ছাগল এবং জ্ঞানপাপী
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৫ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:২৬:০০ বিকাল
‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনাকারীরা জ্ঞানপাপী’।
সুন্দরবন নিয়ে ছাগলের ছেচামেচিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার কথা বললেন।
---উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হলো।
, ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
আগে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২২ অক্টোবর এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। কিন্তু সেই সময়ের ১৭ দিন আগেই এটির উদ্বোধন হয়ে গেল। তবে কেন সময় এতটা এগিয়ে আনা হলো, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
সুন্দরবনের কাছে মারাত্মক পরিবেশ দূষণকারী এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের বিরোধিতা শুধু দেশের ভেতরেই নয়, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও এসেছে। সুন্দরবনের মতো একটি অত্যন্ত স্পর্শ্বকাতর বিশ্ব ঐতিহ্যের পাশে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরাও বিবৃতি দিয়েছেন।
নির্মম ইতিহাসের কাজটি করে শেখ হাসিনা বললেন -
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনাকারীরা জ্ঞানপাপী।
শুধু তাই নয় - সুন্দর বন নিয়ে ছাগলের ছেচামেচিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার কথা বললেন।
বিরোধী দল বিএনপি এবং সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টিও এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ঘোষণা করেছে।টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সহ সবাই কি তাহলে ছাগল ?
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনাকারীরা জ্ঞানপাপী ?
পরিবেশ মন্ত্রনালয় যে প্রতিবেদন দাখিল করেছিল - তারা কি সব ছাগল ?
২টি বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভয়াবহতা উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল তারা কি ছাগল ও জ্ঞানপাপী ?
উৎপাদন শুরু হলে রামপালে প্রতিদিন প্রয়োজন হবে ১০ হাজার টন কয়লা। বিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের সাথে প্রতিদিন দেবে ১৪২ টন বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড ও ৮৫ টন বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড। বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে সাড়ে ৭ /৮ লাখ টন ফ্লাই-অ্যাশ পাওয়া যাবে। শুধু বাতাস নয়, মাটি-পানিও পাবে ২ লাখ টন বটম-অ্যাশ। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফ্লাই-অ্যাশ, বটম-অ্যাশ ও অন্যান্য ক্ষতিকর বর্জ্যের মাধ্যমে বিষাক্ত সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডসহ আর্সেনিক, সিসা, নিকেল, পারদ ,ক্রোমিয়াম, ভেনাডিয়াম, ইত্যাদি প্রতিনিয়ত মিশবে মাটি-পানি-বাতাসের সাথে। পশুর নদের মাছসহ অন্যান্য প্রাণী, সুন্দরবনের সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলে পড়বে মারাত্মক প্রভাব। একে একে ধ্বংস হবে সব, মিশে যাবে সুন্দরবন ।
সুপার থারমাল পাওয়ার প্রকল্প ভারত বাতিল করে দিল তাদের দেশে , ভারতের আদালত রায় দিল সুপার থারমাল পাওয়ার প্রকল্প পরিবেশের হুমকি। কিন্তু সেই বাতিল প্রকল্প আমাদের দেশে ?
সুপার থারমাল পাওয়ার প্রকল্প ভারত বাতিল করে দিল কিন্তু সেই বাতিল প্রকল্প আমাদের দেশে ? টাইমস এর প্রতিবেদন-
সিডরের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে সুন্দরবন না থাকলে বাংলাদেশ হবে একটি তান্ডব লীলার মৃত্যু নগরী । আমাদের সুন্দর বনের উপর নগ্ন হামলার বিরুদ্ধে আমরাই লড়বো। যে দেশের সরকার নিজের ক্ষতি করে, তারা কোনো দেশ প্রেমিক হতে পারে না।
বিষয়: বিবিধ
২২৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন