সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর বৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৭:১৫:৫১ সন্ধ্যা
কর্মক্ষেত্রে মেধাবীদের প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে দেশ ও জাতির সেবা করার সুযোগ দিন। শিক্ষিত প্রজন্ম কে রক্ষা করুন।
হতাশার হাতছানি থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করুন। রাজনৈতিক অস্থিরতা , হানাহানি , এই কারণে বছরের বহুদিন শিক্ষাঙ্গন বন্ধ থাকে। কিন্তু বয়স তো আর থেমে থাকে না।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মানববন্ধন শুরু হয়। - See more at: http://www.sheershanews.com/2014/02/08/25198#sthash.JPE8vRy6.dpuf
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের ব্যানারে জেলায় জেলায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাস্তবতার যুক্তিতে -
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা দাবি করে বলেছেন, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করায় সরকারি চাকরির সুযোগ ও ক্ষেত্র কমছে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হতেই শিক্ষার্থীদের হয়ে যাচ্ছে ২৮ থেকে ২৯ বছর। বাকি এক বছর চাকরির প্রস্তুতি নিতে নিতেই বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হলে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিতে পারবে।
তারা আজ রাজপথে , কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দাবীতে নয়। জীবন , জীবিকা এবং সুন্দর দেশ গড়ার লক্ষে। সরকারের উচিত এই দাবি মেনে নিয়ে মেধাবীদের পাশে দাড়ানো। রাষ্ট্র কে এই দিকে লক্ষ্য দিতে হবে।
মহান জাতীয় সংসদের প্রাক্তন মাননীয় স্পীকার এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি গত ১ ফেব্রুয়ারী ২০১২ তারিখে ৭১ নম্বর বিধিতে জনগুরুত্বপুর্ন নোটিশের উপর আলোচনার সময় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার প্রস্তাব করেন। সাধারন ছাত্রছাত্রীরা এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় । কেননা এই প্রস্তাব যুক্তিসংগত এবং বর্তমান সময়ের দাবী। তার প্রস্তাবের পক্ষে একমত পোষন করে মেধাবী ছাত্ররা 'বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র পরিষদ' চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে।
(১) গত ২৬ শে ডিসেম্বর ২০১১ ইং তারিখে সরকারী চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭-৫৯ করা হয়েছে। এতে বর্তমান যুব সমাজ একটা স্থবির পরিস্থিতির সন্মুখীন হবেন কেননা আগামী ৩ বছর যে সকল পদ খালি হওয়ার কথা তা হবেনা। ফলে বর্তমান চাকরি প্রার্থীরা তিন বছর চাকরি বিজ্ঞপ্তি থেকে বঞ্ছিত হবেন এবং এই তিন বছরের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ বেকার ছাত্রের চাকরিত প্রবেশের বয়স শেষ হয়ে যাবে। এদের দায়ভার কে নেবে? চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা না বাড়ানো এ কেমন যুক্তির বহিঃপ্রকাশ?
(২) সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে একদিকে বাড়ছে গড় আয়ূ এবং অন্যদিকে বাড়ছে সেশনজট। সেশনজটের কবলে পড়ে প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর তিন থেকে চার বছর নষ্ট হয়ে যায়। তার উপর অনার্স করার পর সরকারী মহল থেকে বলা হয়েছিল অনার্স এর পর থেকেই চাকরিতে আবেদন করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে সরকারী দুই একটি চাকরির আবেদন ছাড়া অন্য সকল সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে মাস্টার্স চাওয়া হয়। সরকার নতুন করে অনার্স চার বছর করে সেশনজটের পরিধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
(৩) নিয়ম অনুযায়ী ২৩ বছরে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার কথা। অথচ ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়াবলী, সেশনজট, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কারনে ছাত্রত্ব শেষ হতে ২৮ বছর লেগে যায়। এরপর মাত্র ২ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ৩০ বছরে চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ। এটা কিভাবে মেনে নেওয়া যায় ।
(৪)তাছাড়া পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা৩৫-৪০ বছর। যেমন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর। তাই আমাদের দেশেও আনুপাতিক হারে তা অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।
(৫) তত্বাবধায়ক সরকারের দুবছর চাকরির ক্ষেত্রে একটা স্থবিরতা ছিল। ২৭ তম বিসিএস থেকে ২৮ তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তির মধ্যে ব্যবধান ছিল ৩ বছর। তার উপর চাকরির অবসরের বয়সসীমা ২ বছর বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে চাকরিতে প্রবেশের জন্য সাধারন ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ একেবারে সংকুচিত। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি ছাড়া অগনিত বেকারের দুর্দশা লাগবের আর কোন রাস্তা নেই।
বিষয়: বিবিধ
৫৭৫১ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পোস্ট ভালো লেগেছে ।
শেষ বয়সে বুড়া হাবড়া গুলি আকাইম্যা হয়ে বসে থাকে গদিতে, ফলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন