মাত্র পাঁচ মাসে ছাত্রলীগের অপকর্মের তালিকা ( জানুয়ারী থেকে মে -২০১৪ )

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৭ জুন, ২০১৪, ১১:১৬:৩৪ সকাল



ছাত্রলীগের প্রতিদিনের ঘৃন্যতম কাজের খতিয়ান লিখতে গেলে কয়ক পাতা লিখতে হয়। তার পর ও উল্লেখ করার মত কিছু ঘৃন্যতম কাজের বিবরণী।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিগত দিনের অপকর্মের ধারাবাহিতা বজায় রেখে জন্ম দিয়েছে আরও অনেক ঘৃন্যতম কাজের। যা এই সভ্য সমাজের সকলকেই অবাক করে দিয়েছে।

পুলিশের সামনেই শিবির নেতার পা কাটলো ছাত্রলীগ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান , ১৬ জুন ২০১৪ দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ ভবনের সামনে শিবির নেতা রাসেলকে আটক করে ছাত্রলীগ সভাপতি তন্ময় আনন্দ অভি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, রীনেত, সুষ্ময় এবং বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহমেদ কৌশিক। পরে তারা বিকেল ৪টার দিকে পুলিশের সামনে রাসেলের ডান পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং বুকে গুলি করে ফেলে রেখে যায়।

ছাত্রলীগের এক নেতা ন্যাক্করজনক ঘটনাটির জন্ম দিয়েছে গত ৮ জুন রাতে। কুমিল্লা থেকে চিকিৎসার জন্য আসা এক দম্পতি রাজধানীর মগবাজারের আবাসিক হোটেল গোল্ডেন এন প্যালেসের একটি রুম ভাড়া নেন। ওই রাতে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন তার সহযোগিদের নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দম্পতির রুমে প্রবেশ করে। পরে অস্ত্রের মুখে স্বামীকে বেধে রেখে অসুস্থ স্ত্রীকে ধর্ষণ করে সেই ছাত্রলীগ নেতা।

এসএসসি ও এইচএসসি পাস না করেও কলেজে অধ্যয়নরত দেখিয়ে ছাত্রলীগের পদ লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা করেছে বিএম কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী আল ইমরান।

৯ জুন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সবুজ পরীক্ষায় ফেল করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালান তার অনুসারিদের নিয়ে।

৭ জুন রাতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ৫০ পিস ইয়াবাসহ সাগর (২৫) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সাগরকে ছাড়িয়ে নিতে তার সমর্থকরা থানায় হামলার চেষ্টা চালায়। এমনকি স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও তাকে ছাড়িয়ে নিতে অনুরোধ জানায়।

সিলেটে ছাত্রলীগের গড়ে তোলা টর্চার সেলে নির্যাতনে নিহত হয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ছাত্রদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম। গত ৪ জুন রাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবুসিনা ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুলকে পিঠিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ।

১ জুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হানিফ পরিবহনের তিনটি গাড়ি আটক করে চাঁদা দাবি করায় ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রহিম জুয়েলসহ ১২ জন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।

পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ৩০ মে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ছাত্রলীগ নেতারা হলে গিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তরপত্র বিক্রি করে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ মার্চ পরীক্ষার তারিখ পেছানোকে কেন্দ্র করে নিজ দলের কর্মী সায়াদ ইবনে মোমতাজকে রড, লাঠি, হকিস্টিক, স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরদিন মারা যায় সায়াদ।

৬ এপ্রিল বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে নতুন কমিটির পদ দখলকে সামনে রেখে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।

৭ এপ্রিল ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএসে র‌্যাবের নির্যাতন কেন্দ্র আবিষ্কার ও সেখানে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতাসহ ১২ জন আটক, ৮ এপ্রিল বরিশালে পলিটেকনিক শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা, ১০ এপ্রিল সিলেটে রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজে ছাত্রদল নেতাকে কোপানো, ১১ এপ্রিল সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

২২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী হায়দার আলীকে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। ১৩ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ আলমকে অস্ত্র ঠেকিয়ে টেন্ডার ছিনতাই করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

টেন্ডার, চাঁদাবাজি কিংবা আধিপত্য বিস্তারের মতো নিয়মিত ঘটনা নয়, এক রুমের জুতা অন্য রুমে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই গত ৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়েত মৈত্রী হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

২ মার্চ বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ৪ মার্চ রাতে জুতা চুরিকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একই দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের গোলাগুলিতে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ মার্চ খাবারের বিল পরিশোধ করা নিয়ে সংগঠনটির দুই গ্রুপের মধ্যে দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনায় সরকারি আযম খান কমার্স কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এর একদিন আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ না দেয়ায় ১৯ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বদরুননেসা কলেজে ছাত্রলীগের নারী কর্মীদের সঙ্গে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিপক্ষ সংগঠন ছাত্রদলের মারামারি ও চুল টানাটানি হয়। ওই একই দিনে মানিকগঞ্জ ছাত্রলীগের দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রীকে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

১০ ফেব্রুয়ারি ওই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটো হলের রুমে বান্ধবীসহ ধরা পড়েন।

২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামালা চালায় ছাত্রলীগ। এতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর পরই শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী আকন্দকে হত্যা করা হয়।

২৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্রলীগ নেতারা মারধরের শিকার হন মদের বারের কর্মীদের হাতে। শাহবাগের পিকক মদের বারে মদ খেয়ে এবং নিয়ে তার বিল পরিশোধ না করে চলে আসলে বার কর্মীরা ছাত্রলীগের সলিমুল্লাহ হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসানসহ তার অনুসারিদের ব্যাপক মারধর করে।

২২ জানুয়ারি জাবির নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষক ড. গোলাম মঈনুদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মামুন খানকে।

২০ ও ২১ জানুয়ারি ৭ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে বরিশালে ছাত্রলীগের হাতে মার খায় যুবলীগের এক নেতা।

২০ জানুয়ারি বিকালে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এক প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে বিজি প্রেসের স্টেশনারি ভবনে টেন্ডারবাজি করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ।

১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হল দখলের উদ্দেশে পুলিশের সহায়তায় হামলা করে ছাত্রলীগ। এ দিন শিবির নেতা মামুনকে প্রথমে গলা কেটে, পরে গুলি করে হত্যা করে।

৪ জানুয়ারি প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ১১ কর্মকর্তার নিয়োগের কোটা বাগিয়ে নেন।

এছাড়াও সারাদেশেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ ব্যাবসায়ীরা। হোটেলে ফ্রি খাওয়া, ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদা আদায়, শার্ট-প্যান্ট নিয়ে টাকা না দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্টানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অস্ত্র বাজি , দলীয় কোন্দল , চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ সবাই।

বিষয়: বিবিধ

২৫৮৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

235710
১৭ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:১১
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৪
184857
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই
235751
১৭ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:৪২
egypt12 লিখেছেন : প্রিয়তে রইল Rose
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৪
184858
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : ধন্যবাদ
235770
১৭ জুন ২০১৪ দুপুর ০২:১৬
সাফওয়ানা জেরিন লিখেছেন : ওরা ঘৃণার ও অযোগ্য। ধন্যবাদ তথ্য বহুল পোস্টের জন্য
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৪
184859
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : ওরা ঘৃণার অযোগ্য
235796
১৭ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৩
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : এরা সব পারে বলেই নাম ছত্রলীগ। ধন্যবাদ।
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৫
184861
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : চেতনার ডিজিটাল ফরমেট
236342
১৮ জুন ২০১৪ রাত ০৯:২৫
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : At Wits' End At Wits' End At Wits' End At Wits' End Not Listening Not Listening Not Listening Not Listening মন্তব্যহীন............. Thinking? Thinking? Thinking? Thinking? Thinking?
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৫
184862
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : খুন আর রাহাজানি
236564
১৯ জুন ২০১৪ রাত ০৮:১২
বাজলবী লিখেছেন : ওদের নাম উচ্চারণ করতে ও লজ্জা লাগে।ধন্যবাদ
২৪ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
184863
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : সেটাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File