব শুক্রবার কারাগারে বসে বিয়ে করার পর রাতে কারা ফটকের একটি কক্ষে নববধূর সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা একান্তে কাটিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে কারাগারে থেকে প্রেম, বিয়ে সবই স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করেছেন মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লব।

https://shar.es/1GZNg



১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মজু চৌধুরীহাট এলাকায় মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যা মামলায় আদালত তাহেরপুত্র বিপ্লবকে ফাঁসির দণ্ড দেন। এ সাজা মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিপ্লব। ২০১১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে দেন।

বিষয়: বিবিধ

১৪০৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

352592
০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৪
সাইফুল ঈদগাহ কক্স লিখেছেন : মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।
352605
০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আরেকটা বিয়া যে করে নাই সেটা ভাইগ্য ভাল!!
352622
০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:২৯
কাহাফ লিখেছেন : চেতনাময় শাসনে সবই সম্ভব!!
352641
০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:১১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : দুনিয়াডাই কাইল্যা বানায় ফেলছে....Happy
352651
০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২২
হতভাগা লিখেছেন : সব সিস্টেমের খেলা । কাইল্যা পলাশ সিস্টেমে খাপ খাওয়াইয়া নিছে নিজেরে।
353612
১২ ডিসেম্বর ২০১৫ সকাল ০৬:২৯
কাঁচের বালি লিখেছেন : ডিজিটাল যুগে সবই সম্ভব

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File