আমাদের তরুনেরা অতীত ভুলে যায় ?

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৫২:৪৮ রাত



আমাদের তরুনেরা ভুলে যায় অতীত ?

রাজনীতির বাহিরের বিষয় , জাতীয় বিষয় - হলমার্ক ,রাষ্ট্রীয় সববিভাগে লাগামহীন দুর্নীতি , সাগর রুনি হত্যা,লিমনের উপর নির্যাতন , মা মেয়েকে থানায় রেখে ৯ দিন দৈহিক নির্যাতন , আদালত পাড়ায় নারীকে সম্ভ্রম হানি , পদ্মা সেতু , খনিজ সম্পদ রক্ষা , পুজিবাজের লুটপাট , রাজপথে শিক্ষকদের উপর নির্যাতন ,শিক্ষককে পুলিশী নির্যাতনে হত্যা , নকলের বিরোদ্ধে প্রতিবাদ , ইডেনের ছাত্রীদের বাধ্য করা হয় নেতাদের বাসায় পালাক্রমে যেতে , বার বার শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষকরা নিজ নিজ ছাত্রীদের ধর্ষণ করে যাচ্ছেন , --ভার্সিটিতে শিক্ষকদের উপর অ্যাসিড নিক্ষেপ , কোন বড় ইস্যূ ফেন্সী ব্যবসায়ী রাজনীতি /ছাত্রনেতাদের লাখ লাখ টাকার তরুণদের নিয়ে ক্ষমতার রাজনীতি বনাম আঁতাতের রাজনীতি করে তার ফসল নিয়ে বাসায় --

আমরা -

১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ও পরে বাঙ্গালী- অবাঙ্গালী সকল হত্যা, ধর্ষনের প্রতিটি ঘটনার বিচার চাই।সকল যুদ্ধাপরাধীদের ,মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চাই।

রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যত হত্যা ও গুম হয়েছে, যত জুডিশিয়াল মার্ডার হয়েছে, তার বিচার চাই।

বিশেষ ট্রাইবুনালে প্রতিটি ঘটনার বিচার হবে। লাগলে শত বছর ব্যাপী চলবে বিচার। তবে রাজনৈতিক স্বার্থ চারিতার্থের জন্য নয়, সত্যিকারের বিচার হতে হবে।

প্রয়োজনবোধে শাহবাগের চেয়ে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবো আমরা।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন নিয়ে শেখ হাসিনার রাজনীতি - ১৯৯২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মুল জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করেন এবং আন্দোলন শুরু করেন। এই সংগঠনের আন্দোলনে জনগন ব্যাপক সাড়া দেয়।

নতুন প্রজন্ম শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্ব ও কর্মসূচিতে দারুন উৎসাহ ও আস্থা নিয়ে অংশ নিতে থাকলে বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা অস্থির ও উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তিনি কেবলই বলতে থাকেন, “জাহানারা নতুন দোকান খুলেছে। নতুন ব্যবসা ধরেছে। নেত্রী হতে চায়। ব্যবসার জায়গা পায় না, মুক্তিযুদ্ধের নাম নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে?”

“তোমরা এর থেকে সাবধান থাকবা, এবং আমাদের সকল কর্মীদের সাবধানে রাখবা। কেউ যেনো জাহানারা ইমামের খপ্পরে না পড়ে।” রেন্টু প্রশ্ন করেন, নেত্রী আপনি কি ঘাদানিকের কর্মসূচিতে যাবেন না? তিনি বলেন, “সে আমি যাই বা না যাই, তোমরা কেউ যাবা না। আর আওয়ামীলীগের কোনো কর্মীকে যেতে দেবে না। বুঝ না, আমার ইচ্ছা না থাকলেও তো কত যায়গায় যেতে হয়। জাহানারার প্রোগ্রামে হয়ত কৌশলগত কারণে আমি যাব, কিন্তু তোমরা যাবা না।” (আমার ফাঁসি চাই, পাতা ১১৩-১৪)

জাতির তরুনদের নিয়ে সময় সময় কি কি প্রহসন করা হয় নি? ,বাংলার শেষ নবাব সিরাজের পতনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ২১৪ বছর বৃটিশ-ভারতের গোলাম আর তারন্যের, স্বাধীনতাকামী ও মূক্তিকামী জাতির আবেগ নিয়ে রাজনীতি করে তার ফসল করা উপভোগ করেছে , এমনকি হাজার হাজার তারন্যকে হত্যা করা হয় - সেই বিষয় জানতে হলে দেখতে পারি - মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিলের অরক্ষিত স্বাধীনতা , বামচিন্তাবিদ আহমেদ মুসার ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা রিন্টুর লিখিত “আমার ফাঁসি চাই --

আওয়ামী লীগ ও বামদের মধ্যে এককভাবে সমাবেশের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার নানা কামড়াকামড়ির ঘটনাও একের পর এক প্রকাশিত হচ্ছে।

ব্যবহারের অশুভ উদ্দেশে পরিচয়ের ছদ্মাবরণের চক্রান্ত নয় কি ?

শাহবাগ স্কয়ারে তরুণদের আন্দোলন অশুভ উদ্দেশে নয় কি ?

তরুণদের উচ্ছ্বাসকে একদলীয় অখণ্ড কর্তৃত্বাধীন করারউদ্দেশে নয় কি ?

জাতির কপাল অনেক আগেই পুড়ে গেছে ? ট্রাইবুনাল কৌশলগত কারণে ২/৪ জনকে ফাসি দিয়ে ব্যবসার তারন্যকে ও ঝুলিয়ে দিবে ?

১৯৭২ সালের ২ জুলাই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেই চুক্তির ফলে খুনিরা পার পেয়ে যায়। তাহলে যারা চুক্তি করেছিলেন , তারা কি খুনিদের পক্ষে কাজ করেন নাই ?

তাহলে খুনির বিচার হবে না ? খুনিদের রক্ষা কারীর বিচার হবে না ?

যাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ১৯৭৪ সালে, তাদের বিচার কিভাবে করবেন?



১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্র“য়ারী পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে- ২৩-২৪ ফেব্র“য়ারী শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২৭ ফেব্রয়ারী পত্রিকায় ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ারের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়, যেখানে শেখ মুজিব স্পষ্ট বলেছিলেন , “ জুলফিকার আলী ভুট্টোর আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। আমার প্রতি পাকিস্তানী জনগনের ভালবাসা ও আন্তরিকতা দেখে আমি আপ্লুত। পাকিস্তানী জনগন আমাকে স্বাগত জানাতে এয়ারপোর্ট থেকে সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। আর আমার চিরচেনা কুর্তা পায়জামা পরা অবয়ব দেখে ছেলে-মেয়েরা আনন্দে আমার নাম ধরে ‘মুজিব, মুজিব’ বলে চিৎকার করছিল”।

এই পর্যায়ে কুলদিপ নায়ার শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে চান, উনি যে এর আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তার কি হবে? জবাবে মুজিব বলেন, “আমি সেসব ভুলে যেতে চাই। আমাদেরকে নতুন করে সব শুরু করতে হবে।” একটু থেমে তিনি আবার বলেন, “আপনি তো জানেনই মানুষের স্মৃতি বেশিদিন স্থায়ী হয় না।” ভুট্টো প্রসঙ্গে আবারো তিনি বলেন, “আমি তাকে সহযোগিতা করতে চাই, সে একজন পুরাতন বন্ধু।”

১৯৭৪ সালের ৯ই এপ্রিল ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিদেশীয় চুক্তি এর মাধ্যমে সর্বশেষ ১৯৫ পাকিস্থানী যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে পাকিস্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হল। যে ওই সব খুনিদের পাঠানোর কাজটি করেছেন তার বিচার কে করবে ?

খুনি আর খুনির রক্ষক কি অপরাধী নয় ?

জাতির বিবেকের কাছে হাজার হাজার প্রশ্ন। এখন যে সব বিচারের দাবি।

বিষয়: বিবিধ

১৯৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File