এরাই হচ্ছে আমাদের বিবেকের ঘন্টাধ্বনি

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:০২:২৮ রাত



ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে চান সুমন।

তাই নিজের একটি কিডনি বিক্রি করতে চান তিনি। চান সেই টাকায় অনুজ শাওনকে সুস্থ করে তুলতে। ভাইয়ের চিকিৎসার প্রয়োজনে শরীরের এক পিণ্ড মাংস বিক্রির জন্য শাহবাগ, বিএসএমএমইউ হাসপাতাল, প্রেস ক্লাব এলাকায় দেয়াল পোস্টার টাঙিয়ে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন সুমন। কম্পোজ করা কাগজে লেখা- ‘নিয়তির এক বিরূপ পরিণতিতে হাসপাতালের দায় পরিশোধ ও ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য একটি কিডনি বিক্রয় করতে চাই। আমি একজন সুস্থ নিরোগ মানুষ। রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন ০১৫৫২- ৬৪৭০৮৭।’

কৃষক পিতা শামছুল আলম ও বড় ভাই সোনালী ব্যাংকের পুরানা পল্টন শাখার জুনিয়র অফিসার মো. কাওছার আলম সুমনের পক্ষে ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার খরচ বহন করা আর সম্ভব হচ্ছিল না। বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় গুরুতর অসুস্থ শাওনকে পরিবারের সদস্যদের না জানিয়েই ২৭শে নভেম্বর আইসিইউ থেকে এইচডিইউ-এর ১ নম্বর সাধারণ বেডে স্থানান্তর করে এই বিভাগের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। শুধু তাই নয়, শাওনের কিছু হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না মর্মে তার পিতার কাছ থেকে জোর করে লিখিত স্বীকারোক্তিও আদায় করা হয়।

..............................

মানবজমিনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের স্নেহ ও ভালবাসার এমন বিষাদময় এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। রংপুর সদর জেলার রাজুখাঁ গ্রামের নিম্নবিত্ত কৃষক মো. শামছুল হুদা ও গৃহিণী শারাবান তহুরা বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ শাওন। সে নীলফামারী সরকারি কলেজের ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী। চলতি বছরের ৯ই জুলাই বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার ‘ব্রেইন স্ট্রোক’ শনাক্ত করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। ১২ই জুলাই শাওনকে রাজধানীর মেট্রোপলিটন মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে রাখা হয় হাসপাতালের আইসিইউতে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন শাওনের মস্তিষ্কের আর্টারি গ্লান্ড-এর অনেকাংশে ব্লক আছে যা দুরারোগ্য ব্যাধি বলে চিহ্নিত। চিকিৎসকদের পরামর্শে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ২২শে জুলাই শাওনকে নিয়ে আসা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। হাসপাতালের সি ব্লকের দশম তলার এনেসথেসিয়া বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ৭ নম্বর বেডে ভর্তি করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কে এম কামরুল হুদার অধীনে তার চিকিৎসা শুরু হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতিও ঘটে। কিন্তু ওষুধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আইসিইউ-এর বেড ভাড়া ও অন্যান্য সহ প্রতিদিন খরচ করতে হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। কায় ক্লেশে দিন কাটানো কৃষক পিতা শামছুল আলম ও বড় ভাই সোনালী ব্যাংকের পুরানা পল্টন শাখার জুনিয়র অফিসার মো. কাওছার আলম সুমনের পক্ষে ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার খরচ বহন করা আর সম্ভব হচ্ছিল না।

[b]বিলাসী জীবনের শহরে এরা আর কত হাহাকার করবে ?

বিস্তারিত এই লিঙ্কে - [

http://mzamin.com/details.php?mzamin=Mzg0MQ==&s=Ng==

বিষয়: বিবিধ

১২৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File