যাহা বলিব তাহা ভুলে যাবো ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১২ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:৫৯:২৩ সন্ধ্যা
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে অতীতে শেখ হাসিনার বক্তব্য গুলো মনে আছে তো ? এক মুখে কত ধরনের বক্তব্য ?
তারিখ এবং স্থানের নাম সহ তত্কালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন বক্তব্য দেখুন।
০৫ আগস্ট ১৯৯৫ শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২ সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন - ‘যদি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও সদিচ্ছা থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী ( বেগম খালেদা জিয়া) নির্বাচনের ৯০ দিন আগে পদত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর যদি ‘ইল ইনটেনশন’ (বদ মতলব, খারাপ চিন্তা ) কিছু না থাকে তবে তিনি আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেবেন।
৩০ আগস্ট ১৯৯৫ এক শোক সভায় শেখ হাসিনা বলেন- ‘অতীতে কোন স্বৈরশাসকই জনগণের অধিকার হরণ করে নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। সরকার পুলিশ দিয়ে মানুষ খুন করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যদি অসংবিধানিক হয় তাহলে সাহাবুদ্দীনের সরকারের কি তা বুঝেন?
৩১ আগস্ট ১৯৯৫ এক সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিন আগে পদত্যাগ করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবি- এটা কোন অন্যায় দাবি নয়।
১২ সেপ্টেম্বর ’৯৫ দলের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় দেয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ( বেগম খালেদা জিয়া ) তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসে আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বুঝেন না। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারও সেদিন তত্ত্বাবধায়ক না বোঝার চেষ্টা করেছিলেন।’
১৩ অক্টোবর ১৯৯৫ শ্রমিক সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন - ‘সরকার দাবি না মানলে সরকারি দলকে বাদ দিয়ে বিরোধীদলীয়দের নিয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে। সরকারকে আমরা অনেক সুযোগ দিয়েছিলাম। দাবি না মানলে ঐ সুযোগটুকুও দেয়া হবে না।’
১৭ অক্টোবর ১৯৯৫ রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন- ‘এই সরকারের নিয়োজিত কোন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কোন নির্বাচন নয়’ ।
১৯ অক্টোবর ১৯৯৫ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন- ‘আমরা ক্ষমতায় থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সাথে সাথে মেনে নিতাম।’
২৯ অক্টোবর ১৯৯৫ এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘আপনি একগুঁয়েমী ও গদির লোভ ছেড়ে তত্ত্বাবধায়কের দাবি মেনে নিন।’
০৪ নভেম্বর ১৯৯৫ জেল হত্যা দিবসের আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন - ‘জনগণের সম্পদ লুটপাট করে খাওয়ার জন্যই বিএনপি সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।’
১৪ নভেম্বর ১৯৯৫ দলীয় সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন- ‘বিএনপি ছাড়া সকল বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। কারণ জনগণ নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান।’
১৪ নভেম্বর ১৯৯৫ যুবলীগের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন- ‘তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন হবে না। কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবে না।’
৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৫ নগর আ’লীগের সভায় শেখ হাসিনা বলেন- ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিরোধী দল বিহীন নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে হরতাল ও অবরোধ ১৯৯০ এর
পূর্ববর্তী রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। তাহলে এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় কেন ? বর্তমান সরকার মনে হয় অতীত ভুলে গেছে।
বিষয়: বিবিধ
২২৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন