তারা জনগনের বেতন ভুক্ত কর্মচারী ? নাকি আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মী ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৭ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:৫১:২২ সকাল
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রক্ষীবাহিনীর মত কাজ করছে। প্রমান ?
১৭ জানুয়ারি ২০১৫, প্রায় প্রতিটি সংবাদ পত্রে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।
সীমান্তে ধারাবাহিকভাবে মানুষ মরলেও বিজিবির কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ প্রয়োজনে বিজিবি গুলি চালানো’র ঘোষণা দিয়ে মূলত তারা দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বিজিবির কাজ সীমান্ত পাহারা দেওয়া।বিজিবি’র দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা, দেশবাসীর বুকে গুলি চালানো নয়। সীমান্তে যখন পাখির মত বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে তখন পাল্টা গুলি চালানোর হুকুম আসে না কেন? সেখানে বিএসএফ বাংলাদেশিদের হত্যা করছে বিজিবি পদক্ষেপ না নিয়ে নিজের দেশের মানুষকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে। বিজিবি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচির ব্যাপারে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ যেসব মন্তব্য করেছেন তার পর তারা এই পদে আর থাকার কোনো বৈধতা নাই।
রাষ্ট্রের সেবক হিসেবে কোনো দলের বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের কোনো এখতিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের নেই। তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য রেখে নিজেদের নিরপেক্ষতা হারিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ১৫ জানুয়ারি দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য বিজিবিকে নির্দেশ দেয়ার পর গতকাল ১৬ জানুয়ারি আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক রংপুর জেলার মিঠাপুকুর বালিকা বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় ২০ দলীয় জোটকে লক্ষ্য করে যে অন্যায়, অযৌক্তিক, অসাংবিধানিক ও বেআইনি বক্তব্য প্রদান করেছেন । আইজিপি যে জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম রাজু, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার দেলাওয়ার বখত, রংপুরের ডিআইজি হুমায়ুন কবির, জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমেদ ও এসপি আবদুর রাজ্জাকও বক্তব্য প্রদান করেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বক্তব্য প্রদান করে দেশের আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসেবে তারা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে এক মঞ্চে শামিল হয়ে এ ধরনের বেআইনি বক্তব্য প্রদান করতে পারেন না।
তারা যদি রাজনীতি করতে চান তাহলে তাদের অবশ্যই চাকরি ছেড়ে দিয়ে এবং সরকারি পোশাক খুলে জনগণের কাতারে শামিল হয়ে যদি রাজনীতি করেন তাহলে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আওয়ামীলীগের কর্মী হয়ে এমন বক্তব্য দিলে সমস্যায় পড়তে হবে না। কিন্তু তা না করে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও সরকারি পোশাক পরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পক্ষ হয়ে ময়দানে বক্তব্য দেবেন এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করবেন এবং সাধারণ মানুষের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন, লুটপাট করবেন, মানুষ গুম করবেন তা দেশের জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না।
মিঠাপুকুরে মতবিনিময় সভা। দলবাজির শেষ সীমায় পৌছে গেছে পুলিশ , র্যাব , বিজিবি।
টক-শোওয়ালারা সংবিধান জানে না : আইজিপি ॥
১৩ সালে রুখেছি এবারো রুখব : র্যাব ডিজি ॥
টেলিভিশন মিডিয়াতে রাতের বেলা যারা টক-শো করেন তারা সংবিধান জানেন না দাবি করে পুলিশের আইজি এ.কে.এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘সংবিধানের কোথাও আন্দোলনের নামে হরতাল-অবরোধের মতো নাশকতা ও সন্ত্রাসমূলক কার্মকান্ডের কথা উল্লেখ নেই। হরতাল-অবরোধ সংবিধান পরিপন্থি। আমরা জননিরাপত্তার স্বার্থে ৫ জানুয়ারি ঢাকায় কাউকেই সমাবেশ করার অনুমতি দেইনি। বিভিন্ন সূত্রের তথ্য থেকে জেনেছি ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা ছিলো। অথচ টকশো-ওয়ালা বলেন সমাবেশ করতে দিলে কি হতো। ওনারাতো সংবিধান জানে না, আইন জানে না। এ সময় তিনি মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘টক-শো কারা করেন। আর দেখেন তা আপনারাই ভালো জানেন’।
শুক্রবার দুপুরে রংপুরের মিঠাপুকুর ডিগ্রী কলেজ মাঠে সন্ত্রাস ও নাশকতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
শহীদুল হক বলেন, ‘সারা দেশের মধ্যে মিঠাপুকুর, গোবিন্দগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সন্ত্রাস ও নাশকতা বেড়ে গেছে। এগুলো কারা করছে। যারা স্বাধীনতা চায়নি। আপনাদের এসব মৌলবাদী সংগঠনের দোসর হওয়া যাবে না। পুলিশ প্রশাসন আপনাদের পাশে থাকবে’।
আইন কি বলে ?
সুপ্রীম কোর্ট ৬০ ডি এল আর (এ ডি ) পৃষ্ঠা ৪৯ তে বিষয়টি নিস্পত্তি করে বলেছেন যে " হরতাল মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার চর্চার মাধ্যম "| তাহলে টক-শোওয়ালারা সংবিধান জানে না ? নাকি দলবাজির কারণে অজ্ঞ আইন না জানা আইজিপি বোকার রাজ্যে বসবাস করেন।
আইজি বলেন, নির্বাচনের দাবি তুলে যারা এভাবে হরতাল অবরোধের নামে নাশকতা সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করছে। তারা আসলে কি চায়। দেশেতো সংবিধানুযায়ী নির্বাচন হয়েছে। জনগণ ভোট দিয়েছে। যারা নির্বাচন চায়নি তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে এরকম সন্ত্রাস করেছে’।
এবার আর কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না হুশিয়ারি উচ্চারণ করে পুলিশের এ আইজি বলেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ভুল করেছে। এর খেসারত জনগণ দিবে না। বিএনপি-জামায়াতকেই এর খেসারত দিতে হবে। এদেশে আমরা আর কোনো অশুভ শক্তির উত্থান হতে দেয়া হবে না’।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি বক্তব্যে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা যারা দেখতে চায় না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চায় না। তাদেরকে আমাদের এদেশে প্রয়োজন নেই। তাদের দমনে ষড়যন্ত্র দমনে যা যা করা দরকার সবই করা হবে’।
বেনজীর বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীদের সংখ্যা খুবই কম। এদের নিশ্চিহ্ন করা কোনো ব্যাপার নয়। আমরা এই অপশক্তিকে ২০১৩ সালে রুখে দিয়েছি। এবারো রুখে দিব ইনশাআল্লাহ’।
হরতাল অবরোধ কর্মসূচিকে অন্যায় যুদ্ধ আখ্যায়িত করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অন্যায় যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ যুদ্ধে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অন্যায় যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের আমরা পরাজিত করে বিজয়ী হব’।
সভায় জেলা প্রশাসক ফরিদ আহম্মদ-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, রংপুর রেঞ্জ‘র ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি হুমায়ূন কবির, র্যাব-১৩ অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসমত হায়াৎ, রংপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক ।
এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে মতবিনিময়ে অংশ নেন রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী এডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সেক্রেটারিী তুষার কান্তিম মন্ডল, মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোজাম্মেল হক মিন্টু, সেক্রেটারি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার শহিদার রহমান, জায়গীর হাই স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ তোজাম্মেল হোসেন, মিঠাপুকুর ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক বলেন, আমরা নির্বাচিত সরকারের পক্ষে আছি। কোনো অশুভ শক্তির কাছে আমরা মাথা নত করবো না।
এ সময় টক-শো এবং এর অতিথিদেরও সমালোচনা করেন আইজিপি। তিনি বলেন, তারা না জেনে কথা বলেন, বিবেক হারিয়ে ফেলছেন। আমার প্রশ্ন টক-শোওয়ালাদের প্রতি, সমাবেশ করতে দিলে যদি হত্যা, ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ হতো, তখন টক-শোওয়ালারা কী করতেন?
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় র্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন - ২০১৩ সালের মতো একটি গোষ্ঠী দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। নির্ধারিত সময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে র্যাবের ডিজি সতর্ক করে বলেন, আমরা ২০১৩ সালে সন্ত্রাসীদের রুখে দিয়েছিলাম, এবারও রুখে দেবো।
http://mzamin.com/details.php?mzamin=NTk0NjY=&s=Mg==
http://mzamin.com/details.php?mzamin=NTk0NjU%3D&sMg=%3D
বিষয়: বিবিধ
৪৪৪৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অবৈধ সরকারের তল্পি বাহক হিসেবেই তো এদের কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে!
এদের এমন বক্তব্য দেয়াই কুকুরের প্রভূ ভক্তির আলামত!
নুনের গুণ গাইতে হবে না!!!
উনারা সরকারের পক্ষ নিয়ে বলেছেন , উনারা কি সরকারের দালাল ? জনগণের জন্য পুলিশ নাকি সরকারকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন