এরশাদের ডিগবাজি : স্বঘোষিত বেঈমানি কবুল ।নাটকের পুরস্কার গৃহপালিত বিরোধী দল ।
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১৯ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:০৬:১৩ দুপুর
ছবি কথা বলে ..
গত কয়েকদিন ধরেই সরকারের বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন এরশাদ। ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেহেস্তেও যাব না, তাদের অধীনে নির্বাচনে যাব না, সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেব না এটাই ফাইনাল’- এসব বক্তব্য দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করেছেন তিনি। কিন্তু সর্বশেষ আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করা ও সর্বদলীয় সরকারে যোগ
এরশাদ সকালে বলেন এক কথা, আবার বিকালে সেটা পাল্টে বলেন আরেক কথা।
১৯শে আগস্ট ২০১৩: শেষ বয়সে কলাবরেটর হতে চাই না। বিএনপি নির্বাচনে না গেলে জাতীয় পার্টিও যাবে না।
২৫শে আগস্ট ২০১৩ : এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবো না।
২১শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ : রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠানে যান এরশাদ। সেখানে বলেন, সব দল যদি নির্বাচনে যায়, আমিও নির্বাচনে যাবো।
২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ : ক্ষমতায় থাকার জন্যই সংবিধান সংশোধন। কারসাজি করে ক্ষমতায় থাকতেই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে।
২৭শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ : আওয়ামী লীগ ৬০ আসন পাবে: নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন না হলে নির্বাচনে যাবো না।
২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ : ঝিনাইদহ সফরে যান এরশাদ। বলেন, দেশে আদৌ নির্বাচন হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
৩রা অক্টোবর ২০১৩ : দলভিত্তিক নির্বাচনের প্রস্তাব দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
৭ই অক্টোবর ২০১৩: রংপুর সফরে যান এইচ এম এরশাদ। বলেন, দু’নেত্রীর রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি চায় জনগণ।
১৫ই অক্টোবর ২০১৩ : জনগণের চিন্তা করেই মহাজোট ছাড়িনি।
২১শে অক্টোবর ২০১৩ : গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন এরশাদ। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকবে। আর বিএনপি নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে।
২২শে অক্টোবর: সৈয়দ আশরাফের বক্তব্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেন এরশাদ।
১ নভেম্বর ২০১৩, -ভারতে যাওয়ার কথা ছিল এরশাদের। কিন্তু পত্র-পত্রিকায় তার ভারত সফর নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সিঙ্গাপুর । দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে চার দিনের সফরে সিঙ্গাপুর গিয়েছেন এরশাদ।
১১ই নভেম্বর ২০১৩: সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যাবে না। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে গেলে মানুষ আমাকে থুতু দেবে? এর চেয়ে জেলেই মরে যাওয়া ভাল।
১৩ই নভেম্বর২০১৩ : বর্তমান পরিস্থিতিতে একতরফা নির্বাচন ও সর্বদলীয় সরকারে অংশ নেবে না জাতীয় পার্টি। এটিই আমার শেষ কথা। আমি তো অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছি, সব দল অংশগ্রহণ না করলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সে নির্বাচনে জাতীয় পার্টিও অংশগ্রহণ করবে না।
১৬ই নভেম্বর ২০১৩: মহাজোটে থেকে নির্বাচন করলে লোকে আমাকে বেঈমান বলবে। আবার যদি নির্বাচন না করি তবে পরবর্তী সরকার কিভাবে আসবে?
১৭ই নভেম্বর ২০১৩: হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রামে হাটহাজারী মাদরাসায় ছুটে যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আল্লামা শফীর সঙ্গে দেখা শেষে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে, সর্বদলীয় সরকারেও যোগ দেবে। সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবো।
১৮নভেম্বর ২০১৩: মহাজোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এজন্য সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। রবিবার এরশাদের প্রেস ও রাজনৈতিক সচিব সুনীল শুভরায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সংবাদ সম্মেলনের কথা জানান।
১৯ নভেম্বর ২০১৩ মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, ‘আমি এ মুহূর্ত থেকে মহাজোট থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় পার্টির বনানীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।একই সঙ্গে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
নামে সর্বদলীয় সরকার, নৌকা আর লাঙ্গল
‘এটি সর্বদলীয় মন্ত্রিপরিষদ হয়নি। সব দলের অংশ এখানে নেই।আগেও পুরাতন মন্ত্রিসভায় এই দুই মার্কার বাইরে কেউ ছিলেন না। রাশেদ মেননের ওয়ার্কাস পার্টির প্রতীক হলো কাস্তে। কিন্ত তিনি তার দলীয় প্রতীক না নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকে ঢাকা থেকে সংসদ সদস্য হন। জাসদের হাসানুল হক ইনুও একই কাজ করেন। তার দলের প্রতীক মশাল না নিয়ে নৌকায় চড়ে সংসদ সদস্য হন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন