নূর হোসেনকে মেয়র করতে 'অতি জরুরি' চিঠি দেন এইচ টি ইমাম - কিন্তু আওয়ামিলীগ সুর পাল্টিয়ে বলছে অন্য কথা

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৮ মে, ২০১৪, ০৯:৫৯:১৮ সকাল



নূর হোসেনকে মেয়র করতে 'অতি জরুরি' চিঠি নারায়ণগঞ্জের এখন মানুষের হাতে হাতে । বিক্রি হচ্ছে ফটোকপি। 'অতি জরুরি' উল্লেখ করা এই চিঠিটি কথিত প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনবিষয়ক কথিত উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের লেখা। চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে মেয়র মর্যাদায় পৌরসভার প্রশাসক পদে বসাতে এলজিআরডি মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে তিনি এ চিঠি দিয়েছিলেন।

২০০৯ সালের ৮ জুন লেখা এ চিঠির জোরে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড ওয়ারেন্ট থেকে নূর হোসেনের নাম কাটা গিয়েছিল। চিঠিতে এইচ টি ইমাম নবগঠিত সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভায় নূর হোসেনকে প্রশাসক পদে নিয়োগ দিতে এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে 'বিশেষ অনুরোধ' জানান। চিঠির স্মারক নং : সম/উপদেষ্টা/০১/২০০৯-১৯। এইচ টি ইমাম চিঠিতে নূর হোসেনকে তিন জায়গায় আওয়ামী লীগ নেতা লিখেছেন। একটি জায়গায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন। নূর হোসেন ওরফে হোসেন চেয়ারম্যান ২০০৯ সালের ২০ জুন দেশে ফেরেন। পৌরসভা নির্বাচনে এই ২ জনের ছবি এক সাথে ছিলো

ইন্টারপোলের ওয়েবপেইজে ২০১০ সালে বলা হয়, 'সশস্ত্র অপরাধ, হত্যা ও অঙ্গহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।' কিন্তু ২০১৪ সালে নূর হোসেন সম্পর্কে ইন্টারপোলের ওই ওয়েবপেইজে কোনো তথ্যই নেই।

চিঠির মূল অংশে এইচ টি ইমাম উল্লেখ করেন, 'আবেদনকারী (নূর হোসেন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা। সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে অপসারণ করে। তিনি যাতে আইনের আশ্রয় নিতে না পারেন সে জন্য তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে ও বাসগৃহে হামলা চালানো হয় এবং তার পিতার মৃত্যুর পর জানাজায় অংশ পর্যন্ত নিতে দেওয়া হয়নি। তাই আওয়ামী লীগ নেতা জনাব মো. নূর হোসেনকে সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার পৌর-প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।'

স্বাক্ষর - এইচ টি ইমাম

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে এইচ টি ইমামের প্যাডে লেখা চিঠিটির অনুলিপি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবকেও পাঠানো হয়।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে গত ২৭ এপ্রিল অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কয়েকদিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করা এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় নূর হোসেন প্রধান আসামি। নারায়ণগঞ্জের অপরাধ সাম্রাজ্যের অন্যতম এই নরপিচাস এখন পলাতক।

অতি জরুরি' উল্লেখ করা এই চিঠিটি শেখ হাসিনার প্রশাসনবিষয়ক কথিত উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের লেখা।



আওয়ামিলীগ সুর পাল্টিয়ে বলছে অন্য কথা

নূর হোসেন বিএনপির গুপ্তচর ছিল: শেখ সেলিম



বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম বলেছেন, “তিনি (খালেদা জিয়া) নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় মায়াকান্না দেখাতে গিয়েছিলেন। কারণ নুর হোসেন আওয়ামী লীগের কর্মী নয়, সে বিএনপির লোক। সে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে বিএনপির গুপ্তচরের ভূমিকা পালন করেছে।”

শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিষয়: বিবিধ

১৭২৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

222911
১৮ মে ২০১৪ সকাল ১১:১৬
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : সবই নোংরা রাজনীতির খেল। মাঝেমাঝে ঘৃণা হয় এই দেশের নাগরিক হিসেবে।
২৭ মে ২০১৪ রাত ০৩:৩১
173720
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : প্রমান সহ ধরা পরে এরা চুপ থাকে না , উল্টো অন্যের উপর দায় দেয়
222976
১৮ মে ২০১৪ দুপুর ০২:০১
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : এর নাম আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের পেশাজীবি মানুষগুলোও এরকম। আপনাকে ধন্যবাদ।
২৭ মে ২০১৪ রাত ০৩:৩২
173721
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : আওয়ামীলীগের পেশাজীবি মানুষগুলোও এরকম ? হবে না ?
223239
১৯ মে ২০১৪ রাত ০১:৪২
মাটিরলাঠি লিখেছেন : এরা এরকমই। মানুষ না, আওয়ামীলীগ।
২৭ মে ২০১৪ রাত ০৩:৩২
173722
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : :Thinking ঘৃণা হয়

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File