আমাদের পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মতো ভয়ংকর খেলা চলছে।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২১ আগস্ট, ২০১৫, ০৩:২৬:০০ দুপুর
পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূচনা করে উপজাতীয় (এককালীন বামপন্থী) নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে সর্বপ্রথম ১৯৭৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে গুলশাখালীর (রাঙামাটি জেলা) পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়ে পুলিশের অস্ত্র লুট করা হয়। ১৯৭৮-৭৯ সালে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানার তানৈক্য পাড়া বিওপিতে হামলা করে ১১ জন বিডিআর সদস্যকে হত্যা করে অস্ত্র লুটে নিয়ে যায়। পরে ১৯৮১ এবং ১৯৮৬ সালে ২৯ এপ্রিল পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি, দিঘীনালা ও রাঙামাটির বাঘাইহাটসহ মোট ১১টি ইউনিয়নে একযোগে হামলা চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়। ১৯৮৪ সালে রাঙামাটি জেলাধীন বরকল উপজেলার ভূষণছড়ায় নিরীহ বাঙালীদের ঘুমন্ত পল্লীতে অভিযান পরিচালনা, অগ্নিসংযোগ, ব্রাশফায়ার করে এক রাতে সহস্রাধিক শিশু নারীসহ ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করা হয়। নির্মমভাবে হত্যা করে ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলার পাকোয়াখালীতে ৩৫ কাঠুরিয়াকে। এমনিভাবে সরকারী দায়িত্বে থাকা কর্মচারী সহ প্রায় ৩৫ /৪০ জনগনকে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ও পরে তার ছোট ভাই সন্তু লারমার নেতৃত্বে হত্যা করা হয়।
বাঙালিরা বা সেনাবাহিনীর লোকেরা সেখানে একের পর এক ‘গণহত্যা’ চালিয়ে যাচ্ছে, এ ধরনের প্রচারণা ভয়ঙ্কর রকমের অতিরঞ্জিত এবং নিতান্তই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমতিরি সদস্যরা প্রতিদিনই স্বায়ত্বশাসনের দাবীতে হত্যা, ঘুম ও অপহরণ চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও ২০০০ সালের পর থেকে সন্তু লারমা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করে রাজা দেবাশীষকে সাথে নিয়ে নতুন এক খেলায় মেতে উঠেছে। আর তা হল ৫০৯৩ বর্গ কিঃ মিঃ পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠনের স্বপ্ন। তা বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের আসল পরিচয় বাদ দিয়ে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির দাবী নিয়ে মাঠে নেমেছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি জায়গা, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকে স্বীয় জাতি, ভাষা, ধর্ম তথা সামাজিক সাংস্কৃতিক বিকাশের পূর্ণ অধিকার ও সম্মান নিয়ে স্বকীয়তায় সমান্তরালভাবে বিদ্যমান। কিন্তু বাংলা দেশের ভিতরে একটু চক্র শুধু পাহাড়ি উপজাতিদের সাদা মানুষ , অহিংস মানুষ প্রচার করেই যাচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যে একটি দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। যেমন পৃথক রাষ্ট্র করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানকে। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সাম্প্রতিক বিদ্রোহের পেছনে ইন্টারন্যাশনাল সিএইচটি কমিশনের ভূমিকা রয়েছে বলে বাঙালিদের অভিযোগ। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন এবং অন্যান্য বাঙালি সংগঠনগুলোর দাবি ঘটনার একদিন আগে ইন্টারন্যাশনাল সিএইচটি কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল বাঘাইছড়ি এলাকার চাকমা নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক করে এবং তারপর তারা চলে আসার পরই বাঙালিদের ঘর-বাড়িতে আগুন ধরে যায়।
পূর্ব তিমুর , সুদানের মত স্বাধীন বা আলাদা খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠন বিষয়ক আন্তর্জাতিক চক্রান্ত যেভাবে এগিয়ে চলছে -
মুখে স্বায়ত্বশাসনের কথা বললেও বাস্তবে বিতর্কিত সিএইচটি কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড নামক রাষ্ট্র বানাতে চায়। সে কারণেই তারা গঠন করেছে জুম্ম লিবারেশন আর্মি (জেএলএ), স্বাধীন জুম্মল্যান্ডের পতাকা। আর এই কাজে তাদের গোপনে, প্রকাশ্যে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে সিএইচটি কমিশনের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় শতাধিক দেশি-বিদেশি এনজিও, দাতা দেশ ও উন্নয়নমূলক সংস্থা।
১৯৮৯ সালের শেষ নাগাদ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন গঠিত হয় কমিটির গঠন, স্থান ও সদস্যদের তালিকা থেকে শুরুতেই বোঝা যায় বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা। শুরুতে এই কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন কানাডার আইনের অধ্যাপক স্যার ডগলাস স্যান্ডারস ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সহসভাপতি জার্মানির উইলফ্রিড টেলকেম্পার। এছাড়াও কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার রোজ মুরে, নরওয়ের লীফ ডানফিল্ড, গ্রীনল্যান্ডের হ্যান্স পাভিয়া রোজিং। কমিটি গঠনের লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের পার্বত্য এলাকার মানবাধিকার ও ভূমি সংক্রান্ত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করা। পরবর্তীকালে এ কমিটি ১৯৯২, ১৯৯৪, ১৯৯৭ এবং ২০০০ সালে পরপর চারটি ফলোআপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রিপোর্টে কমিটি পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাঙালি, ইসলাম, সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ সরকার সম্পর্কে নানা মিথ্যা ও রাষ্ট্রবিরোধী তথ্য উপস্থাপন করে। রিপোর্টে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশেষ করে সন্ত্রাস, হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ভূমি দখল, গণধর্ষণ প্রভৃতির জন্য বাঙালি বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে দায়ী করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই মিশনারিদের তৎপরতায় নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতি ছেড়ে খ্রিস্টান হয়ে গেলেও কমিটি তাদের রিপোর্টে উপজাতীয়দের জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এবং নাম না জানা ৭ জন মারমার মুসলমান হওয়ার কথা প্রকাশ করে।
পার্বত্যাঞ্চলের ভয়াবহ নিলনক্সা বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও এ আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়। বিজিবি সূত্র মতে, সীমান্তবর্তী নাড়াইছড়ি, টেক্কাছড়া, শিলছড়ি, উত্তর শিলছড়ি, লালতারান, দিপুছড়ি, লক্কাছড়া, উত্তর লক্কাছড়া, ধূপশীল ও আড়ানীছড়া এলাকায় সীমান্ত নিরাপত্তা চৌকিগুলো বসানো হবে। দীঘিনালার বাবুছড়ায় ৪৭ কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষায় ১৯৯৫ সালে ব্যাটালিয়ন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ১৮ মে ৫১, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন- বিজিবি গঠন করা হয়। কিন্তু সিএইচটি কমিশনের মতো একটি বিতর্কিত কমিশনের মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই খবরে। কিন্তু একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের ভিতরে যখন যা প্রয়োজন সেটাই করবে -- এই নিয়ম মানতে পারছে না কথিত সিএইচটি কমিশন। নতুন ভাবে বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপন হলে জনগণের সুবিধা হলেও অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের অসুবিধা হবে। তাই স্থানীয়ভাবে যারা এই ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করছে তারা ঐ সকল অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক এবং প্রশ্রয়দাতা। সিএইচটি কমিশন তাদেরই অন্যতম।
সিএইচটি কমিশনের মতো একটি বিতর্কিত ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত। বিতর্কিত সিএইচটি কমিশনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো প্রতিনিয়ত যে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা শুধু বাংলাদেশ সরকার কতটুকু শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করলো না তা নিয়ে সোচ্চার। কিন্তু সন্তুবাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য এখনো অস্ত্র সহ অপরাধ বিস্তার কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে তাদের বেলায় কমিশনের কোনো বক্তব্য নেই।
বহুকাল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বৌদ্ধদের ‘জোর করে মুসলমান বানিয়ে ফেলার’ প্রচারণা চলছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে খ্রিস্টান চার্চের অর্থায়নে পরিচালিত অসংখ্য সংস্থা কাজটি করে চলেছে। তারা কিছু চাকমা প্রচারকর্মীকে বিশ্বের বিভিন্ন সভা-সমিতিতে হাজির করে এবং তাদের মুখ দিয়ে এ মিথ্যাটি প্রচার করাচ্ছে। উদাহরণ - ২০১৪ সালের প্রথম দিকে ব্যাংককে কিছু বৌদ্ধ ভিক্ষু একটি ‘মানব বন্ধন’ করেছেন। তাদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিল, ‘বাংলাদেশে দলে দলে বৌদ্ধদের জোর করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে’। ব্যাংককের সেই মানব বন্ধনে সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েকজন চাকমাও ছিলেন। এ নিয়ে সেখানে একটি সেমিনারও আয়োজন করা হয়। সেই সেমিনারেও একই বক্তব্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু বাস্তবে সম্পূর্ণ মিথ্যা কাহিনী ছড়াচ্ছে চট্টগ্রামের কয়েকজন চাকমা।
শান্তিচুক্তি করে সে দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকৃষ্ট করা হয়। এখন সেখান থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের চেষ্টার মাধ্যমে পৃথক একটি নতুন রাষ্ট্র ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন । তাই সময় থাকতেই হুঁশিয়ার হতে হবে তা না-হলে পরে বাংলাদেশ কে টুকরো করা আটকানোর জন্যও সময় পাওয়া যাবে না।
সিএইচটি কমিশনের সকল রিপোর্টই একতরফা ও পক্ষপাতদুষ্ট।
সিএইচটি কমিশন পাহাড়ে উপজাতি জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার নিয়ে শতশত পৃষ্ঠা রিপোর্ট করলেও তাতে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতনের কোনো কথা উল্লেখ নাই । গায়েব হয়ে গেছে ?
পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো প্রতিনিয়ত যে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। সিএইচটি কমিশন শুধু বাংলাদেশ সরকার কতটুকু শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করলো না তা নিয়ে দিন রাত সোচ্চার। কিন্তু পাহাড়ি সন্ত্রাসী সন্তুবাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য এখনো অস্ত্র হাতে নিয়ে হানাহানি ও অপরাধ বিস্তার কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে তাদের বেলায় কমিশনের কোনো বক্তব্য নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ফিরিয়ে আনা তাদের অগ্রাধিকার তালিকার অন্যতম দাবি। ঐতিহাসিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ( চট্রলা) প্রাচীন বাঙলার সমৃদ্ধ হরিকল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। সে কারণে বাঙালিরাই ( বর্তমান বাংলাদেশীরাই ) এ অঞ্চলের প্রাচীন জনগোষ্ঠী। অথচ সিএইচটি কমিশন উপজাতিদের তারা আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি রেখে বাকি সকল ক্ষমতা প্রদানসহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি ব্যাপক স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ বানাতে সুপারিশ করেছে। বিশ্বের কাছে তুলে দিচ্ছে ভুয়া বানোয়াট সব পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি কে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির ভয়াবহ সুপারিশ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভূরাজনীতি বিশ্লেষক একজন প্রফেসর বাংলাদেশের একটি পত্রিকাতে বলেছিলেন -
ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিমরাষ্ট্র। বিশ কোটি জনসংখ্যার দেশ। এরমধ্যে ১৮ কোটি মুসলমান। এ মুসলমান দেশের উপস্থিতি মাত্র তিনকোটি মানুষের দেশ অস্ট্রেলিয়া হুমকি মনে করে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তরেই হলো ইন্দোনেশিয়া। আর অস্ট্রেলিয়ার নিকটতম দ্বীপ হলো তিমুর। ইস্ট তিমুর ছিল পুর্তগীজ কলোনি আর ওয়েস্ট তিমুর ছিল দাজ কলোনি। গোটা ইন্দোনেশিয়া দাজ শুধু ওয়েস্ট তিমুর ছিল পুর্তগীজ। এই ইস্ট তিমুরের জনগণকে খ্রিস্টান করে ফেলে তারা। আর ওয়েস্ট তিমুরসহ গোটা ইন্দোনেশিয়া মুসলমান। বালিতে কিছু হিন্দু আছে। পুর্তগীজরা চলে যাওয়ার পর তিমুর ইন্দোনেশিয়ার সাথে থাকতো পারতো। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া জিও পলিটিকসের মাধ্যমে এখাকার জনগণকে সংগঠিত করে বিদ্রোহকে উস্কে দিয়েছে। কারণ এখানে স্বাধীন ইন্দোনেশিয়া থাকলে যে কোন সময় ঘনবসতিপূর্ণ মুসলমানরা অস্ট্রেলিয়া দখল করে নিতে পারে এ আতংকে তারা এ ভূ-রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করে জাতিসংঘের ব্যানারে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে, ইউরোপের খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলোর সাহায্যে পূর্বতিমুর নামে স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এখন সে রাষ্ট্র পাহারা দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান সেনাবাহিনী। সুতরাং ভূরাজনৈতিক কারণ এখানে নৃতাত্ত্বিক কারণের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
ঠিক একইভাবে দেখুন সুদান বহুজাতি তাত্ত্বিক দেশ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আফ্রিকার একটি বড় দেশ। সেটার দারফুর অংশে উপজাতির ভিত্তিতে মুসলমানদের বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারপর সবচেয়ে সম্পদ সমৃদ্ধ দক্ষিণ সুদান যেখানে রয়েছে তেল সমৃদ্ধ অ্যাবে অঞ্চল। এ অঞ্চলে আমেরিকার সিআইএ ও ইসরাইল অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে। আশপাশের খ্রিস্ট রাষ্ট্রগুলো জনবল ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে বিচ্ছিন্নতাবাদকে উস্কে দিয়ে গণভোটের নাটক মঞ্চস্থ করে স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরির নামে বিচ্ছিন্ন করে দিলো। অপর দিকে পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেমন ফিলিপাইনের মুরোদের মিন্দানাও, সেখানে গোটা মিন্দানাও এর একটা অংশজুড়ে তারা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা এখনকার কয়েকটা রাজ্যে যেমন সুলু মিন্দানাও, কিন্তু সেখানে তারা কোন স্বাধীনতা দিচ্ছে না। কাশ্মীরেও স্বাধীনতা দিচ্ছে না। ভাষা তাত্ত্বিক নৃতাত্ত্বিক সবদিক দিয়ে কাশ্মীরীরা আলাদা। সেখানে জাতিসংঘ ডাবলস্ট্যান্ডার্ড করছে। এভাবে চেচনিয়া, মিন্দানাওসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ ডাবলস্ট্যান্ডার্ড করছে। এসব দেশে গণভোট হলে সবাই স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিবে। আমাদের পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মতো ভয়ংকর খেলা চলছে।
এই মুহুর্তে বাংলাদেশের জনগনের জাতীয় দাবি -
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ইউএনডিপি ( UNDP ), ইউনিসেফ (UNICEF), ইউরোপীয় কমিশন (EU) ইত্যাদি সংস্থা ও এনজিওর (NGO) কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। তারা সাহায্য করতে চাইলে বাংলাদেশসেনাবাহিনীর মাধ্যমেই করতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রাম, খ্রিস্টান মিশনারি বাংলাদেশসেনাবাহিনীর মাধ্যমেই নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতীয় দৃষ্টির মধ্যে রাখতে হবে। নতুন রাষ্ট্র সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং কক্সবাজার নিয়ে - এই বিষয়ে সেনা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে - যেমন পৃথক রাষ্ট্র করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানকে। তা যেন না হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে। বিতর্কিত সিএইচটি কমিশনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
( অসমাপ্ত )
বিষয়: বিবিধ
২০৬২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন