ঘাতকদের বর্ণনায় একরাম হত্যা। জয় বাংলা বলে সামনে বাড়ো
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২৫ মে, ২০১৪, ০৬:২৮:৪২ সকাল
শেখ হাসিনার বক্তব্য - এই হত্যাকান্ড স্বাধীনতা বিরোধীদের কাজ।
যে হুকুম সেই মত বাকি সব আওয়ামীলীগের নেতারা চিত্কার দিলেন। আওয়ামীলীগের উপরের একটি অংশের তাড়া হুড়োতে হত্যাকান্ডের মামলা হলো। মামলার আসামী বিরোধীদলের নেতা , কর্মীরা। গ্রেফতার করা হয় দিনমজুর , হকার সহ প্রায় ৩০ জনকে ।
কিন্তু ফেনীর জনগনের চাপে শুরু হলো নাটকের মূল দৃশ্যের পরিবর্তন।
বিগত কয়েকদিনের পত্রিকার খবরের দিকে প্রায় সবার নজর ছিল। এক এক করে সব ফাস হচ্ছিল। নারায়ণ গঞ্জের কাহিনীর দিকে যাচ্ছিল সব কিছু। আওয়ামীলীগের শীর্ষনেতা , নেত্রী মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে ফেনীর জনগণ মুখ খুলবে না , কারণ ইচ্ছে করে কেউ লাশ হতে চাইবে না। খুনের পর পানি দিয়ে সেটা পরিষ্কারের কাজ ও ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়ে দিলেন ডিএনএ সহ ঘটনা স্থলের বিবরণে কিছু নাই। খুঁজে পাবার মত তেমন আলামত নাই।
কিন্তু খুনের ভিডিও প্রকাশের পর সব হিসেব উল্টে যায়।
হা , শেখ হাসিনার কথায় ফেরে যাই ।ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে দলীয় কোন্দলের কারণেই নির্মমভাবে হত্যার পর পরই শেখ হাসিনার বিবৃতি মিডিয়াতে প্রচারিত,প্রকাশিত হয়। সেই সাথে রাষ্ট্র পতি ও বিরাট বিবৃতি দিলেন। (২১ শে মে, ২০১৪)
শেখ হাসিনা বিবৃতি বললেন - ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে স্বাধীনতা বিরোধীরা হত্যা করেছে।
ঠিকই স্বাধীনতা বিরোধীরা উপজেলা চেয়ারম্যান একরাম হত্যার ঘটনায় জড়িত। আর লোক দেখানো মামলায় নিহত একরামের ভাই বাদী হন। কিন্তু বাদী নিজেও জানেন না কাদের আসামী করা হয়েছে। যা কয়েকটি টিভি , প্রিন্ট মিডিয়া প্রচার করে।
সেই তো গেল পুরনো কাসুন্দি , পুরনো একই কায়দার বিবৃতির মহড়া।
এবার ভিডিও এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের এবং প্রমানের ভিত্তিতে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী , এবং খুনের মদদ দাতা , পরিকল্পনাকারী সবাই আওয়ামীলীগের। নিশ্চই এরা সবাই স্বাধীনতা বিরোধী। কিছু চেতনার এলার্জি রোগীরা একটি পত্রিকার খবর দিলে বলবেন - এই সব ভুয়া , তাই বেশ কয়েকটি পত্রিকার কার্টিং দেয়া হলো। এবার কি চেতনার অন্ধত্ব থেকে বের হয়ে সত্য কে স্বীকার করবেন ?
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে দলীয় কোন্দলের কারণেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান ওরফে জাহিদ চৌধুরী ও ৫নং ওয়ার্ড কমিশনার আবদুল্লা হিল মাহমুদ শিবুল’র নেতৃত্বে এ কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করা হয়। একরামকে সরাসরি গুলি করে আবিদ। আবিদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল জাহিদ চৌধুরী। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে ৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর আবিদ পেয়েছে বিপুল অর্থ। আর তার সহযোগীরা প্রত্যেকে ১ লাখ করে টাকা পেয়েছে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল কয়েকটি উপ-গ্রুপ। একেক গ্রুপ একেক ধরনের দায়িত্ব পালন করেছে।আটকের পর র্যাব হেফাজতে আবিদুল ইসলাম আবিদ জানান, তার বাবার নাম মৃত ফকরুল ইসলাম। সোনাগাজীর সোনাপুরে তাদের বাসা। ফেনীর স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী তার মামাতো ভাই। তার মা বড়মনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি।
এখন আওয়ামীলীগের নেতারা কি বলবেন ? নারায়ণ গঞ্জের মত কি বিভিন্ন কাহিনী রচনা করবেন ? ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে দলীয় কোন্দলের কারণেই নির্মমভাবে হত্যা করে বিরোধী দলের উপর দায় চেপে যে মামলা হয়েছে , সেই মামলার কি হবে ?
শেখ হাসিনার বর্ণনায় রাজাকারদের ভিডিও .
https://www.facebook.com/photo.php?v=10152422738774644&set=vb.13678589643&type=2&theater
শেখ হাসিনা কি একটি নতুন বিবৃতি দিয়ে স্বীকার করবেন -খুনিরা আওয়ামীলীগের , এরাই খাটি রাজাকার , স্বাধীনতা বিরোধী। অতীতের মত কি রাষ্ট্রপতির গণহারে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী , খুনিদের রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেবেন -- সেই অপেক্ষায় জাতি।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যার ঘটনায় কিলিং মিশনের অন্যতম সদস্য আবিদুল ইসলামসহ আটজনকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
একরামুল হক হত্যাকা পরিকল্পনায় স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতা সরাসরি জড়িত ছিলেন।তারা হলেন- ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিহাদ চৌধুরী এবং ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু। এছাড়া আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় এমপি নিজাম হাজারীর ঘনিষ্ঠ জিয়াউল আলম ওরফে মিস্টারের সম্পৃক্ত থাকার ক্লু পাওয়া গেছে। (কয়েকটি দৈনিকের সুত্র )
গ্রেফতার হওয়া আবিদের মা নায়লা জেসমিন বড়মণি ফেনী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আবিদ নিজাম হাজারীর মামাতো ভাই। [/b
এ ছাড়া গ্রেফতার হওয়া অপর ছয়জনও আবিদের ঘনিষ্ঠজন। শিবলু ও জিহাদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে আবিদ এলাকায় পরিচিত।
null
[b]আবিদুল ইসলাম আবিদ: র্যাবের হাতে আটক হওয়া আবিদুল ইসলাম আবিদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। আবিদ নিজাম হাজারীর মামাতো ভাই। আবিদের মা নায়লা জেসমিন বড়মণি ফেনী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বাড়ি ফেনীর পার্শ্ববর্তী গ্রাম সোনাপুরে। বর্তমানে চট্টগ্রাম সাউদার্ন কলেজে বিবিএ অধ্যয়নরত হলেও ফেনী ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর অনুসারী। নেশাগ্রস্ত যুবক হিসেবেও এলাকায় সে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে এলাকার তরুণীদের প্রকাশ্যে লাঞ্ছনা করা ও ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া সে নানা অপকর্মের সঙ্গেও জড়িত বলে জানা গেছে। আবিদ জানায়, ফেনী পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর শিবলু তাদের হত্যাকাণ্ড চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
আবদুল্লাহ হিল শিবলু: ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এর আগেও সে একই ওয়ার্ড থেকে কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিল। ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া নিজাম হাজারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও ফেনীতে সে পরিচিত। থানায় আত্মসমর্পণের আগে পুলিশ তাকে আটক করার চেষ্টা করে। এ সময় সে নিজাম হাজারী এমপির বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ সেখান থেকে আটক করলেও থানায় শিবলু আত্মসমর্পণ করেছে বলে দেখানো হয়। জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় ফেনীর অবৈধ অস্ত্রধারীদের তালিকায় শিবলুর নাম ছিল। পরে বিগত মহাজোট সরকারের সময় শিবলু অস্ত্রের লাইসেন্স পায়। ঘটনার পরিকল্পনাকারী হিসেবে শিবলুর পাশাপাশি জিহাদ চৌধুরীরও নাম বলে আটককৃতরা। জিহাদ চৌধুরী খুনিদের অস্ত্র জোগান দিয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক।
জিহাদ চৌধুরী: তার বাড়ি নিহত একরামুল হকের আনন্দপুর ইউনিয়নে। সে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ওই ইউনিয়নে গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিল। কিন্তু একরাম তাকে নির্বাচন করতে না দিয়ে হারুন নামের এক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের ব্যবস্থা করে। এ নিয়ে জিহাদ ক্ষুব্ধ ছিল একরামুল হকের ওপর। এ ঘটনায় একরাম তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করে। সম্প্রতি নিজাম হাজারীর হস্তক্ষেপে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
জিহাদও নিজাম হাজারীর অনুসারী ও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ঘটনার পর থেকেই জিহাদ পলাতক। আটককৃতরা জানায়, ১৯ মে রাতে ফেনী শহরের সালাম জিমনেসিয়ামের ভেতরে জিহাদ খুনিদের নিয়ে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে র্যাবের হাতে আটক হওয়া আবিদ, সিফাত, সানী, সৈকতসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল। জিহাদ চৌধুরীও নিজাম হাজারীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জাহিদ হোসেন: ফেনীর বড়বাড়ীর জাহিদ হিসেবে সে পরিচিত ও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আবিদের বক্তব্যের সূত্র ধরে র্যাবের একটি দল ফেনীর রামপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সেও কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল।
কাজী শাহান মাহমুদ: কাজী শাহান মাহমুদের বাড়ি ফেনীর বালিগাঁও আফতাব বিবিরহাটে। শহরের নাজির রোডে থাকত। বর্তমানে ফেনী সরকারি কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সে। পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাকেও সবাই আবিদের বন্ধু ও নেশাগ্রস্ত যুবক হিসেবে চেনে।
মো. নাফিজ উদ্দিন চৌধুরী অনিক: নাফিজ উদ্দিন ওরফে অনিক তার মা-বাবার সঙ্গে ফেনীর শহীদ আতিকুল হক সড়কের কাজী ইলিয়াসের বাসায় ভাড়া থাকে। বর্তমানে ফেনী গোল্ডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও আবিদের জুনিয়র বন্ধু।
সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী সিফাত: সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী ওরফে সিফাতের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজীর সেনাপোসকুনি গ্রামে। সে আবিদের বন্ধু ও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত।
জাহিদুল হাশেম সৈকত: সৈকতের বাবা কামরুল হাশেম। বাড়ি ফেনীর পরশুরামের উত্তর গুত্থমা গ্রামে। ঢাকার ধানমণ্ডির ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র সে। তার সঙ্গেও আবিদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
হেলাল উদ্দিন: হেলাল উদ্দিনের বাড়ি ফেনীর পলিটেকনিকের সামনে। হেলাল সিফাতের বন্ধু। বর্তমানে হেলাল ঢাকায় আইইউবিতে বিবিএ চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত।
শাহজালাল ওরফে শিপন: শাহজালাল ওরফে শিপনের বাড়ি ফেনীর সালদারবাজার। বর্তমানে উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডের ২৬ নম্বর বাসায় থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ে।
বিষয়: বিবিধ
২৪৬২ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন